ঢাকা ১০:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ভারতের গোয়া

নাইট ক্লাবে আগুনে পর্যটকসহ ২৩ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৩:০৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ২৪ Time View

গোয়ায় নাইট ক্লাবে আগুন

ভারতের গোয়ার উপকূলীয় এলাকার জনপ্রিয় এক নাইটক্লাবে আগুন লেগে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। গোয়ার উত্তরে আরপোরা এলাকার ওই ক্লাবে যারা মারা গেছেন, তাদের বেশিরভাগ ক্লাবটির কর্মী। আর বাকিরা পর্যটক। খবর-ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

পুলিশ মনে করছে, ক্লাবটির রান্নাঘরে রাখা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকেই স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে এই অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সামাজিক মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে গোয়ার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘গভীর দুঃখজনক’ উল্লেখ করেছেন। গোয়া পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল অলোক কুমার বলেছেন, আগুন প্রধানত নীচতলায় ক্লাবের রান্নাঘরের আশেপাশেই সীমাবদ্ধ ছিল। মধ্যরাতে আগুনের এই ঘটনা ঘটে, এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে, বলেছেন তিনি।

অলোক কুমার বলেন, রান্নাঘরের আশেপাশেই বেশিরভাগ মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে নিহতদের বেশিরভাগ ওই ক্লাবেরই কর্মচারী বলে মনে করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে বলা হয়েছে গোয়ার উপকূলীয় একটি এলাকার খুবই জনপ্রিয় সৈকত সংলগ্ন বাগায় বার্চ বাই রোমিও লেন নামক ক্লাবে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি বলেছে, কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে আগুনে পুড়ে, আর অনেকের মৃত্যু হয়েছে দমবন্ধ হয়ে। দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে তখন ক্লাবের ভেতর ব্যাপক সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে রোববার ভোর পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত ছিল।

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রামদ সায়ন্ত সাংবাদিকদের বলেছেন, তিন জন আগুনে পুড়ে মারা গেছেন, আর বাকিরা মারা গেছেন দমবন্ধ হয়ে। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনা-চারজন পর্যটকও নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছেন তিনি। তবে, তাদের বয়স ও জাতীয়তা এখনো জানা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে, কোনও অবহেলা থাকলে তা দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করা হবে, বলেছেন তিনি। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং দু:খ প্রকাশ করেছেন।

আরব সাগরের তীরে গোয়া এক সময় পর্তুগিজ কলোনি ছিল। এর নাইট লাইফ, বালুময় সৈকত এবং রিসোর্টগুলোতে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক আসে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে ৫৫ লাখ পর্যটক গোয়ায় এসেছেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার এসেছে বিদেশ থেকে। ভারতের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে হায়দ্রাবাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে তিন তলা ভবনে আগুন লেগে ১৭ জন নিহত হয়েছিলো।

আবার চলতি মাসের শুরুতে কোলকাতার একটি হোটেলে আগুন লেগে ১৫ জন মারা যায়। গত বছর গুজরাতে একটি বিনোদন পার্কে দুর্ঘটনায় ২৪ জন মারা গিয়েছিলো। পরে দেখা যায় দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থাই সেখানে এতো মানুষের মৃত্যুর কারণ ছিল। ওদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সামাজিক মাধ্যমে তার পোস্টে আরও লিখেছেন: “পরিস্থিতি নিয়ে আমি ডঃ প্রামোদ সায়ন্তের সাথে কথা বলেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে রাজ্য সরকার”।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের প্রতি পরিবারকে দুই লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর আহতরা পাবেন ৫০ হাজার রুপি করে। ওদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার খবরে আরও বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও–ছবিতে দেখা গেছে আগুনের তীব্রতা কতটা ভয়াবহ।

অনেকেই দীর্ঘ সময় ক্লাবের ভিতরে আটকে ছিলেন, যাদের উদ্ধার করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায়। পত্রিকাটির খবর অনুযায়ী, দুর্ঘটনার সময় ক্লাবের ভেতর প্রচুর সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

Please Share This Post in Your Social Media

ভারতের গোয়া

নাইট ক্লাবে আগুনে পর্যটকসহ ২৩ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ০৩:০৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ভারতের গোয়ার উপকূলীয় এলাকার জনপ্রিয় এক নাইটক্লাবে আগুন লেগে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। গোয়ার উত্তরে আরপোরা এলাকার ওই ক্লাবে যারা মারা গেছেন, তাদের বেশিরভাগ ক্লাবটির কর্মী। আর বাকিরা পর্যটক। খবর-ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

পুলিশ মনে করছে, ক্লাবটির রান্নাঘরে রাখা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকেই স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে এই অগ্নিকাণ্ডের সূচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সামাজিক মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে গোয়ার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ‘গভীর দুঃখজনক’ উল্লেখ করেছেন। গোয়া পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল অলোক কুমার বলেছেন, আগুন প্রধানত নীচতলায় ক্লাবের রান্নাঘরের আশেপাশেই সীমাবদ্ধ ছিল। মধ্যরাতে আগুনের এই ঘটনা ঘটে, এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে, বলেছেন তিনি।

অলোক কুমার বলেন, রান্নাঘরের আশেপাশেই বেশিরভাগ মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে নিহতদের বেশিরভাগ ওই ক্লাবেরই কর্মচারী বলে মনে করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক খবরে বলা হয়েছে গোয়ার উপকূলীয় একটি এলাকার খুবই জনপ্রিয় সৈকত সংলগ্ন বাগায় বার্চ বাই রোমিও লেন নামক ক্লাবে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি বলেছে, কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে আগুনে পুড়ে, আর অনেকের মৃত্যু হয়েছে দমবন্ধ হয়ে। দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে তখন ক্লাবের ভেতর ব্যাপক সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে রোববার ভোর পর্যন্ত উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত ছিল।

গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রামদ সায়ন্ত সাংবাদিকদের বলেছেন, তিন জন আগুনে পুড়ে মারা গেছেন, আর বাকিরা মারা গেছেন দমবন্ধ হয়ে। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনা-চারজন পর্যটকও নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছেন তিনি। তবে, তাদের বয়স ও জাতীয়তা এখনো জানা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে, কোনও অবহেলা থাকলে তা দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করা হবে, বলেছেন তিনি। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং দু:খ প্রকাশ করেছেন।

আরব সাগরের তীরে গোয়া এক সময় পর্তুগিজ কলোনি ছিল। এর নাইট লাইফ, বালুময় সৈকত এবং রিসোর্টগুলোতে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক আসে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে ৫৫ লাখ পর্যটক গোয়ায় এসেছেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার এসেছে বিদেশ থেকে। ভারতের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে হায়দ্রাবাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে তিন তলা ভবনে আগুন লেগে ১৭ জন নিহত হয়েছিলো।

আবার চলতি মাসের শুরুতে কোলকাতার একটি হোটেলে আগুন লেগে ১৫ জন মারা যায়। গত বছর গুজরাতে একটি বিনোদন পার্কে দুর্ঘটনায় ২৪ জন মারা গিয়েছিলো। পরে দেখা যায় দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থাই সেখানে এতো মানুষের মৃত্যুর কারণ ছিল। ওদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সামাজিক মাধ্যমে তার পোস্টে আরও লিখেছেন: “পরিস্থিতি নিয়ে আমি ডঃ প্রামোদ সায়ন্তের সাথে কথা বলেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে রাজ্য সরকার”।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের প্রতি পরিবারকে দুই লাখ রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর আহতরা পাবেন ৫০ হাজার রুপি করে। ওদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার খবরে আরও বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও–ছবিতে দেখা গেছে আগুনের তীব্রতা কতটা ভয়াবহ।

অনেকেই দীর্ঘ সময় ক্লাবের ভিতরে আটকে ছিলেন, যাদের উদ্ধার করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যায়। পত্রিকাটির খবর অনুযায়ী, দুর্ঘটনার সময় ক্লাবের ভেতর প্রচুর সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।