ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রাইভেট টিচারের ধারাবাহিক বলৎকারের প্রতিশোধে খুন

সিলেট প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:৪২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
  • / ৭৭ Time View

সিলেটের জৈন্তাপুরের মুক্তারুল হক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই সিলেট জেলা।

১৩ মে ২০২৪ খ্রি. পিবিআই টিম ঢাকা মহানগরের মালিবাগ চৌধুরীপাড়াস্থ একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে মুক্তারুল হক হত্যাকান্ডে জড়িত প্রকৃত আসামী একই গ্রামের বজলুর রশিদ শামীমের ছেলে ইফতেখার রশিদ মাহি (২২) কে গ্রেফতার করে।

জানা যায়, ৪ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি. সকাল ০৭.০০ ঘটিকায় সিলেটের জৈন্তাপুরের তেলীজুরী সাকিনের রহমত আলীর ছেলে প্রাইভেট টিচার মুক্তারুল হক (৩৬) এর মৃতদেহ তার বাড়ির নিকটবর্তী রাস্তার পাশের জমিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানায় ০৬ জন আসামীর নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আসামীরা হত্যাকান্ড সংঘটন করে মর্মে হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ কিছুদিন তদন্ত করার পর তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই সিলেট জেলা।

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজিপি এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশণায়, পিবিআই সিলেট জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান এর নেতৃত্ত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ঝলক মোহন্ত তার তদন্তে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সামর্থ হন।

জিজ্ঞাসাবাদে সে মুক্তারুল হককে কাঠের বর্গা দিয়া মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে মর্মে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় মুক্তারুল তাকে দ্বিতীয় শ্রেনী থেকে প্রাইভেট পড়াতো। সে যখন পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ত তখন থেকে মুক্তারুল তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলৎকার শুরু করে। পাশাপাশি অশ্লীল দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। বিভিন্নসময় বাধা দিলে মাহিকে মুক্তারুল ব্লেড দিয়ে দুই উরুতে অসংখ্য জখম করে। অশ্লীল দৃশ্য অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এবং স্কুলের পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে মাহিকে মুক্তারুল দীর্ঘ বছর যাবৎ বলৎকার করতে থাকে। শেষ পর্যায়ে যুবক বয়সে এসে মাহি শক্ত প্রতিরোধের চেষ্টা করলে মুক্তারুল মাহির নবম শ্রেণী পড়ুয়া ছোট বোনকে নষ্ট করবে মর্মে মাহিকে হুমকি দিলে মাহি তা সহ্য করতে না পেরে মুক্তারুলকে খুন করার পরিকল্পনা করে এবং ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি. বরাবরের মত মুক্তারুল মাহিকে তাদের বাড়ির পিছনে বলৎকারের উদ্দেশ্যে ডাকলে মাহি সন্ধার পর সেখানে যায় এবং সেখানে থাকা কাঠের বর্গা দিয়া মুক্তারুলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহ তার বাড়ির রাস্তার পাশে জমিতে নিয়ে ফেলে দেয়। তারপর মাহি বাড়িতে এসে পুকুরে গোসল করে নফল নামায পড়ে ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপের আর্জেনটিনার লাইভ খেলা দেখে। পরদিন সে রামপ্রসাদ গ্রামে তার নানাবাড়ি চলে যায়। তারপর খালারবাড়ি কিছুদিন থেকে সেখান থেকে ঢাকা গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ নেয়। সে আর এলাকায় আসে নাই।

পিবিআই সিলেট জেলা কর্তৃক গ্রেফতারের পর ১৪ মে ২০২৪ খ্রি. আসামী ইফতেখার রশীদ মাহিকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে সে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব আলমগীর হোসেন এর আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মতে দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

Please Share This Post in Your Social Media

প্রাইভেট টিচারের ধারাবাহিক বলৎকারের প্রতিশোধে খুন

সিলেট প্রতিনিধি
Update Time : ০৫:৪২:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

সিলেটের জৈন্তাপুরের মুক্তারুল হক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করল পিবিআই সিলেট জেলা।

১৩ মে ২০২৪ খ্রি. পিবিআই টিম ঢাকা মহানগরের মালিবাগ চৌধুরীপাড়াস্থ একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে মুক্তারুল হক হত্যাকান্ডে জড়িত প্রকৃত আসামী একই গ্রামের বজলুর রশিদ শামীমের ছেলে ইফতেখার রশিদ মাহি (২২) কে গ্রেফতার করে।

জানা যায়, ৪ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি. সকাল ০৭.০০ ঘটিকায় সিলেটের জৈন্তাপুরের তেলীজুরী সাকিনের রহমত আলীর ছেলে প্রাইভেট টিচার মুক্তারুল হক (৩৬) এর মৃতদেহ তার বাড়ির নিকটবর্তী রাস্তার পাশের জমিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানায় ০৬ জন আসামীর নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আসামীরা হত্যাকান্ড সংঘটন করে মর্মে হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ কিছুদিন তদন্ত করার পর তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই সিলেট জেলা।

পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম, অ্যাডিশনাল আইজিপি এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশণায়, পিবিআই সিলেট জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান এর নেতৃত্ত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ঝলক মোহন্ত তার তদন্তে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সামর্থ হন।

জিজ্ঞাসাবাদে সে মুক্তারুল হককে কাঠের বর্গা দিয়া মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে মর্মে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় মুক্তারুল তাকে দ্বিতীয় শ্রেনী থেকে প্রাইভেট পড়াতো। সে যখন পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ত তখন থেকে মুক্তারুল তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলৎকার শুরু করে। পাশাপাশি অশ্লীল দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। বিভিন্নসময় বাধা দিলে মাহিকে মুক্তারুল ব্লেড দিয়ে দুই উরুতে অসংখ্য জখম করে। অশ্লীল দৃশ্য অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এবং স্কুলের পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে মাহিকে মুক্তারুল দীর্ঘ বছর যাবৎ বলৎকার করতে থাকে। শেষ পর্যায়ে যুবক বয়সে এসে মাহি শক্ত প্রতিরোধের চেষ্টা করলে মুক্তারুল মাহির নবম শ্রেণী পড়ুয়া ছোট বোনকে নষ্ট করবে মর্মে মাহিকে হুমকি দিলে মাহি তা সহ্য করতে না পেরে মুক্তারুলকে খুন করার পরিকল্পনা করে এবং ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি. বরাবরের মত মুক্তারুল মাহিকে তাদের বাড়ির পিছনে বলৎকারের উদ্দেশ্যে ডাকলে মাহি সন্ধার পর সেখানে যায় এবং সেখানে থাকা কাঠের বর্গা দিয়া মুক্তারুলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে। এরপর মৃতদেহ তার বাড়ির রাস্তার পাশে জমিতে নিয়ে ফেলে দেয়। তারপর মাহি বাড়িতে এসে পুকুরে গোসল করে নফল নামায পড়ে ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপের আর্জেনটিনার লাইভ খেলা দেখে। পরদিন সে রামপ্রসাদ গ্রামে তার নানাবাড়ি চলে যায়। তারপর খালারবাড়ি কিছুদিন থেকে সেখান থেকে ঢাকা গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ নেয়। সে আর এলাকায় আসে নাই।

পিবিআই সিলেট জেলা কর্তৃক গ্রেফতারের পর ১৪ মে ২০২৪ খ্রি. আসামী ইফতেখার রশীদ মাহিকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে সে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব আলমগীর হোসেন এর আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মতে দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।