আলো ছড়ানো এক দীপ্ত নাম
নীলফামারী সরকারি কলেজে নুরুল করিম স্যারের বিদায়

- Update Time : ০৫:৫৫:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / ১৬ Time View
১৪ বছরের শিক্ষকতা জীবনের এক অনন্য অধ্যায় শেষ করলেন নীলফামারী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. নুরুল করিম। আজ ছিল তাঁর এই প্রতিষ্ঠানে কর্মদিবসের শেষ দিন। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি মানবিকতা, নেতৃত্ব, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনে তাঁর যে অসামান্য অবদান, তা স্মরণ করেই শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সহকর্মীদের চোখে আজ ছিল অশ্রু।
বদলিজনিত কারণে স্যার বর্তমানে “সরকারি কলেজসমূহে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্প”-এ গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) যোগদান করবেন। এটি নিঃসন্দেহে তাঁর জন্য একটি গৌরবময় অগ্রগতি হলেও, নীলফামারীর জন্য এটি এক অপূরণীয় শূন্যতা।
২০১১ সাল থেকে তিনি এই কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। শুধু ক্লাস নয়, বরং সমাজের সর্বস্তরে, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে, মানবিক সহায়তায় এবং খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক অনন্য পথপ্রদর্শক। তাঁর হাত ধরে গড়ে উঠেছে শত শত “পাবলিকিয়ান”, যারা আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আলো ছড়াচ্ছে।
স্যারের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা তাঁকে স্মরণ করেছেন এক অভিভাবক, আলোর দিশারি এবং ভালোবাসার মানুষ হিসেবে। কারও ভাষায়, “স্যার না থাকলে হয়তো ভালো ছাত্ররা ভালো জায়গায় পৌঁছাতো, কিন্তু কোনো খারাপ ছাত্র উঠে আসতো না।” কেউবা লিখেছেন, “তিনি ছিলেন নীলফামারীর সেই মালি, যিনি নিপুণ হাতে গড়ে তুলেছেন এক ফুলেল বাগান।”
বিদায়বেলায় শিক্ষার্থীরা আবেগঘন বার্তায় স্যারের অবদান স্মরণ করে সামাজিক মাধ্যমে বয়ে দিয়েছেন ভালোবাসার বন্যা। কেউ লিখেছেন, “স্যার, আপনি শুধু শিক্ষক নন, আপনি একজন যুগপ্রবর্তক। আপনি যেখানে যাবেন, সেখানেই আলো ছড়াবেন, কিন্তু নীলফামারী বঞ্চিত থাকবে সেই আলো থেকে।”
অনেকেই স্যারের অনুপস্থিতিতে নীলফামারীর শূন্যতা ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনার সংকটের আশঙ্কা করছেন। তবে তাঁরা এটিও বিশ্বাস করেন—যেখানে থাকুন না কেন, নুরুল করিম স্যার তাঁর কর্ম, আদর্শ ও মানবিকতার মাধ্যমে সকলের হৃদয়ে চিরজাগরুক থাকবেন।
সবার পক্ষ থেকে সম্মানিত এই শিক্ষককে কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা জানিয়ে বলা হয়েছে,
“বিদায় নয় স্যার, এটি নতুন পথের শুরু। আমরা আপনাকে আবারও ফিরে পেতে চাই নীলফামারীতে, আমাদের জীবনের আলো হয়ে।”