ঢাকা ০৭:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে জাককানইবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ “চব্বিশ-এক ফ্যাসিবাদের বিদায় ঘটিয়েছে, বাংলায় আরেক ফ্যাসিবাদ ফিরলে ছাত্রজনতা ঘরে বসে থাকবে না” নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজপথে শেকৃবি শিক্ষার্থীরা টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র নিহত: ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিল যুবসমাজ মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে জোর দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা রংপুর বিভাগের ১৩ বিদ্যালয়ে পাস করেনি কেউ প্রধান বিচারপতির সাথে কানাডার হাইকমিশনারের সাক্ষাত রংপুরে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় অপারেশন থিয়েটার সিলগালা: ১ লাখ টাকা জরিমানা ১১ জুলাই কুবিতে আসছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া সেই ইউএনওকে পীরগাছায় বদলি

নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজপথে শেকৃবি শিক্ষার্থীরা

অনিন্দ্য বিশ্বাস অর্ঘ্য, শেকৃবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০২:২৩:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • / ৪১ Time View

শুক্রবার রাতে রাজধানীর আগারগাঁও মোড়ে বিক্ষোভরত শেকৃবি শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড গেট থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে এবং পরে পাসপোর্ট অফিস হয়ে আগারগাঁও মোড় ঘুরে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।

মিছিলে শিক্ষার্থীদের “চাঁদাবাজদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না”, “আমার ভাই মরলো কেন, ইন্টারিম জবাব দে”, “মিটফোর্ডে খুন কেন, তারেক রহমান জবাব দে”, “বিএনপির অনেক গুণ, এক বছরে দেড়শ খুন”, “খুনিদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না”, “যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে মানুষ খুন” ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে ডাকা এই বিক্ষোভ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ শতাধিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখা যায়।

বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, “আপনারা জানেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার সন্ত্রাসের মাধ্যমে, মুজাহিদদের হত্যা করে তাদের লাশের ওপর নৃত্য করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার মসনদে বসেছিল। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিএনপি এখনও ক্ষমতায় না এসেই ইতোমধ্যে দেড় শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে।”

আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, “এমন বর্বরোচিত হত্যা আমরা অতীতেও আওয়ামী লীগের আমলে দেখেছি। বিশ্বজিৎকে মিডিয়ার সামনে এবং সাধারণ মানুষের চোখের সামনে হত্যা করা হয়েছিল। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল।”

তিনি বিএনপির উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের বলতে চাই, এমন বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড যদি বন্ধ না করেন, তবে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রতিহত করবে।”

এই হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপিকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেকৃবির আহ্বায়ক মো. আসাদুল্লাহ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট জবাব যুবদলকে দিতে হবে।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “এইসব ভিডিও ব্যবসা করলে চলবে না, দেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এসবের বিচার করতে হবে। আমরা এসবের সুনির্দিষ্ট সমাধান চাই। ইন্টারিম সরকারকে সুনির্দিষ্ট জবাব দিতে হবে।”

এ বিষয়ে এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা কোনো জায়গায় চাঁদাবাজি বা অত্যাচার করে ভাইরাল হলে কিংবা ঘটনাটি জাতীয় পর্যায়ে পৌঁছালে তখনই কেবল বিএনপি তাদের নামেমাত্র বহিষ্কার করে।”

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, “চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করা হলে বিএনপি থানা ঘেরাও করে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। কেউ যদি চাঁদাবাজি বা অত্যাচার করে, তা করে দলীয় পদের ক্ষমতার জোরেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখেছি, এসব ক্ষেত্রে বিএনপি তাদের দলীয় কার্যক্রমে শক্ত অবস্থান নেয় না। যদি তারা চাঁদাবাজ ও অত্যাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ না করে, তাহলে সাধারণ মানুষ তারাও বিএনপিকে বর্জন করবে।”

Please Share This Post in Your Social Media

নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজপথে শেকৃবি শিক্ষার্থীরা

অনিন্দ্য বিশ্বাস অর্ঘ্য, শেকৃবি প্রতিনিধি
Update Time : ০২:২৩:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড গেট থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে এবং পরে পাসপোর্ট অফিস হয়ে আগারগাঁও মোড় ঘুরে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।

মিছিলে শিক্ষার্থীদের “চাঁদাবাজদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না”, “আমার ভাই মরলো কেন, ইন্টারিম জবাব দে”, “মিটফোর্ডে খুন কেন, তারেক রহমান জবাব দে”, “বিএনপির অনেক গুণ, এক বছরে দেড়শ খুন”, “খুনিদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না”, “যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে মানুষ খুন” ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে ডাকা এই বিক্ষোভ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ শতাধিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখা যায়।

বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, “আপনারা জানেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার সন্ত্রাসের মাধ্যমে, মুজাহিদদের হত্যা করে তাদের লাশের ওপর নৃত্য করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার মসনদে বসেছিল। আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিএনপি এখনও ক্ষমতায় না এসেই ইতোমধ্যে দেড় শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে।”

আওয়ামী লীগ আমলে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, “এমন বর্বরোচিত হত্যা আমরা অতীতেও আওয়ামী লীগের আমলে দেখেছি। বিশ্বজিৎকে মিডিয়ার সামনে এবং সাধারণ মানুষের চোখের সামনে হত্যা করা হয়েছিল। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল।”

তিনি বিএনপির উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের বলতে চাই, এমন বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড যদি বন্ধ না করেন, তবে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রতিহত করবে।”

এই হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপিকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেকৃবির আহ্বায়ক মো. আসাদুল্লাহ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট জবাব যুবদলকে দিতে হবে।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “এইসব ভিডিও ব্যবসা করলে চলবে না, দেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এসবের বিচার করতে হবে। আমরা এসবের সুনির্দিষ্ট সমাধান চাই। ইন্টারিম সরকারকে সুনির্দিষ্ট জবাব দিতে হবে।”

এ বিষয়ে এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. তৌহিদ আহমেদ আশিক বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা কোনো জায়গায় চাঁদাবাজি বা অত্যাচার করে ভাইরাল হলে কিংবা ঘটনাটি জাতীয় পর্যায়ে পৌঁছালে তখনই কেবল বিএনপি তাদের নামেমাত্র বহিষ্কার করে।”

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, “চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করা হলে বিএনপি থানা ঘেরাও করে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। কেউ যদি চাঁদাবাজি বা অত্যাচার করে, তা করে দলীয় পদের ক্ষমতার জোরেই।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখেছি, এসব ক্ষেত্রে বিএনপি তাদের দলীয় কার্যক্রমে শক্ত অবস্থান নেয় না। যদি তারা চাঁদাবাজ ও অত্যাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ না করে, তাহলে সাধারণ মানুষ তারাও বিএনপিকে বর্জন করবে।”