ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
১৬ বছর পর আবার ফিরছে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : রিজভী ভারতে বাংলা বললেই ‘বাংলাদেশি ট্যাগ’ দিয়ে গ্রেপ্তার, তৃণমূলের বিক্ষোভ গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে আ.লীগ গোপালগঞ্জে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়নি : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভালো ভূমিকা পালন করেছে: আসিফ মাহমুদ কুবিতে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ১২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার গোপালগঞ্জের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্যবসায়ী হত্যায় এক পরিবারের ৯ জনসহ ১৩ জনের যাবজ্জীবন গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা পরিকল্পিত : বিএনপি

‘নো টিচার, নো ক্লাস, নো এক্সাম’

সাজিদুর রহমান, কুবি
  • Update Time : ০৪:২৪:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
  • / ১৩৫ Time View

 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফার্মেসী বিভাগে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষক সংকটে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। বিভাগের আটটি চলমান ব্যাচের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র পাঁচজন শিক্ষক। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এ পরিস্থিতিতে অতিদ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা

এই এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন এবং তালা ঝুলিয়েছেন শ্রেনিকক্ষগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুর একটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিভাগের সকল শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ফার্মেসী বিভাগ থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন এবং শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বিক্ষোভ মিছিলে ‘শিক্ষক নাই, শিক্ষক নাই, ফার্মেসিতে শিক্ষক নাই’, ‘শিক্ষক চাই, শিক্ষক চাই, ফার্মেসিতে শিক্ষক চাই’, ‘এক দফা এক দাবি, ফার্মেসিতে শিক্ষক চাই’, ‘নো টিচার, নো ক্লাস’, ‘দিক্ষার দিক্ষার, প্রশাসন দিক্ষার’- শীর্ষক স্লোগান দেন।

এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকটে ভুগছি আমরা। বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। ফলে বাধ্য হয়েই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পূরণ না হবে, আমরা ক্লাসে ফিরবো না।’

শ্রেনিকক্ষে তালা মারছে শিক্ষার্থী

বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত হিমু বলেন, ‘শিক্ষা হচ্ছে আমাদের অধিকার। আর আমরা এমন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি, যেখানে সেই শিক্ষা দেওয়ার জন্য শিক্ষকই নেই। শিক্ষক সংকট নিরসনে আমাদেরকেই প্রশাসনের কাছে আন্দোলন করতে হচ্ছে—এটা প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, স্মারকলিপি দিয়েছি, মানববন্ধন করেছি, কিন্তু কোনো কার্যকর সমাধান পাইনি। গতকাল আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছি, আজ ক্লাসরুমে তালা দিয়েছি। যদি অতিদ্রুত বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো। আমরা প্রয়োজনে অন্য কোনো বিভাগে ক্লাস নিতে দেবো না এবং এর দায়ভার সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনকে নিতে হবে। এমনকি প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবনেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে দ্রুত ও সন্তোষজনক সমাধান চাই।’

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ভূঁইয়া বলেন, ‘ফার্মেসী কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ০১ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু আমাদের বিভাগে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন—এর থেকে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে আমরা প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবনেও তালা ঝুলিয়ে দেবো। আর যদি আমাদের ভিসি স্যার বলেন—তিনি পারেন না, তাহলে আমরা প্রয়োজনে ‘লং মার্চ টু ইউজিসি’ করবো।’

Please Share This Post in Your Social Media

‘নো টিচার, নো ক্লাস, নো এক্সাম’

সাজিদুর রহমান, কুবি
Update Time : ০৪:২৪:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফার্মেসী বিভাগে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষক সংকটে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। বিভাগের আটটি চলমান ব্যাচের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন মাত্র পাঁচজন শিক্ষক। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এ পরিস্থিতিতে অতিদ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা

এই এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন এবং তালা ঝুলিয়েছেন শ্রেনিকক্ষগুলোতে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুর একটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিভাগের সকল শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ফার্মেসী বিভাগ থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন এবং শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বিক্ষোভ মিছিলে ‘শিক্ষক নাই, শিক্ষক নাই, ফার্মেসিতে শিক্ষক নাই’, ‘শিক্ষক চাই, শিক্ষক চাই, ফার্মেসিতে শিক্ষক চাই’, ‘এক দফা এক দাবি, ফার্মেসিতে শিক্ষক চাই’, ‘নো টিচার, নো ক্লাস’, ‘দিক্ষার দিক্ষার, প্রশাসন দিক্ষার’- শীর্ষক স্লোগান দেন।

এর আগে বুধবার (১৬ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকটে ভুগছি আমরা। বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। ফলে বাধ্য হয়েই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পূরণ না হবে, আমরা ক্লাসে ফিরবো না।’

শ্রেনিকক্ষে তালা মারছে শিক্ষার্থী

বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত হিমু বলেন, ‘শিক্ষা হচ্ছে আমাদের অধিকার। আর আমরা এমন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি, যেখানে সেই শিক্ষা দেওয়ার জন্য শিক্ষকই নেই। শিক্ষক সংকট নিরসনে আমাদেরকেই প্রশাসনের কাছে আন্দোলন করতে হচ্ছে—এটা প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, স্মারকলিপি দিয়েছি, মানববন্ধন করেছি, কিন্তু কোনো কার্যকর সমাধান পাইনি। গতকাল আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছি, আজ ক্লাসরুমে তালা দিয়েছি। যদি অতিদ্রুত বিভাগে নতুন শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো। আমরা প্রয়োজনে অন্য কোনো বিভাগে ক্লাস নিতে দেবো না এবং এর দায়ভার সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনকে নিতে হবে। এমনকি প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবনেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে দ্রুত ও সন্তোষজনক সমাধান চাই।’

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ভূঁইয়া বলেন, ‘ফার্মেসী কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ০১ জন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু আমাদের বিভাগে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন—এর থেকে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে আমরা প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবনেও তালা ঝুলিয়ে দেবো। আর যদি আমাদের ভিসি স্যার বলেন—তিনি পারেন না, তাহলে আমরা প্রয়োজনে ‘লং মার্চ টু ইউজিসি’ করবো।’