নাটকীয় ম্যাচে ৫-৪ গোলে জিতল ম্যানচেস্টার সিটি
- Update Time : ০৩:৩০:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ২২ Time View
দারুণ নৈপুণ্যে অপেক্ষার ইতি টানলেন আর্লিং হলান্ড, শত গোলের মাইলফলকে পা রেখে গড়লেন রেকর্ড। তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার পর, কোনোমতে একটি শোধ করল ফুলহ্যাম। বিরতির পর প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে আরও দুই গোল করল ম্যানচেস্টার সিটি। চার গোলে পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে এরপর ফুলহ্যাম যেভাবে পাল্টা জবাব দিল, অসাধারণ।
শেষ পর্যন্ত যদিও ফেভারিটদের আটকাতে পারেনি তারা। প্রতিপক্ষের মাঠে গতকাল মঙ্গলবার রাতে দ্বিতীয়ার্ধের নাটকীয়তায় ভরা লড়াই শেষে ৫-৪ গোলে জিতেছে পেপ গুয়ার্দিওলার দল।
প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটিতে হলান্ডের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান বাড়ান টিয়ানি রেইনডার্স। এরপর বিরতির আগে-পরে দুটি গোল করেন ফিল ফোডেন। তার জোড়া গোলের মাঝে প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে একটি গোল শোধ করেন এমিলি স্মিথ।
আত্মঘাতী গোলে আরও পিছিয়ে পড়ার পরই ফুলহ্যামের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। আলেক্স আইওবি দলের দ্বিতীয় গোল করার পর, কয়েক মিনিটের মধ্যে দুটি গোল করেন স্যামুয়েল। এরপরও ২০ মিনিটের মতো খেলা হয়, প্রবল চাপ তৈরি করে তারা। কোনোমতে সেই চাপ সামলে জয় নিশ্চিত করে সিটি।
পরিসংখ্যানেও ম্যাচের মোড় বদলানোর চিত্র পরিষ্কার। প্রথমার্ধে আটটি শট নিয়ে তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারা সিটি দ্বিতীয়ার্ধে চার শট নিয়ে কেবল একটি লক্ষ্যে রাখতে পারে। আর প্রথমার্ধে কেবল তিনটি শট নেওয়া ফুলহ্যাম বিরতির পর নেয় আরও ৯টি শট, তাদের মোট ৬টি শট লক্ষ্যে ছিল।
১৪ ম্যাচে ৯ জয় ও ১ ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে সিটি। তাদের চেয়ে ২ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে আর্সেনাল, একটি ম্যাচ অবশ্য কম খেলেছে তারা। তৃতীয় স্থানে চেলসির পয়েন্ট ২৪, তারাও খেলেছে ১৩ ম্যাচ।
প্রিমিয়ার লিগের শত গোলের মাইলফলক ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই ছুঁতে পারতেন হলান্ড। প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের মাঝ থেকে দারুণ পাস বাড়ান ফিল ফোডেন, বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সিটির গোলমেশিন। কিন্তু দুর্ভাগ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়, বল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলেও পোস্টে বাধা পায়।
লিগে দুই ম্যাচের গোল খরা কাটিয়ে এবার আর অপেক্ষা দীর্ঘ হলো না তার। সপ্তদশ মিনিটে বাঁ দিক থেকে জেরেমি ডোকুর পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে, প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শটে দলকে এগিয়ে নেন তিনি।
প্রিমিয়ার লিগে ১১১ ম্যাচ খেলে ১০০ গোল করলেন নরওয়ের তারকা। এতদিন রেকর্ডটি ছিল ইংলিশ গ্রেট অ্যালান শিয়েরারের। লিগে দুই ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিন ম্যাচ পর জালের দেখা পেলেন হলান্ড। এবারের লিগে ১৪ ম্যাচে তার গোল হলো ১৫টি।
দ্বিতীয় গোলেও জড়িয়ে হলান্ডের নাম। প্রতিপক্ষের একাধিক খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে দারুণ থ্রু পাস বাড়ান তিনি, আর ডি-বক্সে বল ধরেই নিখুঁত চিপ শটে গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ডাচ মিডফিল্ডার রেইনডার্স। আর ৪৪তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে ব্যবধান আরও বাড়ান ফোডেন।
যোগ করা সময়ে এমিলি স্মিথের দারুণ হেডে ব্যবধান একটু কমিয়ে, লড়াই জমিয়ে তোলার আভাস দিয়ে বিরতিতে যায় ফুলহ্যাম।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই অবশ্য ফের ব্যবধান বাড়ায় সিটি। সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে ব্যাকহিলের আলতো টোকায় ডান দিকে ঠেলে দেন হলান্ড, আর কোনাকুনি শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ফোডেন।
গত শনিবার লিডস ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে নাটকীয় জয়ের ম্যাচেও জোড়া গোল করেছিলেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।
খানিক পর তিন মিনিটের মধ্যে দুই পাশেই জালে বল জড়ায়। ৫৪তম মিনিটে ডোকুর জোরাল শটে ফুলহ্যামের মিডফিল্ডার স্যান্ডা বার্গার গায়ে লেগে দূরের পোস্ট দিয়ে বল ঠিকানা খুঁজে পায়। এরপর পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শটে ফুলহ্যামের দ্বিতীয় গোলটি করেন আলেক্স আইওবি।
৭২তম মিনিটে ব্যবধান আরও কমিয়ে লড়াইয়ে নতুন করে প্রাণ ফেরান স্যামুয়েল। প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে আসা বল পেয়ে বুলেট গতির শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন নাইজেরিয়ার মিডফিল্ডার।
সম্ভাব্য দুটি অফসাইড দীর্ঘ প্রায় তিন মিনিট সময় নিয়ে যাচাই করে গোলের সিদ্ধান্ত দেয় ভিএআর। এরপর খেলা পুনরায় শুরু হতেই আবার সিটির জালে বল! প্রতিপক্ষের কর্নারে এক হাত দিয়ে বল ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেন জানলুইজি দোন্নারুম্মা; কিন্তু পারেননি তিনি। ফাঁকায় বল পেয়ে জোরাল কোনাকুনি শটে স্কোরলাইন ৫-৪ করেন স্যামুয়েল।
আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। শেষ দিকে প্রবল চাপ তৈরি করে দারুণ কয়েকটি সুযোগও তৈরি করে তারা। দৃঢ়তার সঙ্গেই সেই চাপ সামলান দেয় গুয়ার্দিওলার শিষ্যরা।



































































































