নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না আওয়ামী লীগ: ইসি সানাউল্লাহ

- Update Time : ১১:২২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ২৪৩০ Time View
আদালত ঘোষিত ফেরারি আসামিরা কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি আরও জানিয়েছেন, কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে। তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাচন ভবনে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, আদালত কর্তৃক ঘোষিত ফেরারি আসামি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন, এমন বিধান আইনে যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এটিসহ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসংক্রান্ত আইন প্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) আরও বেশ কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের এ প্রস্তাব মঙ্গলবার আইন মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, ইসির প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয় ভোটিং করে পরে তা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হলে এরপর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইনে সংশোধনী যুক্ত হবে।
ফেরারি আসামিদের নির্বাচনে অযোগ্য করার বিধান সংযোজনের সুপারিশ করেছিল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। তবে তখন এই প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছিল ইসি। তারা বলেছিল, এমন বিধান অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, এটি নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন রয়েছে।
আগে দ্বিমত জানিয়ে এখন কেন এই প্রস্তাব ইসি গ্রহণ করল, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঐকমত্য মিশনের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় ইসি সন্তুষ্ট হয়েছে এবং মনে করেছে এমন বিধানটি রাখা ভালো হবে। তিনি বলেন, সামনে এটির অপব্যবহার হলে আবারও সংশোধন করা যাবে।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তালিকায় সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোটকেন্দ্র স্থাপন করবেন। এছাড়া আদালত কর্তৃক যারা ফেরারি হবেন, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। লাভজনক পদে যারা আছেন বলে গণ্য হবেন এবং যারা সরকারি ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ার আছে এমন প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তারা অংশ নিতে পারবেন না।
এছাড়া হলফনামায় তথ্য গোপন বা মিথ্যা তথ্য দিলে ইসি পরে ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং সেই ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদ হারাবেন। পাশাপাশি প্রার্থীর জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
ইসি বলেন, একক প্রার্থী থাকলে সেই আসনে ‘না’ ভোট থাকবে ব্যালটে। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন। ইভিএম সংক্রান্ত সব বিধান বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া মিডিয়ার ব্যক্তিরা ভোট গণনায় থাকতে পারবেন। পাশাপাশি নির্বাচনী পোস্টার বাতিল করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আচরণবিধি ভঙ্গ হয় তা করা যাবে না। এছাড়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন স্থগিত থাকবে ও প্রতীক সংরক্ষিত থাকবে, ভোট শব্দ কিছু স্থানে ছিল, এগুলো নির্বাচন করা হয়েছে।
এ প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, কোনো দলের কার্যক্রম স্থগিত থাকলে তাদের প্রতীকও স্থগিত থাকবে। তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু প্রতীক ছাড়া স্বতন্ত্র দাঁড়াতে পারবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে।
অর্থাৎ আওয়ামী লীগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে পারবে না। আওয়ামী লীগের নাম না নিলেও নিবন্ধন স্থগিত থাকা দলের বিষয়ে এভাবেই ইসির অবস্থান স্পষ্ট করলেন কমিশনার সানাউল্লাহ।