ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত ছাত্রী টিনা রিমান্ডে

আইন-আদালত ডেস্ক
  • Update Time : ০৮:৪০:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
  • / ১৯ Time View

ছবিঃ সংগৃহীত।

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ফারিয়া হক টিনার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (৯ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। তবে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক টিনার কাছে জানতে চান, কিছু বলার আছে কি না? তখন টিনা বলেন, না।

এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মঈন উদ্দিন তার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া পারভেজকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কারণে প্রাইম ইউনিভার্সিটিসহ বনানী থানা এলাকা ও আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। যা বর্তমানেও চলমান আছে। ফারিয়া হক টিনা এবং তার বান্ধবী ফাতেমা তাহসিন ঐশীর ইন্দনে ও মদদে এ ঘটনা সংঘটিত হয় এবং পারভেজ নিহত হয়।

আদালতে মাহাথির হাসানের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে টিনার সংশ্লিষ্টতা আসে। তার বিরুদ্ধে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর হত্যা মামলা। তা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মামলার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রকৃত ও সঠিক তথ্যাদি উদঘাটিত হওয়াসহ ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ ও গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ সময় টিনার পক্ষে তার আইনজীবী নাকিব আল মাসাদ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, টিনার সাথে ঐশী নামে আরেকটা মেয়ে ছিল। হাসাহাসির ঘটনা ঘটেছে ঐশীর সাথে। কথা কাটাকাটি হয়েছে ঐশীর সাথে। আর ভুক্তভোগীকে যখন ছুরিকাঘাত করা হয় তখন টিনা তার বাসার পাশের বাড়িতে টিউশনি করাচ্ছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনায় জড়িত থাকলে তো সে এক নম্বর আসামি হতো। তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ মামলায় সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছে। নতুন করে তার কাছ থেকে পাওয়ার কিছু নেই। তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন এলাকা থেকে র‍্যাব-১ তাকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল বিকাল ৪টার পর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ওই ঘটনার এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে জাহিদুল ইসলাম পারভেজ নিহত হন। এ ঘটনার পরের দিন ২০ এপ্রিল পারভেজের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আটজনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল এ মামলায় গ্রেপ্তার আল কামাল শেখ, আলভী হোসান জুনায়েদ ও আল আমিন সানির সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদের মধ্যে গত ২৩ এপ্রিল আসামি কামাল আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। একইদিন আসামি মো. হৃদয় মিয়াজীর সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এছাড়া গ্রেপ্তারের পর ২৪ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাহাথির হাসান আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। গত ২৫ এপ্রিল এ মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ২৭ এপ্রিল রিমান্ড শেষে আলভী ও সানিকে এবং ২৯ এপ্রিল হৃদয় মিয়াজী ও মেহেরাজ ইসলামকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত ছাত্রী টিনা রিমান্ডে

আইন-আদালত ডেস্ক
Update Time : ০৮:৪০:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ফারিয়া হক টিনার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার (৯ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। তবে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক টিনার কাছে জানতে চান, কিছু বলার আছে কি না? তখন টিনা বলেন, না।

এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মঈন উদ্দিন তার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া পারভেজকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কারণে প্রাইম ইউনিভার্সিটিসহ বনানী থানা এলাকা ও আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। যা বর্তমানেও চলমান আছে। ফারিয়া হক টিনা এবং তার বান্ধবী ফাতেমা তাহসিন ঐশীর ইন্দনে ও মদদে এ ঘটনা সংঘটিত হয় এবং পারভেজ নিহত হয়।

আদালতে মাহাথির হাসানের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে টিনার সংশ্লিষ্টতা আসে। তার বিরুদ্ধে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর হত্যা মামলা। তা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মামলার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রকৃত ও সঠিক তথ্যাদি উদঘাটিত হওয়াসহ ঘটনার সাথে জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ ও গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ সময় টিনার পক্ষে তার আইনজীবী নাকিব আল মাসাদ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, টিনার সাথে ঐশী নামে আরেকটা মেয়ে ছিল। হাসাহাসির ঘটনা ঘটেছে ঐশীর সাথে। কথা কাটাকাটি হয়েছে ঐশীর সাথে। আর ভুক্তভোগীকে যখন ছুরিকাঘাত করা হয় তখন টিনা তার বাসার পাশের বাড়িতে টিউশনি করাচ্ছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনায় জড়িত থাকলে তো সে এক নম্বর আসামি হতো। তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ মামলায় সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছে। নতুন করে তার কাছ থেকে পাওয়ার কিছু নেই। তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন এলাকা থেকে র‍্যাব-১ তাকে গ্রেপ্তার করে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল বিকাল ৪টার পর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ওই ঘটনার এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে জাহিদুল ইসলাম পারভেজ নিহত হন। এ ঘটনার পরের দিন ২০ এপ্রিল পারভেজের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আটজনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল এ মামলায় গ্রেপ্তার আল কামাল শেখ, আলভী হোসান জুনায়েদ ও আল আমিন সানির সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদের মধ্যে গত ২৩ এপ্রিল আসামি কামাল আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। একইদিন আসামি মো. হৃদয় মিয়াজীর সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এছাড়া গ্রেপ্তারের পর ২৪ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাহাথির হাসান আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। গত ২৫ এপ্রিল এ মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ২৭ এপ্রিল রিমান্ড শেষে আলভী ও সানিকে এবং ২৯ এপ্রিল হৃদয় মিয়াজী ও মেহেরাজ ইসলামকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।