নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম শিক্ষক সংকট, ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম
- Update Time : ০৮:১২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
- / ২০৮ Time View
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) চরম শিক্ষক সংকটে শিক্ষার মান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অর্ধেকও বর্তমানে কর্মরত নেই; যাঁরা আছেন তাঁদের অনেকেই রয়েছেন শিক্ষাছুটিতে। ফলে পাঠদান, গবেষণা, থিসিসসহ একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫ সালের ডায়েরি অনুযায়ী, বর্তমানে (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ ছাড়াই) জাককানইবিতে শিক্ষার্থী রয়েছেন ১০ হাজার ৮০৯ জন। ইউজিসির আদর্শ অনুপাতে প্রতি ২০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক প্রয়োজন। সে হিসাবে এখানে সক্রিয় শিক্ষকের প্রয়োজন অন্তত ৫৪০ জন। বাস্তবে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২২০ জন শিক্ষক, যার মধ্যে অনেকে শিক্ষাছুটিতে থাকায় কার্যকর শিক্ষকসংখ্যা আরও কম।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চায় আউটকাম বেইজড এডুকেশন (ওবিই) পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে। এর জন্য প্রতিটি বিভাগে প্রয়োজন ৩০ থেকে ৩২ জন সক্রিয় শিক্ষক। এমনকি ওবিই অনুসরণ না করেও বর্তমান পাঠ্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজন পড়ে ১৫-১৬ জন শিক্ষকের। কিন্তু জাককানইবির বহু বিভাগেই শিক্ষক সংখ্যা তিন থেকে সাত জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কোথাও আবার প্রয়োজনীয় স্টাফও নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের মধ্যে সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, নৃবিজ্ঞান, মার্কেটিং বিভাগগুলোর প্রতিটিতে শিক্ষক মাত্র চারজন; ইতিহাস, পপুলেশন সায়েন্স ও পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষক সংখ্যা তিনজন; ফোকলোর বিভাগে ছয়জন শিক্ষক কর্মরত।
ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মহসিন হক বলেন, ‘আমাদের বিভাগে ৬ শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে ২ জন শিক্ষক ছুটিতে আছেন। বাকি শিক্ষকদের একজনকে একাধিক কোর্স নিতে হয়, ফলে ক্লাসের মান কমে যায়। অনেক সময় পর্যাপ্ত ক্লাস না করেই কোর্স শেষ করতে হয়। সেমিস্টার পরীক্ষা সময়মতো হয় না, সেশনজট তৈরি হচ্ছে। আমরা শুধু সার্টিফিকেট নিচ্ছি কিন্তু শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।’
ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, ‘একজন শিক্ষককে ক্লাস নেওয়া থেকে শুরু করে খাতা দেখা, প্রশ্ন তৈরি, গবেষণা, প্রশাসনিক মিটিংসহ নানামুখী দায়িত্ব পালন করতে হয়। পর্যাপ্ত শিক্ষক ও জনবল না থাকলে মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং ইউজিসির প্রস্তাবিত ওবিই বাস্তবায়ন দুটোই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক সংকট রয়েছে। স্বল্পসংখ্যক শিক্ষক দিয়ে শিক্ষার্থীদের গুণগত শিক্ষা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ইউজিসিতে ইতোমধ্যে বিষয়টি জানানো হয়েছে। সোমবারও তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা আমাদের সমস্যাকে গুরুত্ব সহকারে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’























































































































































































