ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জমি বিক্রি করেও দখল করে নিয়েছে কথিত আইনজীবী

প্রতারণার খপ্পরে আল মুসলিম বিল্ডার্স

জাহিদ অমিত
  • Update Time : ০৬:১৯:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৬ Time View

কথিত আইনজীবীর প্রতারণার খপ্পরে পড়ে  বিনিয়োগ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে দেশের স্বনামধন্য আবাসন কোম্পানি আল মুসলিম বিল্ডার্স। রাজধানীর ওয়ারীতে ওই প্রতারকের কাছ থেকে জমি কিনে দখল বুঝিয়ে দেয়ার পরও সরকার পরিবর্তনের আবহে প্রতারকরা ওই জমিটি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানিটিকে প্রতারণার মাধ্যমে হয়রানি করার অভিযোগ করা হয়। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন কোম্পানির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনসারুজ্জামান, এ্যাডভোকেট সাজিরুল হাসান ও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার এম এ কাইয়ুম প্রমুখ।

লিখিত বক্তৃতা তুলে ধরে আইনজীবী আনসারুজ্জামান বলেন, ২০১১ সালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার ১নং নবাব স্ট্রিটে ৯২.০৫ শতাংশ জমি কেনার জন্য কোম্পানিটি আইনজীবী সৈয়দ আজাহারুল কবীরের সঙ্গে বায়না চুক্তি সম্পাদন করে। ওই সময় আজহারুল কবীর নিজেকে সম্পূর্ণ জমির মালিক দাবি করে তাদের কাছ থেকে প্রায় ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে কাগজপত্র তল্লাশি করে আরও দুইজন মালিকের নাম বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে আজহারুল কবীর নিজেদের ভিতর আপস মীমাংসা করে সম্পূর্ণ জমি কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে দ্বিতীয় দফায় চুক্তিবদ্ধ হয়। ওই সময় তিনি জাল কাগজপত্র সৃজন করে কোম্পানিকে জমিয়ে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় কোম্পানি মূল মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে ওই জমি কিনে নেয়। ওই জমিতে আজহারুল কবীরের মাত্র ৬.১৩ শতাংশ জমি রয়েছে। এ নিয়ে মামলা আদালতে গড়ালে বিচারকের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের ১২ মে সৈয়দ আজাহারুল কবীরের সঙ্গে পুণরায় একটি আপোষ চুক্তি সম্পন্ন হয়। যার ফলে তিনি জমির মালিকানার সমস্ত দাবি ত্যাগ করেন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, বর্তমানে তার ওই সম্পত্তির উপর কোনো অধিকার নেই। তিনি সেখান থেকে বাসা স্থানান্তর করার জন্য কোম্পানির কাছ থেকে তিন মাস সময় নেয়। ‌

সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ৭ আগস্ট  সৈয়দ আজাহারুল কবীর ও তার সহযোগীরা ওই জমিতে অনুপ্রবেশ করে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও আল-মুসলিম গ্রুপের কর্মচারীদের উপর গুলি বর্ষণ করে কোম্পানির সম্পত্তি দখল করে নেয় এবং কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় এক কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা গ্ৰহন করা হয়েছে। তাছাড়া গত ২০ আগস্ট প্রতারক আজহারুল কবীর ওই জমি নিজের দাবী করে প্রতারণামূলক তথ্য দিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে আল মুসলিম বিল্ডার্স ও আল মুসলিম গ্রুপের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করেছে সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের সঙ্গে এসব ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সুরক্ষা প্রদানে ওই প্রতারকের কবল থেকে জমিটি উদ্ধার করার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

জমি বিক্রি করেও দখল করে নিয়েছে কথিত আইনজীবী

প্রতারণার খপ্পরে আল মুসলিম বিল্ডার্স

জাহিদ অমিত
Update Time : ০৬:১৯:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

কথিত আইনজীবীর প্রতারণার খপ্পরে পড়ে  বিনিয়োগ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে দেশের স্বনামধন্য আবাসন কোম্পানি আল মুসলিম বিল্ডার্স। রাজধানীর ওয়ারীতে ওই প্রতারকের কাছ থেকে জমি কিনে দখল বুঝিয়ে দেয়ার পরও সরকার পরিবর্তনের আবহে প্রতারকরা ওই জমিটি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানিটিকে প্রতারণার মাধ্যমে হয়রানি করার অভিযোগ করা হয়। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন কোম্পানির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনসারুজ্জামান, এ্যাডভোকেট সাজিরুল হাসান ও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার এম এ কাইয়ুম প্রমুখ।

লিখিত বক্তৃতা তুলে ধরে আইনজীবী আনসারুজ্জামান বলেন, ২০১১ সালে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার ১নং নবাব স্ট্রিটে ৯২.০৫ শতাংশ জমি কেনার জন্য কোম্পানিটি আইনজীবী সৈয়দ আজাহারুল কবীরের সঙ্গে বায়না চুক্তি সম্পাদন করে। ওই সময় আজহারুল কবীর নিজেকে সম্পূর্ণ জমির মালিক দাবি করে তাদের কাছ থেকে প্রায় ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে কাগজপত্র তল্লাশি করে আরও দুইজন মালিকের নাম বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে আজহারুল কবীর নিজেদের ভিতর আপস মীমাংসা করে সম্পূর্ণ জমি কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে দ্বিতীয় দফায় চুক্তিবদ্ধ হয়। ওই সময় তিনি জাল কাগজপত্র সৃজন করে কোম্পানিকে জমিয়ে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় কোম্পানি মূল মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে ওই জমি কিনে নেয়। ওই জমিতে আজহারুল কবীরের মাত্র ৬.১৩ শতাংশ জমি রয়েছে। এ নিয়ে মামলা আদালতে গড়ালে বিচারকের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের ১২ মে সৈয়দ আজাহারুল কবীরের সঙ্গে পুণরায় একটি আপোষ চুক্তি সম্পন্ন হয়। যার ফলে তিনি জমির মালিকানার সমস্ত দাবি ত্যাগ করেন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, বর্তমানে তার ওই সম্পত্তির উপর কোনো অধিকার নেই। তিনি সেখান থেকে বাসা স্থানান্তর করার জন্য কোম্পানির কাছ থেকে তিন মাস সময় নেয়। ‌

সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ৭ আগস্ট  সৈয়দ আজাহারুল কবীর ও তার সহযোগীরা ওই জমিতে অনুপ্রবেশ করে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে দায়িত্বরত আনসার সদস্য ও আল-মুসলিম গ্রুপের কর্মচারীদের উপর গুলি বর্ষণ করে কোম্পানির সম্পত্তি দখল করে নেয় এবং কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় এক কর্মকর্তা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা গ্ৰহন করা হয়েছে। তাছাড়া গত ২০ আগস্ট প্রতারক আজহারুল কবীর ওই জমি নিজের দাবী করে প্রতারণামূলক তথ্য দিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে আল মুসলিম বিল্ডার্স ও আল মুসলিম গ্রুপের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করেছে সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের সঙ্গে এসব ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সুরক্ষা প্রদানে ওই প্রতারকের কবল থেকে জমিটি উদ্ধার করার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।