ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা চান শ্রমিকরা

- Update Time : ০৯:০৪:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
- / ১২ Time View
শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ত্রিশ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে বাম রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা। একইসঙ্গে তারা জানান, ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব আন্দোলনে শ্রমিকের অংশগ্রহণ ছিলো প্রথম সারিতে।
বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন পহেলা মে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১ মে) বিভিন্ন ব্যানারে বাম রাজনৈতিক দল ও সংগঠন পালন করলো মে দিবস বা শ্রমিক দিবস।
প্রতিবার বর্ণিল আয়োজনে মহান মে দিবস পালন হলেও শ্রমিকের মুখ সেই মলিনই থেকে যায়। শোষণের মাপকাঠিতে চলে কর্মঘণ্টা। ১৩৯ বছরেও অপূরণই রয়ে গেছে কত শত দাবি। শ্রমিকদের মূল দাবি হলো, ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা করা।
১৮৮৬ সালের পহেলা মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করে। ওই থেকে শ্রমিক শ্রেণীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
দিবস আসে দিবস যায়, থেকে যায় শ্রমিকের দুঃখ-বঞ্চনা। মে দিবসের ধাক্কা বিশ্বের শ্রমিকদের সংহতি বাড়িয়েছে, প্রেরণা জুগিয়েছে শোষণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। কিন্তু তাদের ন্যূনতম মজুরি, নিরাপদ কর্মক্ষেত্র অধিকার যেমন এখনও রয়েছে পিছিয়ে তেমনি পিছিয়ে রয়েছে অনেক কাজের সামাজিক স্বীকৃতি।
এমন বাস্তবতার মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মে দিবস ঘিরে রাজধানীর মতিঝিল, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা শ্রেণি পেশার শ্রমিকরা র্যালি নিয়ে জড়ো হন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা করা, বয়স্ক শ্রমিকদের ভাতার আওতায় আনাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন তারা।
আজ সকাল থেকে গান, কবিতা, স্লোগান আর নানা দাবি আদায়ের বক্তব্য উত্তাল হয় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ। দলমত নির্বিশেষ মিলেমিশে একাকার হয় বাম রাজনৈতিক দলের মে দিবসের আয়োজনে। ক্ষণে ক্ষণে, দল বেঁধে মুষ্টিবদ্ধ হাতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগানে স্লোগানে উচ্ছ্বাস প্রকাশ শ্রমিকরা।
মে দিবসের সমাবেশে এসে শ্রমিকরা তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। তারা বলেন, ন্যূনতম বেতন ত্রিশ হাজার টাকা ও আট ঘণ্টা শ্রম,অতিরিক্ত সময়ের পারিশ্রমিক, নিয়মিত বেতন ও সকল সুযোগ সুবিধায় বৈষম্যের বিলোপ হোক।
একই সাথে বিভিন্ন ব্যানারের বাম দলের নেতারা বলেন, ছাত্র জনতার জুলাই অভ্যুত্থানের পর এখনো শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়নি, একই সাথে শ্রমিকরা নানা ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলেন নেতারা।
কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করার দাবির সঙ্গে তাদের চাওয়া শ্রম আইনের কঠোর বাস্তবায়ন। মালিকদের বিরুদ্ধ কথা বলার স্বাধীনতা চান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা।
এক নারী শ্রমিক বলেন, ঈদের ছুটি নিয়ে বঞ্চিত হচ্ছি। পাঁচ দিনের জায়গায় তিন দিন ছুটি হয়। এক দেশে দুই আইন মানি না।
এদিকে, রাজধানীর সায়েদাবাদে স্লোগান আর বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দিবস উদযাপনে সড়কে নামেন পরিবহন খাতের শ্রমিকরা। দাবি জানান, প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার।
মিছিলে অংশ নেয়া এক শ্রমিক নেতা বলেন, বেতন-ভাতা তিন চার মাস আটকে রাখা হয়। আমরা চাই, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করা হয়।
আরেক নারী শ্রমিক নেতা বলেন, ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। যে ৯ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দেয়া হয়েছে, সেটা কোনো কারখানায় কার্যকর করা হয়নি।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষের চাপিয়ে দেয়া বাড়তি ট্রিপের কারণেই অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা ঘটছে।
মে দিবসের আয়োজনে ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলের আগ্রাসন ও গণহত্যা বন্ধের দাবিতে পতাকায় সরব ছিলো শ্রমিকের মিছিল।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়