পুলিশে অনিয়ম দুর্নীতি চলছেই আইন শৃংখলার অবনতিতে মানুষ আতংকিত

- Update Time : ১১:৪৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১৭ Time View
বাংলাদেশ পুলিশে চলছে আগের মতো সব তোঘলকি কায়-কারবার। সামান্যতম কোনো পরিবর্তন পুলিশে আসেনি। আগে ছিল আওয়ামী তোষণ। কে কার আগে নেত্রীকে কিংবা স্থানীয় প্রভাবশালীকে খুশী করবে-এটাই ছিল সবার এক ধরনের প্রতিযোগিতা। আর বর্তমানে কোন ‘চ্যানেলে’ গেলে পদ কিংবা ভালো পেষ্টিং পাওয়া যাবে সেই নিয়ে চলে এক ধরনের অশুভ কিংবা অসম প্রতিযোগিতা। কয়েকদিন আগে বেশ কিছু এডিশনাল আইজিপি, ডিআইজি, এসপিসহ বদলি, পদায়ন, প্রমোশন হয়ে গেল। এখানেও বেশ কিছু অনিয়ম ঘটেছে। বিশেষ করে এডিশনাল আইজিপি পদায়নের ক্ষেত্রে ঘটেছে গুরুতর অনিয়ম। এক্ষেত্রে সুপারসিড করা হয়েছে সৎ, দক্ষ, অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের। এনিয়ে অভ্যন্তরীন ক্ষোভ, দ্বন্দ চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে কাজ-কর্মেও ঘটছে অবহেলা। এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের।
সূত্রমতে, পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে চরম অবহেলিত, নিগৃহীত কর্মকর্তারা এখনো বৈষম্যের শিকার। পুলিশের নিয়ম-কানুনের বরখেলাপ ঘটছে পদে পদে। অর্ন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় বসেই একজনকে আইজিপি বানালেন, তিনি মূলতঃ সাবেক বিচারপতি ইনায়েতপুর রহিম ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম ভ্রাতৃদ্বয়ের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। পুরস্কারস্বরূপ তাকে একসময় দিনাজপুরের এসপি করা হয়েছিল। হঠাৎ করে তিনি আইজিপি হয়ে গেলেন। এতে সংশ্লিষ্ট অনেকের চক্ষু চড়কগাছ হবার যোগাড়। অনেকেই ভাবতে লাগলেন এটা আবার কোন তরীকা! আওয়ামী দোসর আবার আইজিপি হয়ে কিভাবে এই প্রশ্ন সবার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। অবশেষে আসল রহস্য উদঘাটিত হয়। একজন সাবেক ডিআইজি যিনি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা-মামলার আসামী ছিলেন। ওই মামলা থেকে খালাস পাবার পর তিনি দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন।
জানা যায়, অর্ন্তবর্তী সরকারের সংশ্লিষ্টরা কোন লোক না পেয়ে তাকেই আইজিপি হবার প্রস্তাব করেন। তিনি এটা গ্রহণ না করে উল্টো প্রস্তাব করেন আমি আপনাদের যোগ্য লোক দিচ্ছি। তারই প্রস্তাবে অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রথম আইজিপি করা হয়। অবশ্য এই প্রস্তাবটি ওই সাবেক ডিআইজি এমনি এমনি দেননি। এর পেছনে রয়েছে বিরাট অংকের লেনদেনের বিষয়। ওই ডিআইজির বাড়ী সিরাজগঞ্জে বলে জানা গেছে। তিনি নমিনেশন পেলে সেখান থেকে বিএনপির টিকেটে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী।
ডিআইজির সুপারিশে ময়নাল ইসলাম আইজিপি হবার সঙ্গে সঙ্গে তিনি নেমে পড়েন তার নির্বাচনী খরচ তোলার মিশনে। এই মিশনে তিনি এসপি থেকে শুরু করে ওসি পদের জন্য লোক মনোনয়ন দেন। এতে তিনি বিশাল অংকের টাকা পকেটস্থ করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়।
অল্পদিনের মধ্যেই নতুন আইজিপির আসল রূপ বেরিয়ে আসতে শুরু করে। বিভিন্ন মহল থেকে তার বিরোধীতাও আসতে থাকে। অবশেষে সরকার তাকে সরিয়ে নতুন আইজিপি করেন ১৭ বছর ঘরে বসে থাকা বাহারুল আলমকে। এই আইজিপি যোগদানের পর থেকে শুরু হয় পুলিশে নতুন নতুন বলয় সৃষ্টি।
পুলিশ সদর দফতরের সূত্রমতে, এই আইজিপি মূলতঃ একটি ধর্মীয় দলের অনুসারী হয়ে পড়েন। শুরু হয় নীচের লেভেলের অফিসারদের ওই দলের প্রতি অনুগত হবার প্রতিযোগিতা। বিশেষ করে আওয়ামী দোসররা ওই দলের সম্মুখ সারিতে স্থান পেতে শুরু করে। ফলে বর্তমানে প্রমোশন পদায়ন সব কিছু নতুন সৃষ্ট বলয় থেকেই হচ্ছে।
সম্প্রতি এডিশনাল আইজিপি পদায়নের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি একদম স্পষ্ট হয়ে গেছে। এডিশনাল আইজিপি হিসাবে এক নম্বরে যিনি আছেন তাকে সুপারসিড করা হয়েছে। নিকট অতীতেও তিনি একবার সুপারসিড হয়েছেন। আওয়ামী আমলে তো ১৭ বছর এসপিই ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট অনেকের মন্তব্য, ‘পুলিশ নিয়ে খেলাধুলা কখনো বন্ধ হবে না। তাই দেশের আইনশৃংখলারও উন্নতি হবে না।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়