ঢাবি শিক্ষার্থীর অবস্থান
নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকার গঠন সহ ৪ দফা দাবি

- Update Time : ০৬:৫৯:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ২২২ Time View
ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল সহ চার দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাবির ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ বিশ্বাস এই অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
এসময়ে তিনি বাংলাদেশের ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি দলমত নির্বিশেষে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পক্ষে একতাবদ্ধ হয়ে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের বিরুদ্ধে সকলকে গণ-অবস্থানের আহ্বান জানান।
তার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।
অবস্থান কর্মসূচিতে উত্থাপন করা তার ৪ দফা দাবিগুলো হলো –
১. একদলীয় সরকারের অধীনে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে নির্দলীয় সরকার গঠন করতে হবে ও সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
২. জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।
৩. গুম, খুন, নির্যাতনের বিচার করতে হবে ও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে। সকল নাগরিকের নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন বন্ধ করতে হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
আকাশ বিশ্বাস বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনে বাংলাদেশের নাগরিকগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আবারো একই রকম একটি নির্বাচন সামনে হতে যাচ্ছে যেখানে বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনর্বার ভূলুণ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে এই নির্বাচনের প্রতি নাগরিকদের কোনো আস্থা নেই। তাই আমি এই নির্বাচনকে বর্জন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছি।
নিজেকে একজন বিক্ষুব্ধ নাগরিক ও ছাত্র হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বায়ান্নো বছর পার হলেও আমাদের রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। সংবিধানেই এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক ও এক দলীয় শাসন-কাঠামোর বীজ বপন করা আছে। তাই একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।
দেশে মানবাধিকারের বিপর্যয় হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত পনেরো বছরে বাংলাদেশের নাগরিকগণ অব্যাহতভাবে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার হচ্ছে, শিক্ষার্থীরা গেস্টরুমে নির্যাতিত হচ্ছে, শ্রমিকদের মজুরির আন্দোলনে গুলি চালানো হচ্ছে। সর্বোপরি বাংলাদেশে একটা মানবাধিকার বিপর্যয় চলছে। এ সকল ঘটনার বিচার করতে হবে, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দিতে হবে এবং নাগরিকদের মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সংকোচন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও তরুণদের বিরাজনীতিকরণ করা হয়েছে। ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
এই ঢাবি শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা এমন একটা রাষ্ট্র চাই যেখানে নাগরিকরা নির্ভয়ে কথা বলতে পারবে। তাই রাজনৈতিক পরিসর সংকোচনের চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হিস্যা ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়