ঢাকা ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পদত্যাগ করলেন সিলেটের শাবি ভিসি

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
  • Update Time : ০৩:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৯ Time View

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগ করেছেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিনি শনিবার (১০ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

রাষ্ট্রপতির কাছে উপাচার্য তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, শাবিপ্রবির জনসংযোগ শাখার কর্মকর্তা। এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকল আবাসিক হলের প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্ট এবং প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পদত্যাগ করেছে। ওই দিন সকালে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবরে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার আগে বৈষম্যবিরোধী ইস্যুতে আন্দোলনরত শাবি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন এর পর -ভাইস চ্যান্সেলর ও কোষাধ্যক্ষও পদত্যাগ করেন।

এদিকে শাবিপ্রবি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: কবির হোসেন পদত্যাগের আগে ১০ আগস্ট ২০২৪ শিক্ষার্থীদের জন্য এক বার্তা দিয়েছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে তিনিও পদত্যাগ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। প্রফেসর ড. মো: কবির হোসেনের বার্তা-

স্নেহভাজন শাবিপ্রবির ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, আমার শুভেচ্ছা নিও। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ যে সকল ছাত্রছাত্রী, সাধারণ জনগণ শহীদ হয়েছেন সে সকল বীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আমার স্নেহভাজন ছাত্রছাত্রীদের কিছু কথা বলতে চাই।

আমি শাবিপ্রবির প্রথম প্রভাষক হিসেবে প্রায় ৩৪ (চৌত্রিশ) বছর চাকুরীকালীন সময়ে দলমত নির্বিশেষ শাবিপ্রবির একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার স্নেহভাজন হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী দেশে/বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। আমি সবার জন্য অন্তর থেকে দোয়া করি। আমার শিক্ষকতা জীবনে যে সকল ছাত্র/ছাত্রীর ক্লাস পরীক্ষা নিয়েছি কিংবা নিজ বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের সকল ছাত্র/ছাত্রী যে যেই ধরনের সমস্যা নিয়ে এসেছে তা সমাধানের চেস্টা করেছি ও সমাধান করেছি তা ছাত্রছাত্রীরাই আমার সম্পর্কে ভালো বলতে পারবে।

গত ১(এক) বছর আগে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাকে ৪(চার) বছরের জন্য প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগের পর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলরের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধুমাত্র উন্নয়নমুলক কাজের গুণগত মান যাচাই-বাছাই ও তদারকির দায়িত্ব পালন করছি। ফলশ্রুতিতে ১ (এক) বছরের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি/মটরসাইকেল/বাই সাইকেল রাখার জন্য পার্কিং তৈরি, সমাজবিজ্ঞান ভবনের সম্মুখের রাস্তা তৈরি এবং অতি সম্প্রতি সমাজবিজ্ঞান ভবন থেকে প্রথম ছাত্রী হল হয়ে মেইন রোড পর্যন্ত হাঁটার এবং গাড়ি চলার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া শাহপরান হল থেকে মেইন গেইট পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, হ্যান্ডবল গ্রাউন্ড ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মাটি ভরাট করে ব্যবহারের উপযোগী করা এবং শাবিপ্রবি মেডিকেল সেন্টার সংস্কার ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানতে পেরেছি আমি সিলেট ছেড়ে পালিয়েছি এ ধরনের খবর রটানো হচ্ছে। কেউ কেউ পদত্যাগ করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধমে লেখালেখি করছেন। এ বিষয়টি আমি সুস্পষ্ট করতে চাই, জীবনের অর্ধেক সময়ের বেশি শাবিপ্রবিতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি এবং দীর্ঘদিন থেকেই সিলেটে বাসা তৈরি করে পরিবারসহ বসবাস করছি। আমি বর্তমানে নিজ বাসায় অবস্থান করছি।

আমার প্রাণপ্রিয় ছাত্রছাত্রী, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করবো বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সমস্যা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দ আমার সাথে যেকোনো স্থানে আলোচনা করতে চাইলে আমি তোমাদের স্বাগতম জানাই।

প্রো-ভিসি হিসেবে সুস্পষ্ট করে আমার সন্তানতুল্য ছাত্রছাত্রীদেরকে বলতে চাই প্রায় ৩৪(চৌত্রিশ) বছর শিক্ষকতা করার পর যদি মনে করো আমার সেবা তোমাদের আর প্রয়োজন নাই তাহলে বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের দিক নির্দেশনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট আমি পদত্যাগ করতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন প্রায়ই আলোচিত-সমলোচিত হয়ে সবসময় খবরের শিরোনাম হন। তবে তিনি বেশি আলোচিত হয়েছিলেন ২০২২ সালে। ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। এই আন্দোলন চলাকালে ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনকারীরা। ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই রাত থেকেই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরদিন থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টানা অবস্থান নেন তারা। সেখানে ২৮ শিক্ষার্থী টানা ১৩৬ ঘণ্টা অনশন করেন। ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙে ব্যারিকেড তুলে নেন। এ ঘটনায় ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হন ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

এছাড়া একই সময় ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের কেউ বিয়ে করতে চায় না’ এরকম আপত্তিকর একটি মন্তব্য করে দেশব্যাপী সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। এই আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও অধ্যাপক ফরিদের কুশপত্তলিকা দাহ করেন। যদিও আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের কাছ মোবাইল ফোনে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।

এছাড়াও ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর শাবিপ্রবির মিনি অডিটরিয়ামে তথ্য অধিকার বিষয়ক এক সেমিনারে তালেবানি কালচার সমর্থন করে একটি বক্তব্য দেন। যা নিয়ে সারাদেশের অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়। এসব নানা মন্তব্য করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

পদত্যাগ করলেন সিলেটের শাবি ভিসি

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
Update Time : ০৩:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ অগাস্ট ২০২৪

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ পদত্যাগ করেছেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিনি শনিবার (১০ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।

রাষ্ট্রপতির কাছে উপাচার্য তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, শাবিপ্রবির জনসংযোগ শাখার কর্মকর্তা। এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকল আবাসিক হলের প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্ট এবং প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পদত্যাগ করেছে। ওই দিন সকালে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবরে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার আগে বৈষম্যবিরোধী ইস্যুতে আন্দোলনরত শাবি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদত্যাগ চেয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন এর পর -ভাইস চ্যান্সেলর ও কোষাধ্যক্ষও পদত্যাগ করেন।

এদিকে শাবিপ্রবি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: কবির হোসেন পদত্যাগের আগে ১০ আগস্ট ২০২৪ শিক্ষার্থীদের জন্য এক বার্তা দিয়েছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে তিনিও পদত্যাগ করতে প্রস্তুত রয়েছেন। প্রফেসর ড. মো: কবির হোসেনের বার্তা-

স্নেহভাজন শাবিপ্রবির ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, আমার শুভেচ্ছা নিও। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ যে সকল ছাত্রছাত্রী, সাধারণ জনগণ শহীদ হয়েছেন সে সকল বীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আমার স্নেহভাজন ছাত্রছাত্রীদের কিছু কথা বলতে চাই।

আমি শাবিপ্রবির প্রথম প্রভাষক হিসেবে প্রায় ৩৪ (চৌত্রিশ) বছর চাকুরীকালীন সময়ে দলমত নির্বিশেষ শাবিপ্রবির একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার স্নেহভাজন হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী দেশে/বিদেশে প্রতিষ্ঠিত। আমি সবার জন্য অন্তর থেকে দোয়া করি। আমার শিক্ষকতা জীবনে যে সকল ছাত্র/ছাত্রীর ক্লাস পরীক্ষা নিয়েছি কিংবা নিজ বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের সকল ছাত্র/ছাত্রী যে যেই ধরনের সমস্যা নিয়ে এসেছে তা সমাধানের চেস্টা করেছি ও সমাধান করেছি তা ছাত্রছাত্রীরাই আমার সম্পর্কে ভালো বলতে পারবে।

গত ১(এক) বছর আগে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাকে ৪(চার) বছরের জন্য প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগের পর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলরের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধুমাত্র উন্নয়নমুলক কাজের গুণগত মান যাচাই-বাছাই ও তদারকির দায়িত্ব পালন করছি। ফলশ্রুতিতে ১ (এক) বছরের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি/মটরসাইকেল/বাই সাইকেল রাখার জন্য পার্কিং তৈরি, সমাজবিজ্ঞান ভবনের সম্মুখের রাস্তা তৈরি এবং অতি সম্প্রতি সমাজবিজ্ঞান ভবন থেকে প্রথম ছাত্রী হল হয়ে মেইন রোড পর্যন্ত হাঁটার এবং গাড়ি চলার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া শাহপরান হল থেকে মেইন গেইট পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার, হ্যান্ডবল গ্রাউন্ড ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মাটি ভরাট করে ব্যবহারের উপযোগী করা এবং শাবিপ্রবি মেডিকেল সেন্টার সংস্কার ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানতে পেরেছি আমি সিলেট ছেড়ে পালিয়েছি এ ধরনের খবর রটানো হচ্ছে। কেউ কেউ পদত্যাগ করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধমে লেখালেখি করছেন। এ বিষয়টি আমি সুস্পষ্ট করতে চাই, জীবনের অর্ধেক সময়ের বেশি শাবিপ্রবিতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি এবং দীর্ঘদিন থেকেই সিলেটে বাসা তৈরি করে পরিবারসহ বসবাস করছি। আমি বর্তমানে নিজ বাসায় অবস্থান করছি।

আমার প্রাণপ্রিয় ছাত্রছাত্রী, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করবো বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সমস্যা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দ আমার সাথে যেকোনো স্থানে আলোচনা করতে চাইলে আমি তোমাদের স্বাগতম জানাই।

প্রো-ভিসি হিসেবে সুস্পষ্ট করে আমার সন্তানতুল্য ছাত্রছাত্রীদেরকে বলতে চাই প্রায় ৩৪(চৌত্রিশ) বছর শিক্ষকতা করার পর যদি মনে করো আমার সেবা তোমাদের আর প্রয়োজন নাই তাহলে বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকারের দিক নির্দেশনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট আমি পদত্যাগ করতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন প্রায়ই আলোচিত-সমলোচিত হয়ে সবসময় খবরের শিরোনাম হন। তবে তিনি বেশি আলোচিত হয়েছিলেন ২০২২ সালে। ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। এই আন্দোলন চলাকালে ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনকারীরা। ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই রাত থেকেই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরদিন থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টানা অবস্থান নেন তারা। সেখানে ২৮ শিক্ষার্থী টানা ১৩৬ ঘণ্টা অনশন করেন। ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙে ব্যারিকেড তুলে নেন। এ ঘটনায় ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হন ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

এছাড়া একই সময় ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের কেউ বিয়ে করতে চায় না’ এরকম আপত্তিকর একটি মন্তব্য করে দেশব্যাপী সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। এই আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও অধ্যাপক ফরিদের কুশপত্তলিকা দাহ করেন। যদিও আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের কাছ মোবাইল ফোনে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।

এছাড়াও ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর শাবিপ্রবির মিনি অডিটরিয়ামে তথ্য অধিকার বিষয়ক এক সেমিনারে তালেবানি কালচার সমর্থন করে একটি বক্তব্য দেন। যা নিয়ে সারাদেশের অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়। এসব নানা মন্তব্য করে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন প্রায়ই খবরের শিরোনাম হয়েছেন।