ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত শুরু

নরসিংদী জেলা পরিষদের সিইও’র বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় 

Reporter Name
  • Update Time : ০১:১৪:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
  • / ৪২৮ Time View

মো.শফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) র বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় দৈনিক নওরোজ সহ গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরিফুল ইসলামের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার(৩মে) সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত নরসিংদী সার্কিট হাউজে তদন্ত কাজ অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় সরকার ঢাকা বিভাগের পরিচালক শিবির বিচিত্র বড়ুয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্টি কমিটির অন্য সদস্যরা হলো মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের পরিকল্পনা ও বাজেট অধিশাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃংখলা- ১ শাখার উপ সচিব ড. মোঃ নুরুল হক।

তদন্তের শুনানীকালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন ভুইয়া, সদ্য বদলীকৃত অভিযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, পরিষদের নির্বাচিত সদস্য বৃন্দ আর্থিক সহায়তা চেয়ে আবেদন করার পর যাদের নামে চেক ইস্যু হয়েছে এমন বয়োবৃদ্ধ অসহায় নারী পুরুষ এবং কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় তদন্ত কমিটি সকলের বক্তব্য শুনে হতবাক হয়ে যান। বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে স্বাক্ষর গ্রহণ করেন।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর হিসাব রক্ষক নোমান মিয়া বলেন, সিইও নির্দেশ দেন একাউন্ট পে চেক সিএ নুর এ নঈমকে প্রদানের জন্যে। তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পরবর্তীতে নুর এ নঈম মুরি চেকে সই করান। এরপর তাকে একাউন্ট পে এসব অসহায়দের চেক তিনি গ্রহণ করেন। এছাড়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্ত্রী সারা ইসলাম টেলিফোনে আর্থিক সহায়তার আরো এক পেকেটে চেক জেলা পরিষদের কর্মী শহীদের কাছে প্রদান করার নির্দেশ দেন। এসকল চেক পরবর্তীতে পুনরায় স্বাক্ষর করে একাউন্ট পে বাতিল করে বিয়ারার চেক বানিয়ে গরীব অসহায়দের না দিয়ে মুয়াজ্জেম নামে এক পরিছন্ন কর্মীর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে টাকা আত্মসাৎ করেন সিইও। এসময় তদন্ত কমিটির জেরার মুখে সিএ নুরে নঈম ও সিইও কোন সদউত্তর দিতে পারেননি। তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হাছান বলেন, আপনি আপনার নামের অর্থ জানেন। নুর এ নঈম বলেন, জান্নাতের আলো। তখন মাহাম্মদ কামরুল হাছান বলেন, এমন অন্যায় দুর্নীতি ও ঘুস গ্রহণ করলে আপনিতো জান্নাতে না গিয়ে দোজখে যাবেন । তখন হাসির রোল পরে সার্কিট হাউজে। জেলা পরিষদের অফিস সহকারী মনির হোসেন বলেন, সিইওর নির্দেশে প্যানেল চেয়ারম্যান মামুন সরকারের বিরুদ্ধে সদর থানায় মিথ্যা জিডি করেন। কর্মচারীর আরো অভিযোগ করেন কথায় কথায় সিইও তাদের মা-বাবাকে সহ গালাগাল করতো। এছাড়া তারা আরো অভিযোগ করেন গত দুই বছর ধরে সিইওর অন্যায় ও অনৈতিক কাজে সারা না দিলে রীতিমত তাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন হতো। পত্রিকায় যেসকল রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে তা তার অপকর্মের আংশিক অংশ মাত্র। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ বলেন এই সিই্ওর জন্য জেলা পরিষদের ভাবমূর্তী ও সম্মান নষ্ট হয়েছে। পত্রিকায় যেসব রিপোর্ট হয়েছে তার চেয়ে আরো অনেক বেশী অপকর্ম তিনি করেছেন। এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সুষ্ঠু বিচারও দাবী করেছেন তারা।

এসময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসব অস্বীকার করলে, তদন্তকারী কর্মকর্তা দমকের সুরে বলেন, তুমি থামো, তোমার বুঝা উচিৎ তুমি কোন অবস্থায় আছো। তোমার সাথে তোমার স্ত্রীর নামও এখানে জড়িয়ে গেছে। পরে প্রধান নির্বাহী তার লিখিত বক্তব্য তদন্ত কমিটির কাছে পেশ করেন। গনমাধ্যমকমীরা জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকার ঢাকা বিভাগের পরিচালক শিবির বিচিত্র বড়ুয়া বলেন, জেলা পরিষদের সিইওর বিরুদ্ধে দুনীতির বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট প্রদান করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত শুরু

নরসিংদী জেলা পরিষদের সিইও’র বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় 

Update Time : ০১:১৪:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩

মো.শফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) র বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় দৈনিক নওরোজ সহ গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরিফুল ইসলামের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার(৩মে) সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত নরসিংদী সার্কিট হাউজে তদন্ত কাজ অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় সরকার ঢাকা বিভাগের পরিচালক শিবির বিচিত্র বড়ুয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্টি কমিটির অন্য সদস্যরা হলো মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের পরিকল্পনা ও বাজেট অধিশাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃংখলা- ১ শাখার উপ সচিব ড. মোঃ নুরুল হক।

তদন্তের শুনানীকালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন ভুইয়া, সদ্য বদলীকৃত অভিযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, পরিষদের নির্বাচিত সদস্য বৃন্দ আর্থিক সহায়তা চেয়ে আবেদন করার পর যাদের নামে চেক ইস্যু হয়েছে এমন বয়োবৃদ্ধ অসহায় নারী পুরুষ এবং কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় তদন্ত কমিটি সকলের বক্তব্য শুনে হতবাক হয়ে যান। বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে স্বাক্ষর গ্রহণ করেন।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর হিসাব রক্ষক নোমান মিয়া বলেন, সিইও নির্দেশ দেন একাউন্ট পে চেক সিএ নুর এ নঈমকে প্রদানের জন্যে। তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পরবর্তীতে নুর এ নঈম মুরি চেকে সই করান। এরপর তাকে একাউন্ট পে এসব অসহায়দের চেক তিনি গ্রহণ করেন। এছাড়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্ত্রী সারা ইসলাম টেলিফোনে আর্থিক সহায়তার আরো এক পেকেটে চেক জেলা পরিষদের কর্মী শহীদের কাছে প্রদান করার নির্দেশ দেন। এসকল চেক পরবর্তীতে পুনরায় স্বাক্ষর করে একাউন্ট পে বাতিল করে বিয়ারার চেক বানিয়ে গরীব অসহায়দের না দিয়ে মুয়াজ্জেম নামে এক পরিছন্ন কর্মীর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে টাকা আত্মসাৎ করেন সিইও। এসময় তদন্ত কমিটির জেরার মুখে সিএ নুরে নঈম ও সিইও কোন সদউত্তর দিতে পারেননি। তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হাছান বলেন, আপনি আপনার নামের অর্থ জানেন। নুর এ নঈম বলেন, জান্নাতের আলো। তখন মাহাম্মদ কামরুল হাছান বলেন, এমন অন্যায় দুর্নীতি ও ঘুস গ্রহণ করলে আপনিতো জান্নাতে না গিয়ে দোজখে যাবেন । তখন হাসির রোল পরে সার্কিট হাউজে। জেলা পরিষদের অফিস সহকারী মনির হোসেন বলেন, সিইওর নির্দেশে প্যানেল চেয়ারম্যান মামুন সরকারের বিরুদ্ধে সদর থানায় মিথ্যা জিডি করেন। কর্মচারীর আরো অভিযোগ করেন কথায় কথায় সিইও তাদের মা-বাবাকে সহ গালাগাল করতো। এছাড়া তারা আরো অভিযোগ করেন গত দুই বছর ধরে সিইওর অন্যায় ও অনৈতিক কাজে সারা না দিলে রীতিমত তাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন হতো। পত্রিকায় যেসকল রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে তা তার অপকর্মের আংশিক অংশ মাত্র। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ বলেন এই সিই্ওর জন্য জেলা পরিষদের ভাবমূর্তী ও সম্মান নষ্ট হয়েছে। পত্রিকায় যেসব রিপোর্ট হয়েছে তার চেয়ে আরো অনেক বেশী অপকর্ম তিনি করেছেন। এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সুষ্ঠু বিচারও দাবী করেছেন তারা।

এসময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসব অস্বীকার করলে, তদন্তকারী কর্মকর্তা দমকের সুরে বলেন, তুমি থামো, তোমার বুঝা উচিৎ তুমি কোন অবস্থায় আছো। তোমার সাথে তোমার স্ত্রীর নামও এখানে জড়িয়ে গেছে। পরে প্রধান নির্বাহী তার লিখিত বক্তব্য তদন্ত কমিটির কাছে পেশ করেন। গনমাধ্যমকমীরা জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকার ঢাকা বিভাগের পরিচালক শিবির বিচিত্র বড়ুয়া বলেন, জেলা পরিষদের সিইওর বিরুদ্ধে দুনীতির বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট প্রদান করা হবে।