ঢাকা ০১:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ের ১৫ গ্রামের ২০০ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত পানির নিচে

সাব্বির হোসেন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:১০:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৩৬৮ Time View

পঞ্চগড় সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী ১৫ গ্রামের প্রায় ২০০ হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে তলিয়ে গেছে।

কৃষকদের অভিযোগ, ভারতীয় নাগর নদীসহ পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহে বাধা এবং স্লুইস গেটের অকার্যকারিতার কারণে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের চারোখুড়া এলাকায় ডুবে যাওয়া ধানক্ষেতে নেমে মানববন্ধন করেন প্রায় ২০০ শতাধিক কৃষক।

তাদের দাবি, এলজিইডি নির্মিত উজানের দুটি স্লুইস গেট দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনায় পড়ে আছে।

অন্যদিকে সড়ক বিভাগের সরকারি নয়নজলি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষক রাশেদুজ্জামান, শরিফ হোসেন ও রবীণ বর্মণ বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে একই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। শুকনা মৌসুমে ভুট্টা, মরিচ, আলুর চাষে ক্ষতি হয়েছে, এবার আমন আবাদে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চারা লাগানোর পরেই কোমরসমান পানি জমে গেছে।

গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের চারোখুড়া, চিকনমাটি, গরিনাবাড়ি, সর্দারপাড়া, মন্ডলপাড়াসহ ১৫টি গ্রাম ভারতীয় সীমান্তবর্তী। বর্ষায় সীমান্ত নদ-নদীর পানি ও পাহাড়ি ঢল এসে জমে থাকে এই অঞ্চলে। এলজিইডির স্লুইস গেটগুলোর যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যাওয়ায় এগুলো এখন কার্যত পরিত্যক্ত। ফলে বর্ষায় উজানের পানি আটকে গিয়ে ফসলহানি ঘটে।

স্লুইস ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনোয়ার হোসেন দিপু বলেন, ‘স্লুইস দুটির কিছু যন্ত্রাংশ চুরি হলেও পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। তবে মূল সমস্যা হলো নয়নজলি দখল। সরকারি জায়গা দখলমুক্ত হলে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হবে।

পঞ্চগড় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, পুরোনো স্লুইস গেটগুলো সক্ষমতা হারিয়েছে। নতুন স্লুইস নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

পঞ্চগড় সড়ক ও জনপদ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে গণনোটিশ ও প্রচার চালানো হচ্ছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চলছে।

জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন হলে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ সম্ভব, এতে উৎপাদন বাড়বে এবং কৃষকরা উপকৃত হবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

পঞ্চগড়ের ১৫ গ্রামের ২০০ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত পানির নিচে

সাব্বির হোসেন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি
Update Time : ০৫:১০:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

পঞ্চগড় সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী ১৫ গ্রামের প্রায় ২০০ হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে তলিয়ে গেছে।

কৃষকদের অভিযোগ, ভারতীয় নাগর নদীসহ পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহে বাধা এবং স্লুইস গেটের অকার্যকারিতার কারণে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের চারোখুড়া এলাকায় ডুবে যাওয়া ধানক্ষেতে নেমে মানববন্ধন করেন প্রায় ২০০ শতাধিক কৃষক।

তাদের দাবি, এলজিইডি নির্মিত উজানের দুটি স্লুইস গেট দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনায় পড়ে আছে।

অন্যদিকে সড়ক বিভাগের সরকারি নয়নজলি দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষক রাশেদুজ্জামান, শরিফ হোসেন ও রবীণ বর্মণ বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে একই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। শুকনা মৌসুমে ভুট্টা, মরিচ, আলুর চাষে ক্ষতি হয়েছে, এবার আমন আবাদে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু চারা লাগানোর পরেই কোমরসমান পানি জমে গেছে।

গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের চারোখুড়া, চিকনমাটি, গরিনাবাড়ি, সর্দারপাড়া, মন্ডলপাড়াসহ ১৫টি গ্রাম ভারতীয় সীমান্তবর্তী। বর্ষায় সীমান্ত নদ-নদীর পানি ও পাহাড়ি ঢল এসে জমে থাকে এই অঞ্চলে। এলজিইডির স্লুইস গেটগুলোর যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যাওয়ায় এগুলো এখন কার্যত পরিত্যক্ত। ফলে বর্ষায় উজানের পানি আটকে গিয়ে ফসলহানি ঘটে।

স্লুইস ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনোয়ার হোসেন দিপু বলেন, ‘স্লুইস দুটির কিছু যন্ত্রাংশ চুরি হলেও পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। তবে মূল সমস্যা হলো নয়নজলি দখল। সরকারি জায়গা দখলমুক্ত হলে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক হবে।

পঞ্চগড় এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান বলেন, পুরোনো স্লুইস গেটগুলো সক্ষমতা হারিয়েছে। নতুন স্লুইস নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

পঞ্চগড় সড়ক ও জনপদ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে গণনোটিশ ও প্রচার চালানো হচ্ছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চলছে।

জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন হলে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ সম্ভব, এতে উৎপাদন বাড়বে এবং কৃষকরা উপকৃত হবেন।