দেশের রপ্তানি আয় কমছে, সামনে আরও আশঙ্কা
- Update Time : ১১:১৯:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
 - / ১৩৮ Time View
 
টানা তৃতীয় মাসের মতো অক্টোবরেও কমেছে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আয়। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এই হ্রাসের হার ৭.৪৩ শতাংশ। রপ্তানিকারকরা আশঙ্কা করছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক এবং ব্যাংক খাতের চলমান সংকটের কারণে সামনের মাসগুলোতেও রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যাবে না।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ ৩.৬৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ৪.১৩ বিলিয়ন ডলারের ছিল। তবে সেপ্টেম্বারের তুলনায় অক্টোবরে রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে।
রপ্তানিকারকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রিক পরিস্থিতির কারণে বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার কমিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত শুল্ক এবং ইউরোপের প্রধান বাজারে চীনের সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের অর্ডারও কমছে। এছাড়া সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর কারণে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খোলার জটিলতাও রপ্তানি কমার একটি কারণ।
ডিবিএল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এম.এ. রহিম ফিরোজ বলেন, “আমাদের অর্ডার আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। বড় ক্রেতারাও অর্ডার কমিয়েছে। এর ফলে নিটিং ও ডাইং ইউনিটের কাজও কমে গেছে। আগামী নির্বাচনের আগে অর্ডারের প্রবাহ বাড়ার সম্ভাবনা নেই।”
বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এর মধ্যে অর্ধেক পণ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে এবং একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে, যা মোট রপ্তানির প্রায় ২০ শতাংশ। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৮.৩৯ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহসভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী বলেন, “পোশাক রপ্তানি কমার তিনটি প্রধান কারণ—নির্বাচনকালীন অস্থিরতার আশঙ্কায় ক্রয়াদেশ কমে যাওয়া, যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্কের কারণে চীনা রপ্তানিকারকরা ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশ করার ফলে বাংলাদেশের অর্ডার কমে যাওয়া, এবং সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকের কারণে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খুলতে না পারা।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে ক্রেতারা ঝুঁকি নিতে চাইছে না, ফলে অর্ডার কমানো হয়েছে। চীনের রপ্তানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে ইউরোপীয় বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছে, যা আমাদের বাজারকে কিছুটা সঙ্কুচিত করছে।”
অন্যান্য রপ্তানিকারকও জানিয়েছেন, সরকারের ঘোষণার পর অনেক আমানতকারী সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন। এতে গার্মেন্টস মালিকরা ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি খুলতে পারছেন না। ব্যাংক পরিবর্তন করাও সহজ নয়।
ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে কেবল জুলাইয়েই রপ্তানি বেড়েছিল, পরের তিন মাসে টানা হ্রাস দেখা গেছে। তবে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট রপ্তানি আয় আগের বছরের তুলনায় ২.২২ শতাংশ বেড়েছে। এই চার মাসে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি হয়েছে ১৬.১৪ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৫.৭৯ বিলিয়ন ডলার।অক্টোবর মাসে কেবল তৈরি পোশাক নয়, হিমায়িত ও জীবিত মাছের রপ্তানি কমেছে ১৩ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য ১২ শতাংশ এবং কৃষিপণ্য ১০ শতাংশ। একই সময়ে রপ্তানি বেড়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ১৩ শতাংশ, পাট ও পাটজাত পণ্য ৭ শতাংশ এবং হোম টেক্সটাইল ১৪ শতাংশ।
Please Share This Post in Your Social Media
- 
                                        সর্বশেষ
 - 
                                        জনপ্রিয়
 
					
																			



































































































































































































