ঢাকা ০৭:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাটোর-১ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল, তৃণমূলে বাড়ছে হতাশা

নাটোর প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:২০:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১৫ Time View

মনোনয়ন নিয়ে বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল।

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করেছে। একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন দৌড়ে অংশগ্রহণে দলটির তৃণমূল পর্যায়ে চরম হতাশা ও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। একসময় বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনটি এবারও হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এপর্যন্ত নাটোর-১ আসনে বিএনপিসহ মোট ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুল। এছাড়া মনোনয়ন ফরম তুলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু এবং লালপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও নাটোর জেলা বিএনপি’র সদস্য ডা. মোহাম্মদ ইয়াসির আরশাদ রাজন। লালপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খেলাফত মজলিসের মো. আজাবুল হক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মো. আনছার আলী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মোটরচালক দলের বাবু হোসেন এবং ইসলামী আন্দোলনের মো. আব্দুল্লাহিল বাকী ।

বিশেষ করে ২৪ ডিসেম্বর বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুলের বিপরীতে তারই আপন ভাই ও সাবেক উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. ইয়াসিন আরশাদ রাজনের মনোনয়ন সংগ্রহ স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা এডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপুর প্রার্থিতা মনোনয়ন প্রতিযোগিতাকে আরও জটিল করে তুলেছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একের পর এক প্রার্থীর আগমনে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন, এই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা দলীয় ঐক্যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে এবং নির্বাচনী মাঠে বিএনপির ভোটব্যাংক বিভক্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

এদিকে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভক্তির সুযোগ নিতে মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। একক প্রার্থী হিসেবে সুসংগঠিত কর্মীবাহিনী ও ধারাবাহিক মাঠপর্যায়ের তৎপরতার কারণে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তাকে নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির ভেতরের প্রতিযোগিতা যত দীর্ঘ হবে, ততই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সুবিধা নিতে পারবে। বিশেষ করে দলীয় ঐক্য ও একক প্রার্থিতা যেকোনো নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে—যা এই আসনে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।

নাটোর-১ আসনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিমাংসার ওপর। তবে মাঠের বাস্তবতা ও বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ বিবেচনায় নিলে, নির্বাচন যত এগোবে লড়াই ততই একপাক্ষিক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট মহল।

Please Share This Post in Your Social Media

নাটোর-১ আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল, তৃণমূলে বাড়ছে হতাশা

নাটোর প্রতিনিধি
Update Time : ০৫:২০:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করেছে। একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন দৌড়ে অংশগ্রহণে দলটির তৃণমূল পর্যায়ে চরম হতাশা ও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। একসময় বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনটি এবারও হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এপর্যন্ত নাটোর-১ আসনে বিএনপিসহ মোট ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুল। এছাড়া মনোনয়ন ফরম তুলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু এবং লালপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও নাটোর জেলা বিএনপি’র সদস্য ডা. মোহাম্মদ ইয়াসির আরশাদ রাজন। লালপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খেলাফত মজলিসের মো. আজাবুল হক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মো. আনছার আলী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মোটরচালক দলের বাবু হোসেন এবং ইসলামী আন্দোলনের মো. আব্দুল্লাহিল বাকী ।

বিশেষ করে ২৪ ডিসেম্বর বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুলের বিপরীতে তারই আপন ভাই ও সাবেক উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. ইয়াসিন আরশাদ রাজনের মনোনয়ন সংগ্রহ স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা এডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপুর প্রার্থিতা মনোনয়ন প্রতিযোগিতাকে আরও জটিল করে তুলেছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একের পর এক প্রার্থীর আগমনে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন, এই বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা দলীয় ঐক্যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে এবং নির্বাচনী মাঠে বিএনপির ভোটব্যাংক বিভক্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

এদিকে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভক্তির সুযোগ নিতে মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। একক প্রার্থী হিসেবে সুসংগঠিত কর্মীবাহিনী ও ধারাবাহিক মাঠপর্যায়ের তৎপরতার কারণে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তাকে নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির ভেতরের প্রতিযোগিতা যত দীর্ঘ হবে, ততই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সুবিধা নিতে পারবে। বিশেষ করে দলীয় ঐক্য ও একক প্রার্থিতা যেকোনো নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে—যা এই আসনে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।

নাটোর-১ আসনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিমাংসার ওপর। তবে মাঠের বাস্তবতা ও বর্তমান রাজনৈতিক সমীকরণ বিবেচনায় নিলে, নির্বাচন যত এগোবে লড়াই ততই একপাক্ষিক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট মহল।