ঢাকা ০৩:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রকাশ্যে তুলে নেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর লাশ ফেলে গেল সন্ত্রাসীরা

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
  • Update Time : ১১:২৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১৯ Time View

নিহত সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে (৫৫) দিনদুপুরে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় তাকে অস্ত্রের মুখে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

ঘণ্টাখানেক পর চান্দাইশ এলাকায় সড়কের পাশে তার লাশ ফেলে যায়। এ ঘটনার পর গ্রামের অন্তত ১৫টি ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। নিহত আলাউদ্দিনের উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বক্সগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাস দেড়েক আগে গরু খাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে আলিয়ারা গ্রামের সালেহ আহম্মেদ মেম্বার ও শেখ ফরিদ গ্রুপের সঙ্গে প্রয়াত চেয়ারম্যান সুরুজ মিয়া ও তার ছেলে আলাউদ্দিন মেম্বারের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর জেরে গত ২৫ জুলাই দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ছয়জন আহত হন। এ ঘটনায় দুপক্ষই মামলা করেছে।

নিহতের স্বজনদের দাবি- ওই ঘটনার জেরে আলাউদ্দিনকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

আলাউদ্দিনের ভাতিজার স্ত্রী দেলোয়ারা আক্তার মিন্নী বলেন, আমার চাচাশ্বশুর একজনের জানাজা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বাড়ির সামনে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী তাকে জোর করে সিএনজিতে তুলে হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। তাকে গাড়িতে তোলার সময় তিনি চিৎকার দেন। তখন স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দেয়, কিন্তু আটকাতে পারেননি। পরে চান্দাইশ এলাকায় তার লাশ ফেলে যায়।

এদিকে, এ ঘটনার পর সালেহ আহম্মেদ ও শেখ ফরিদ পক্ষের অন্তত ১৫টি ঘরে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে লাকসাম ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শেখ ফরিদ পক্ষের দাবি, নিহত আলাউদ্দিনের লোকজন বাড়িঘরে আগুন দিয়েছেন। তবে নূর মোহাম্মদ নামে একজন বলেন, শেখ ফরিদ ও সালেহ মেম্বার গ্রুপ নিজেরাই নিজেদের ঘরে আগুন দিয়ে অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সালেহ আহম্মেদ ও শেখ ফরিদদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে আলাউদ্দিন নামে একজনকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। পরে আমরা দেখতে পাই তিনি আগেই মারা গেছেন।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, পূর্বের দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

প্রকাশ্যে তুলে নেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর লাশ ফেলে গেল সন্ত্রাসীরা

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
Update Time : ১১:২৮:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে (৫৫) দিনদুপুরে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় তাকে অস্ত্রের মুখে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

ঘণ্টাখানেক পর চান্দাইশ এলাকায় সড়কের পাশে তার লাশ ফেলে যায়। এ ঘটনার পর গ্রামের অন্তত ১৫টি ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। নিহত আলাউদ্দিনের উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বক্সগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাস দেড়েক আগে গরু খাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে আলিয়ারা গ্রামের সালেহ আহম্মেদ মেম্বার ও শেখ ফরিদ গ্রুপের সঙ্গে প্রয়াত চেয়ারম্যান সুরুজ মিয়া ও তার ছেলে আলাউদ্দিন মেম্বারের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর জেরে গত ২৫ জুলাই দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ছয়জন আহত হন। এ ঘটনায় দুপক্ষই মামলা করেছে।

নিহতের স্বজনদের দাবি- ওই ঘটনার জেরে আলাউদ্দিনকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

আলাউদ্দিনের ভাতিজার স্ত্রী দেলোয়ারা আক্তার মিন্নী বলেন, আমার চাচাশ্বশুর একজনের জানাজা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বাড়ির সামনে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী তাকে জোর করে সিএনজিতে তুলে হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। তাকে গাড়িতে তোলার সময় তিনি চিৎকার দেন। তখন স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দেয়, কিন্তু আটকাতে পারেননি। পরে চান্দাইশ এলাকায় তার লাশ ফেলে যায়।

এদিকে, এ ঘটনার পর সালেহ আহম্মেদ ও শেখ ফরিদ পক্ষের অন্তত ১৫টি ঘরে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে লাকসাম ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

শেখ ফরিদ পক্ষের দাবি, নিহত আলাউদ্দিনের লোকজন বাড়িঘরে আগুন দিয়েছেন। তবে নূর মোহাম্মদ নামে একজন বলেন, শেখ ফরিদ ও সালেহ মেম্বার গ্রুপ নিজেরাই নিজেদের ঘরে আগুন দিয়ে অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সালেহ আহম্মেদ ও শেখ ফরিদদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে আলাউদ্দিন নামে একজনকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। পরে আমরা দেখতে পাই তিনি আগেই মারা গেছেন।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, পূর্বের দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।