ঢাকা ০৩:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনকে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে টঙ্গীতে মানববন্ধন

অলিদুর রহমান অলি
  • Update Time : ০৭:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • / ১১৩ Time View

সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মানববন্ধনে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার দুই শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে গাজীপুর প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশন টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার আয়োজনে উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে মূল মানববন্ধন হলেও এটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে টঙ্গী বাজার থেকে বড়বাড়ি তারগাছ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। শত শত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কয়েক হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় সুযোগ দানের দাবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন সহকারে মানববন্ধনে অংশ নেন।

টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে গাজীপুর প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশন টঙ্গী পূর্ব থানার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বসির উদ্দিন, টঙ্গী প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব মেরাজ উদ্দিন, সংগঠনের পশ্চিম থানা সভাপতি মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম জনি, পূর্ব থানার সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন হাওলাদার ও অর্থ সম্পাদক সোহেল ভূঁইয়া প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে চলছে। দেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু হঠাৎ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৭ জুলাই কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে শুধুমাত্র সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তির ঘোষণা দিয়ে একটি পরিপত্র প্রকাশ করে। যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চরম বৈষম্যমূলক আচরণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বক্তারা আরো বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক কৃতিত্ব অর্জন করেছে।

বক্তারা বলেন, বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক অনুদানই নয় এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, মেধার স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে, কিন্তু শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ে না পড়ার কারণে সে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না -তখন তার মনে নীতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং কোমলমতি শিশুদের মধ্যেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব তৈরি হবে। কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে তাহলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে। তার দায়-দায়িত্ব সরকারের উপরই বর্তাবে। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী সরকার। সেই সরকারের আমলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার বৈষম্যের শিকার হবে এটি কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।

বক্তারা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আমাদের অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের আশা ও ভরসার প্রতীক। দেশের জনগণ আপনার প্রতি আস্থাশীল। সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ বিশাল জনগোষ্ঠীকে যাতে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে না হয় সেই বিষয়ে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি এবং ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক অবহিতকরণপত্রটি বাতিল করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন পঞ্চম শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ -এ অংশগ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেনকে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে টঙ্গীতে মানববন্ধন

অলিদুর রহমান অলি
Update Time : ০৭:৫৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মানববন্ধনে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার দুই শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে গাজীপুর প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশন টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার আয়োজনে উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে মূল মানববন্ধন হলেও এটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে টঙ্গী বাজার থেকে বড়বাড়ি তারগাছ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। শত শত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কয়েক হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় সুযোগ দানের দাবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন সহকারে মানববন্ধনে অংশ নেন।

টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে গাজীপুর প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশন টঙ্গী পূর্ব থানার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বসির উদ্দিন, টঙ্গী প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব মেরাজ উদ্দিন, সংগঠনের পশ্চিম থানা সভাপতি মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম জনি, পূর্ব থানার সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন হাওলাদার ও অর্থ সম্পাদক সোহেল ভূঁইয়া প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে চলছে। দেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু হঠাৎ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৭ জুলাই কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে শুধুমাত্র সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তির ঘোষণা দিয়ে একটি পরিপত্র প্রকাশ করে। যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চরম বৈষম্যমূলক আচরণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বক্তারা আরো বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক কৃতিত্ব অর্জন করেছে।

বক্তারা বলেন, বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক অনুদানই নয় এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, মেধার স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে, কিন্তু শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ে না পড়ার কারণে সে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না -তখন তার মনে নীতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং কোমলমতি শিশুদের মধ্যেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব তৈরি হবে। কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে তাহলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে। তার দায়-দায়িত্ব সরকারের উপরই বর্তাবে। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী সরকার। সেই সরকারের আমলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার বৈষম্যের শিকার হবে এটি কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।

বক্তারা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আমাদের অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের আশা ও ভরসার প্রতীক। দেশের জনগণ আপনার প্রতি আস্থাশীল। সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ বিশাল জনগোষ্ঠীকে যাতে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে না হয় সেই বিষয়ে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি এবং ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক অবহিতকরণপত্রটি বাতিল করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন পঞ্চম শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ -এ অংশগ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।