নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : রিজভী

- Update Time : ০৯:২১:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / ৯ Time View
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আমরা টের পাচ্ছি, ভেতরে ভেতরে নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।’
রিজভী বলেন, কদিন ধরে দেখছি, কোনো কোনো দল ও ব্যক্তি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলছেন। আপনাদের এমন আচরণ দেশের জনগণ ভালো চোখে নেয়নি। বিএনপিসহ দেশের মানুষ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। দেশের জনগণ নিশ্চয়ই জানে, বিগত ছয়-সাত বছরে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমান কীভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিজয়কে নিশ্চিত করেছেন তারেক রহমান। তিনি এখন দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে সাহস আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে কৃষক দল। কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্র আবার ভোটারের পদধ্বনিতে মুখর হবে। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। জুলাই বিপ্লবের পর মানুষ ভোট কেন্দ্রের যাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতেই যে রক্ত, শহীদের আত্মদান, সেই ভোট পেছানোর ষড়যন্ত্র কেন? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোট পেছানোর কথা উঠছে কেন? এটা তো আজ গোটা জাতির প্রশ্ন। তাহলে নিশ্চয় ভেতরে ভেতরে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।’
রিজভী বলেন, আমরা বলেছি, সংস্কার চাই। যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, একটা নির্দিষ্ট সময় বলে দিন, বেশি প্রলম্বিত করবেন না। লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হলো, সেই বৈঠক থেকে একটা যুক্ত বিবৃতি এলো। এই বৈঠকের পরে দেশের মানুষ একটু স্বস্তি পেয়েছে, কিন্তু এই স্বস্তি আমার মনে হয় কেউ কেউ চাচ্ছেন না। তারপরই সারা দেশে শুরু হলো সংঘাত রক্তাক্ত পরিস্থিতি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নিন্দা জানিয়েছে। এটার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আজীবন বহিষ্কার করেছি। ঘটনার পরপর চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বিবৃতিসহ নিন্দা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, তারা যেখানেই থাকুক, যে অবস্থায় থাকুক। আর দলের নামে কেউ যদি চাঁদাবাজি করেছে, কেউ যদি অন্যায় করেছে, তাহলে সাংগঠনিক শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে। শাস্তিস্বরূপ কেউ বহিষ্কার হচ্ছেন, কারও পদ স্থগিত হচ্ছে অথবা আমরা নিজেরাই পুলিশকে বলছি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে অথবা নিজেরাও মামলা দিচ্ছে—এটাই তো তারেক রহমান। আর মিটফোর্ডের ঘটনায় কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের মাফিয়া গডফাদার আর শেখ হাসিনার রোষানলে পড়ে বেগম খালেদা জিয়া ছয়-সাত বছর ভয়ংকর নিপীড়নের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের মধ্যে যেখানে নিশ্বাস নেওয়া যায় না, সেই ঘরের মধ্যে তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখল শেখ হাসিনা। গোটা জাতি যার প্রতি সহানুভূতিশীল, অথচ তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নিপীড়িত নির্যাতিতের এক প্রতীক হচ্ছে তারেক রহমান। অথচ এখন দেখছি, তার বিরুদ্ধে মিছিল ও ফেসবুকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে আজেবাজে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলা হচ্ছে। খুলনায় বিএনপির একজন যুবককে গুলি করে তার পায়ের রগ কেটে দিল যারা, কক্সবাজারে বিএনপি কর্মী আব্দুর রহিমকে যারা হত্যা করলো তাদের নিয়ে কেউ কথা বলছে না।
রিজভি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। মিটফোর্ডের ঘটনায় জামায়াত সরকারকে কিছু বলল না, প্রশাসনকে কিছু বলন না। মিছিল করছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। যিনি ১৭-১৮ বছর লন্ডনে রয়েছেন। যিনি নিজেই শেখ হাসিনার নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। ‘যাকে (তারেক রহমান) ছাদের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে কোমর ভেঙে ফেলা হয়। তার চেয়ে এ দেশে নির্যাতিত আর কে বেশি!