ঢাকা ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
শুভাঢ্যা খালটাকে ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গার সাথে প্রবাহমান করে সমৃদ্ধ করে দিতে চাই – সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তারেক রহমানের নাম ভাঙ্গিয়ে মওকাবাজরা তৎপর : এখনই রাশ টানা দরকার সেই চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ জজ এবার আইন সচিব হচ্ছেন! বিচারপতি আখতারুজ্জামানের শুনানি সম্পন্ন; খুরশীদ আলমের শুনানি ২ সেপ্টেম্বর আফ্রিদির মুখোশ খুললেন তানভীর রাহী ‘মাহফুজ আলমের ওপর হামলাচেষ্টা, শুধু ধৃষ্টতা নয় দেউলিয়াত্বের ও বহিঃপ্রকাশ’ শপথ নিলেন নবনিযুক্ত ২৫ বিচারপতি বিচার বিভাগ স্বাধীন, দক্ষ ও মানবিক হলে তবেই আস্থা অর্জন করতে পারবে: প্রধান বিচারপতি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ৬ সেপ্টেম্বর কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার

পুলিশ পরিদর্শক হত্যা: আরাভ খানের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষ্য

নওরোজ ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : ১২:৪৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২২০ Time View

পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলায় আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল ইসলাম। তিনি আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন তিনি আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। পরে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

এ মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সুরাইয়া আক্তার কেয়া, রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান। এদের মধ্যে আরাভ ও কেয়া পলাতক।

২০১৮ সালের ৭ জুলাই বনানীতে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। ঘটনার তিনদিন পরে তার ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় রহমত উল্লাহ, রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে হৃদিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, বনানীর ২ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরের ওই বাসায় নিয়ে আসামি দিদার, স্বপন, রহমত উল্লাহ পুলিশ কর্মকর্তা মামুনের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। পরে ওই তিন আসামির সঙ্গে মিজান, আতিক ও ছারোয়ার যুক্ত হয়ে মামুনকে নির্দয়ভাবে মারতে থাকেন। এতে মামুন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে আসামি কেয়া (রবিউলের স্ত্রী), আফরিন ও মীম বাসা থেকে চলে যান। রাতের কোনো একসময় সেখান থেকে চলে যান রবিউলও। গভীর রাতে আসামি আতিক আসামি স্বপনকে ডেকে বলেন, ‘দাদা, দেখেন তো পুলিশ কর্মকর্তার হাত-পা কেমন শক্ত মনে হচ্ছে।’ ভোরবেলায় তারা নিশ্চিত হন যে মামুন মারা গেছেন।

মামুন মারা যাওয়ার পর রহমত উল্লাহ সবাইকে বলেন, লাশ গুম না করলে তারা সবাই বিপদে পড়ে যাবেন। কারণ, মামুন তার বন্ধু। তিনি মামুনকে ফোন করে ডেকে এনেছেন। রহমত উল্লাহর মুঠোফোনের শেষ কলটিও তার (মামুন)। তখন স্বপন মুঠোফোনে রবিউলকে মামুনের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা কী করবো? আপনি সকালে এখানে আসেন।’

চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, দুটি বস্তা ও একটি সাদা কাপড় নিয়ে বাসার নিচে আসেন রবিউল। তার কাছ থেকে বস্তা নিয়ে বাসার ওপরে যান দিদার। এ সময় রহমত উল্লাহ, আতিক ও মিজানকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে গিয়ে তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি লিফটের দরজার কাছে নিয়ে রাখেন। সকাল সাতটার দিকে স্বপন, দিদার ও আতিক মিলে মামুনের মরদেহ লিফটে করে নিচে নামান। সবাই মিলে গাড়ির পেছনের অংশে মরদেহ তোলেন। পরে রহমত উল্লাহ ওই গাড়ি চালিয়ে বনানীর রোডে যান। গাড়িতে ছিলেন দিদার, স্বপন ও আতিক। সেখানে রবিউল, তার স্ত্রী আসামি কেয়া, মেহেরুন্নেছা ও মীমকে সঙ্গে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলসহ অপেক্ষায় ছিলেন। পরে সেখান থেকে রবিউলের মোটরসাইকেল অনুসরণ করে রহমত উল্লাহ গাড়ি চালাতে থাকেন। খিলক্ষেতের একটি পাম্পে গিয়ে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে রবিউল ফিরে আসেন। আর গাড়ি নিয়ে রহমতউল্লাহ যান গাজীপুরের দিকে। এ সময় রবিউলের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলেন দিদার ও স্বপন। গাজীপুরের শিমুলতলীতে দিদার, স্বপন ও আতিক একটি দোকান থেকে সাত লিটার পেট্রোল কেনেন। রবিউল আসামি স্বপনের মুঠোফোনে টাকা পাঠান।

পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে উলুখোলা থেকে আবদুল্লাহপুর যাওয়ার পথে একটি বাঁশবাগানে পেট্রোল ঢেলে মামুনের মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর গাড়ি নিয়ে সবাই ঢাকায় ফিরে আসেন।

Please Share This Post in Your Social Media

পুলিশ পরিদর্শক হত্যা: আরাভ খানের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষ্য

নওরোজ ডেস্ক রিপোর্ট
Update Time : ১২:৪৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৪

পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলায় আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল ইসলাম। তিনি আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন তিনি আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। পরে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

এ মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সুরাইয়া আক্তার কেয়া, রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান। এদের মধ্যে আরাভ ও কেয়া পলাতক।

২০১৮ সালের ৭ জুলাই বনানীতে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। ঘটনার তিনদিন পরে তার ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় রহমত উল্লাহ, রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে হৃদিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, বনানীর ২ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরের ওই বাসায় নিয়ে আসামি দিদার, স্বপন, রহমত উল্লাহ পুলিশ কর্মকর্তা মামুনের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। পরে ওই তিন আসামির সঙ্গে মিজান, আতিক ও ছারোয়ার যুক্ত হয়ে মামুনকে নির্দয়ভাবে মারতে থাকেন। এতে মামুন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে আসামি কেয়া (রবিউলের স্ত্রী), আফরিন ও মীম বাসা থেকে চলে যান। রাতের কোনো একসময় সেখান থেকে চলে যান রবিউলও। গভীর রাতে আসামি আতিক আসামি স্বপনকে ডেকে বলেন, ‘দাদা, দেখেন তো পুলিশ কর্মকর্তার হাত-পা কেমন শক্ত মনে হচ্ছে।’ ভোরবেলায় তারা নিশ্চিত হন যে মামুন মারা গেছেন।

মামুন মারা যাওয়ার পর রহমত উল্লাহ সবাইকে বলেন, লাশ গুম না করলে তারা সবাই বিপদে পড়ে যাবেন। কারণ, মামুন তার বন্ধু। তিনি মামুনকে ফোন করে ডেকে এনেছেন। রহমত উল্লাহর মুঠোফোনের শেষ কলটিও তার (মামুন)। তখন স্বপন মুঠোফোনে রবিউলকে মামুনের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। স্বপন বলেন, ‘এখন আমরা কী করবো? আপনি সকালে এখানে আসেন।’

চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, দুটি বস্তা ও একটি সাদা কাপড় নিয়ে বাসার নিচে আসেন রবিউল। তার কাছ থেকে বস্তা নিয়ে বাসার ওপরে যান দিদার। এ সময় রহমত উল্লাহ, আতিক ও মিজানকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে গিয়ে তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি লিফটের দরজার কাছে নিয়ে রাখেন। সকাল সাতটার দিকে স্বপন, দিদার ও আতিক মিলে মামুনের মরদেহ লিফটে করে নিচে নামান। সবাই মিলে গাড়ির পেছনের অংশে মরদেহ তোলেন। পরে রহমত উল্লাহ ওই গাড়ি চালিয়ে বনানীর রোডে যান। গাড়িতে ছিলেন দিদার, স্বপন ও আতিক। সেখানে রবিউল, তার স্ত্রী আসামি কেয়া, মেহেরুন্নেছা ও মীমকে সঙ্গে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলসহ অপেক্ষায় ছিলেন। পরে সেখান থেকে রবিউলের মোটরসাইকেল অনুসরণ করে রহমত উল্লাহ গাড়ি চালাতে থাকেন। খিলক্ষেতের একটি পাম্পে গিয়ে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে রবিউল ফিরে আসেন। আর গাড়ি নিয়ে রহমতউল্লাহ যান গাজীপুরের দিকে। এ সময় রবিউলের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলেন দিদার ও স্বপন। গাজীপুরের শিমুলতলীতে দিদার, স্বপন ও আতিক একটি দোকান থেকে সাত লিটার পেট্রোল কেনেন। রবিউল আসামি স্বপনের মুঠোফোনে টাকা পাঠান।

পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে উলুখোলা থেকে আবদুল্লাহপুর যাওয়ার পথে একটি বাঁশবাগানে পেট্রোল ঢেলে মামুনের মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর গাড়ি নিয়ে সবাই ঢাকায় ফিরে আসেন।