পটুয়াখালীতে মেলার নামে চলছে স্টল বানিজ্য

- Update Time : ০৬:০৭:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১৭৯ Time View
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন ও বিসিক কার্যালয়ের উদ্যোগে ১০ দিনব্যাপী বিসিক উদ্যোক্তা এবং তারুণ্যের লোক ও কারুশিল্প মেলা-২০২৫ শুরু হয় ৫ই ফেব্রুয়ারি। একত্রে দুটি মেলার জন্য স্টল তৈরি হয় ১০০টি কিন্তু স্টল বরাদ্ধ ও বন্ঠনে মানা হয়নি সঠিক নিয়ম।
সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করে জানা যায়, স্টল রয়েছে ১০০ টি এছাড়াও মাঠের মধ্যে ভ্রাম্যমান স্টল রয়েছে আরো ১৫টি। শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে আরও ১০টি রাইড। মেলার জন্য তৈরি ১০০ টি স্টলের মধ্যে বিসিক উদ্যোক্তারা মাত্র ৪০টি। বাকি সবগুলো স্টল এবং বিনোদন লোক ও কারু শিল্প মেলার নামে নিয়ন্ত্রণ হয় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে। বিসিক উদ্যোক্তাদের স্টল বরাদ্দে ব্যানার খরচ ছাড়া নির্ধারিত ফি ২৫০০ টাকা তবে নারী উদ্যোক্তাদের পছন্দের স্টল দেয়া হয়নি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে। একটি স্টল দুই থেকে তিন জন উদ্যোক্তারা বরাদ্দ পায়।
অপরদিকে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের ১১ লক্ষ টাকার বিনিময় বাকি সব স্টল এবং বিনোদন ভাড়া দেয়। বাগেরহাটের ব্যবসায়ী রনি তালুকদার এর সাথে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চুক্তি হয়। রনি স্টল, বিনোদনের রাইড সমূহ, ক্রোকারিজ, খাবার ও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ীদের কাছে চড়া মূল্যে ভাড়া দেয়। পূর্ব পাশের প্রবেশ পথ গেট সংলগ্ন একটি আচারের দোকান ৭০ হাজার টাকা ভাড়া হয়। মাঠের মধ্যে ফুচকা চটপটির দোকান ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া হয়। এছাড়াও স্টল প্রতি একদিনের জন্য এক থেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া হয়। তবে এর মধ্যে প্রকৃত কোন লোক ও কারুশিল্পের প্রদর্শনী নেই।
উদ্যোক্তা মেলার সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন উদ্যোক্তা অন্বেষণ, সৃষ্টি ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে মেলা প্রদর্শনীর আয়োজন হলেও অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত। মেলা শুরুর পূর্বে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, লিফলেট কিংবা ব্যাপক প্রচারণা চোখে পড়েনি তাই মেলা শুরুর পর স্থানীয় অনেক উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ না করতে পেরে হতবাক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, উদ্যোক্ত মেলায় প্রতিবছর আমার মাধ্যমে অন্তত ১০ জন স্থানীয় ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করে। পটুয়াখালী বিসিক অফিস থেকে জেনেছি তাদের মাত্র ৪০ টি স্টল আছে তাই আমাকে এবছর স্টল দিবে না। আমি ভিন্নভাবে মাত্র দুটি স্টল সংগ্রহ করেছি।
মেলায় মৃৎশিল্প পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ী বলেন, যেখানে আমার স্টল দিয়েছে এখানে কাস্টমার কম আসে। অপর পাশে দিলে ভালো হতো। বাগেরহাটের পার্টিদের কাছে মেলার মাঠ ভাড়া দেয়ায় আমরা বিসিকের নিবন্ধিত উদ্যোক্তারা ভালো জায়গায় স্টল পাইনি।
স্থানীয় বাধঘাটের ব্যবসায়ী বলেন, আমি কাপড় কসমেটিক খেলনার ব্যবসা করি। অন্য একজন লোক স্টল নিয়েছিল কিন্তু জায়গা ভালো না হাওয়ায় আমাকে দিয়ে দিয়েছে। আমি তাকে টাকা দিয়েছি।বাগেরহাটের পার্টিরা ১৫০০০ টাকা ভাড়া চেয়েছিল এরপর ডিসি অফিসের নাজির এর কাছে আবেদন করেছিলাম সে বলেছে সব ভাড়া হয়ে গেছে। আজ সকালে রেজাউল নাজির আবার আসছে ওই কর্নার স্টলটা খালি আছে ৭৫০০ টাকা দিলে নিতে পারেন। আমি বলেছি স্টল পেয়েছি তবে এত টাকায় আমি ভাড়া নিব না।
বাগেরহাটের ব্যবসায়ী রনি তালুকদার বলেন, মাঠে বিসিকের ৪০টা স্টল বাদে সবগুলোই আমাদের। আমি ছাড়াও হৃদয়,আতিক, জাহিদ, আলামিন ভাইদের নিয়ে ৪-৫ জন আছি। আমরা ডিসি অফিসের সাথে চুক্তি করেছি। ভ্রাম্যমান ফুচকা চানাচুর ওয়ালাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে চেয়েছি কারণ কাল থেকে তারা যেন মাঠে না আসে। তারা আসলে আমাদের ব্যবসায়ীদের বিশাল ক্ষতি।
এ ব্যাপারে ডিসি কোড এর নাজির রেজাউল করিম বলেন আমি কিছু জানি না ডিসি স্যারের সাথে কথা বলেন, জেলা প্রশাসক এর সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়