ঢাকা ০৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
কুবির সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য

দুর্নীতি: সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এক নীরব ঘাতক

লেখক, সংগ্রাহক ও গবেষকঃ হক মোঃ ইমদাদুল, জাপান
  • Update Time : ০৪:৪৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৪৪ Time View

বাংলাদেশ আজ এক সম্ভাবনাময় দেশ, যেখানে ১৭ কোটি মানুষের কঠোর পরিশ্রম, মেধা ও সৃজনশীলতার সমন্বয়ে উন্নয়নের অসীম সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের অগ্রযাত্রা প্রশংসনীয়। তবে, এই অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্নীতি।

দুর্নীতি এখন কেবল ব্যক্তিগত লাভের সীমাবদ্ধতায় নেই; এটি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়ছে এবং রাষ্ট্রীয় অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের কারণে দুর্নীতির ভয়াবহতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সরকারি-বেসরকারি প্রশাসন থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিচার বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোও এর কুফল থেকে মুক্ত নয়।

শিক্ষা খাতে দুর্নীতির ফলে মেধাবীদের যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না। মেধাহীনরা অর্থ ও ক্ষমতার জোরে উচ্চপদে আসীন হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি রোগীদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে, যেখানে প্রয়োজনীয় ঔষুধ, উন্নত চিকিৎসা ও হাসপাতালের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিচার বিভাগে ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আইনের প্রতি অনাস্থা তৈরি করছে।

এই দুর্নীতির করাল গ্রাস দেশের অর্থনৈতিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে, বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করছে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করছে। যদি এই সমস্যা সমাধান করা না যায়, তবে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কাজেই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা একান্ত জরুরি।

যে কোনো শারীরিক ব্যাধির চিকিৎসা রয়েছে, কিন্তু দুর্নীতির কোনো চিকিৎসা বা ঔষুধ নেই। এটি এমন এক ভয়ংকর ব্যাধি, যা সমাজকে ভেতর থেকে নিঃশেষ করে ফেলে, অনেকটা ক্যানসারের মতো। একবার সংক্রমিত হলে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় না। এটি বাংলাদেশের জাতিকে নিঃশেষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একে প্রতিহত করতে প্রয়োজন সততা, সম্মিলিত প্রতিরোধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান।

দেশ, জাতি বা সমাজ কারো একার নয়। সুতরাং, একে দূষিত বা দুর্বল করার অধিকার কারো নেই।

দুর্নীতির বহুমাত্রিক প্রভাব

দুর্নীতির প্রভাব সমাজের প্রতিটি স্তরে দৃশ্যমান। এটি শুধু ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়।

১. অর্থনৈতিক ক্ষতি ও প্রবৃদ্ধির অন্তরায়

দুর্নীতির ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ঘটে, বৈদেশিক বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয় এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। সরকারি প্রকল্প ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে দুর্নীতি থাকায় বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার হয় না। ফলে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।

বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান দুর্নীতির কবলে পড়ে যথাযথভাবে ব্যয়িত না হওয়ায় জনগণের প্রত্যাশিত উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয় না। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজের কারণে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারান, যা ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বড় ধরনের হুমকি।

২. সামাজিক বৈষম্য ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুর্দশা

দুর্নীতির কারণে সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যাহত হয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা শুধু ক্ষমতাবান ও ধনী শ্রেণির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়, যেখানে সাধারণ ও দরিদ্র জনগণ মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত থাকে।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতেও দুর্নীতির প্রভাব সুস্পষ্ট। সরকারি বিদ্যালয় ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতির কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সেগুলোর সঠিক ব্যবহার করতে পারে না। স্বাস্থ্যখাতে ওষুধ, চিকিৎসা উপকরণ ও সেবার গুণগত মান নষ্ট হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে ঘুষ, ফি নিয়ে অনিয়ম ও প্রশ্নফাঁসের মতো সমস্যা শিক্ষার মান কমিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে সমাজে একটি অদক্ষ ও অনৈতিক প্রজন্ম গড়ে উঠছে, যারা ভবিষ্যতে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারবে না।

৩. প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনা

প্রশাসনিক খাতে দুর্নীতির ফলে সরকারি কাজের গতি মন্থর হয়ে যায়। সরকারি দপ্তরগুলোতে ঘুষ ও স্বজনপ্রীতি সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়িয়ে দেয়।

পাসপোর্ট, জমির কাগজপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, নাগরিকত্ব সনদসহ নানা সরকারি সেবা পেতে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেও যদি ঘুষ না দেওয়া হয়, তবে তাদের কাজ আটকে রাখা হয় বা অযথা জটিলতা সৃষ্টি করা হয়। ফলে জনগণের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা কমে যায় এবং অনেকে বিকল্প অবৈধ পথ খোঁজার চেষ্টা করে।

৪. নৈতিক অবক্ষয় ও মূল্যবোধের সংকট

একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজে সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও নৈতিকতার চর্চা কমে যায়। যখন উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকে, তখন সমাজের সাধারণ জনগণও স্বাভাবিকভাবে এটি গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরে নেয়।

শিক্ষক, প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দুর্নীতি সমাজের তরুণ প্রজন্মের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তরুণরা তখন মনে করে, সৎভাবে কিছু করা সম্ভব নয় এবং সাফল্যের একমাত্র উপায় হলো অনৈতিক পথ বেছে নেওয়া। এর ফলে ভবিষ্যৎ সমাজে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়।

বাংলাদেশে দুর্নীতির ১১৫ প্রকার: প্রধান ধরনসমূহ
এছাড়াও এমন বহু ধরনের দুর্নীতি রয়েছে, যা প্রকাশ করা কঠিন। সমাজের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি পদক্ষেপে দুর্নীতির ছাপ স্পষ্টভাবে বিদ্যমান।

১. প্রশাসনিক দুর্নীতি

সরকারি দফতরে ঘুষ ও অনিয়ম।
ফাইল অনুমোদনের জন্য ঘুষ দাবি।
সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার।
চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে ঘুষ গ্রহণ।
২. রাজনৈতিক দুর্নীতি

নির্বাচনে জাল ভোট ও ভোট কেনাবেচা।
দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি।
সরকারি তহবিলের অপব্যবহার।
টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জন।
৩. পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্নীতি:

মামলা পরিচালনায় ঘুষ গ্রহণ ও প্রভাবিত করা।
অপরাধীদের সাথে আঁতাত করে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়া।
নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানি করে অর্থ আদায়।
বিচার প্রক্রিয়ায় অনৈতিক প্রভাব খাটানো।
আটক বা গ্রেফতার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও প্রতারণা।
৪. বিচার বিভাগীয় দুর্নীতি

মামলার শুনানি ও রায়ের ক্ষেত্রে ঘুষ।
মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারকদের অনৈতিক লেনদেন।
আইনজীবীদের মাধ্যমে মামলার রায় প্রভাবিত করা।
আইনের অপব্যবহার করে প্রভাবশালী অপরাধীদের রক্ষা করা।
আদালতের নথিপত্র জালিয়াতি।
পুলিশের মাধ্যমে মামলায় হস্তক্ষেপ ও প্রমাণ নষ্ট করা।
· বিচারকের উপর প্রভাব সৃষ্টি

· ভুয়া মামলার সৃষ্টি

· আইনি পরামর্শে দুর্নীতি

৫. ভূমি ও গৃহায়ন সংক্রান্ত দুর্নীতি

ভুয়া জমির দলিল তৈরি ও জালিয়াতি।
নামজারি ও জমি হস্তান্তরে ঘুষ।
ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়ম ও দুর্নীতি।
সরকারি সম্পত্তি বেসরকারি ব্যক্তির দখলে যাওয়া।
৬. শিক্ষা খাতে দুর্নীতি

প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জাল সার্টিফিকেট তৈরি।
ভর্তি বাণিজ্য ও কোচিং বাণিজ্য।
সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতি।
শিক্ষকদের অনুপস্থিতি ও দায়িত্ব অবহেলা।
৭. স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে দুর্নীতি

সরকারি হাসপাতালের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম চুরি ও কালোবাজারে বিক্রি।
ভুয়া চিকিৎসক দ্বারা রোগীদের প্রতারণা ও ভুয়া চিকিৎসা সনদ বাণিজ্য।
সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে ওষুধ না পাওয়া ও চিকিৎসার নামে অনৈতিক অর্থ আদায়।
বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অতিরিক্ত বিল ও প্রতারণা।
নকল ওষুধের ব্যবসা ও অনুমোদনে দুর্নীতি।
চিকিৎসকদের কমিশন বাণিজ্য ও ওষুধ কোম্পানির সাথে অবৈধ লেনদেন।
৮. চিকিৎসা শিক্ষা ও সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতি

চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ কেনাকাটায় অনিয়ম ও নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও স্বজনপ্রীতি।
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ব্যবহারে অনিয়ম।
৯. ব্যাংক ও আর্থিক খাতে দুর্নীতি

ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি ও ঋণখেলাপি।
অর্থপাচার ও হুন্ডি ব্যবসা।
শেয়ারবাজারে কারসাজি ও প্রতারণা।
মুদ্রাপাচার ও কর ফাঁকি।
ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন ও পাচার।
ভুয়া কোম্পানি দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ।
অবৈধ লেনদেন ও মানি লন্ডারিং।
১০. পরিবহন, যোগাযোগ ও সড়ক পরিবহন খাতে দুর্নীতি:

যানবাহনের ফিটনেস সনদ জালিয়াতি।
লাইসেন্স ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশন পেতে ঘুষ।
লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে ঘুষ প্রদান।
টোল আদায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি।
সরকারি সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণে দুর্নীতি।
মহাসড়কে অবৈধ টোল আদায়।
পরিবহন চাঁদাবাজি ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে অনিয়ম।
টোল প্লাজার অর্থ লুটপাট ও দুর্নীতি।
চালক ও পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়।
যানবাহন নিবন্ধন, ফিটনেস ও লাইসেন্স পেতে ঘুষ লেনদেন।
সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতি ও অবৈধ চাঁদাবাজি।
পুলিশের ট্রাফিক মামলায় অনৈতিক লেনদেন।
গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও প্রতারণা।
১১. পাসপোর্ট ও অভিবাসন খাতে দুর্নীতি

পাসপোর্ট তৈরির জন্য ঘুষ গ্রহণ।
ভিসা জালিয়াতি ও মানবপাচার।
বিদেশে কর্মসংস্থানের নামে প্রতারণা।
১২. সরকারি ক্রয় ও প্রকল্প সংক্রান্ত দুর্নীতি

টেন্ডারবাজি ও কমিশন বাণিজ্য।
অবকাঠামো নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার।
প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে দুর্নীতি করা।
১৩. কর ফাঁকি ও রাজস্ব খাতে দুর্নীতি:

ব্যবসায়ীরা কর এড়াতে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান।
কর কর্মকর্তাদের সাথে ঘুষ লেনদেন করে কম কর পরিশোধ।
রাজস্ব বিভাগের দুর্নীতির ফলে সরকারি আয় কমে যাওয়া।
কর ফাঁকি দিতে ভুয়া কোম্পানি খুলে লেনদেন।
ফরমাশী (সংশোধিত) হিসাব দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ নেওয়া।
কালো টাকা সাদা করতে ভুয়া বিনিয়োগ দেখানো।
১৪. গণমাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা খাতে দুর্নীতি:

সংবাদ বিকৃতি ও মিথ্যা প্রচার।
অনলাইন প্রতারণা ও সাইবার ক্রাইম।
সরকারি তথ্য বিক্রি ও অপব্যবহার।
সরকারি ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল সেবায় দুর্নীতি।
সাইবার ক্রাইম ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি।
ই-গভর্নমেন্ট সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব।
১৫. ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত দুর্নীতি

ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাৎ।
এনজিওদের অনিয়ম ও দুর্নীতি।
দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ।
১৬. সরকারি চাকরি, জনশক্তি, নিয়োগ ও প্রবাসী সংক্রান্ত দুর্নীতি:

সরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস।
নিয়োগ ও পদোন্নতিতে স্বজনপ্রীতি।
সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে ঘুষ দিয়ে নিয়োগ।
প্রবাসী কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতারণা।
বিদেশে কাজের জন্য প্রতারণামূলক ভিসা প্রদান।
রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায়।
দূতাবাসে নথিপত্র প্রক্রিয়াকরণে ঘুষ গ্রহণ।
১৭. পাবলিক প্রকল্প ও অবকাঠামো দুর্নীতি

রাস্তাঘাট, ব্রিজ, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার।
অতিরিক্ত বাজেট দেখিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ।
কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন।
১৮. পানিসম্পদ, সেচ প্রকল্প ও পরিবেশ সংক্রান্ত দুর্নীতি

নদী ও খাল দখল করে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার।
নদী রক্ষা ও জলাশয় সংরক্ষণের নামে তহবিল অপচয়।
বন উজাড়, পাহাড় কাটা ও পরিবেশ ধ্বংস।
শিল্পকারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণে অনিয়ম ও ঘুষগ্রহণ।
অবৈধভাবে পানি সংরক্ষণ প্রকল্পের বরাদ্দ লুটপাট।
সেচ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় দুর্নীতি।
১৯. বীমা ও পেনশন খাতে দুর্নীতি:

ভুয়া বীমা দাবি করে অর্থ আত্মসাৎ।
বীমা দাবি অনুমোদনে দেরি ও অনিয়ম।
বীমা ক্লেইম প্রদানে অনিয়ম ও ঘুষ গ্রহণ।
জীবন ও স্বাস্থ্য বীমায় প্রতারণা।
কৃষি ও স্বাস্থ্য বীমার তহবিল অপব্যবহার।
সরকারি ও বেসরকারি পেনশন ফান্ডে দুর্নীতি।
২০. বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত দুর্নীতি

অবৈধ কমিশন ও লবিং।
বিনিয়োগ অনুমোদনে ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাব।
আমদানি-রপ্তানিতে শুল্ক ফাঁকি।
২১. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি

হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি ও প্রতারণা।
মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম।
ধর্মীয় অনুদান ও ওয়াকফ সম্পত্তি আত্মসাৎ।
২২. খেলা, ক্রীড়া ও বিনোদন খাতে দুর্নীতি:

ক্রীড়া সংস্থায় অনিয়ম ও ঘুষ।
খেলোয়াড় নির্বাচনে স্বজনপ্রীতি ও লবিং।
সাংস্কৃতিক খাতে সরকারি অনুদানের অপব্যবহার।
খেলাধুলায় ম্যাচ ফিক্সিং ও বাজি ধরা।
সরকারি ক্রীড়া অনুদান ও উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ।
চলচ্চিত্র ও নাট্য জগতে অনৈতিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতি।
২৩. টেলিযোগাযোগ, মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত দুর্নীতি

অননুমোদিত কল রেট ও ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ নিয়ে প্রতারণা।
কল ড্রপ ও নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধানে অবহেলা।
গ্রাহকদের অপ্রয়োজনীয় সার্ভিসে বাধ্য করা।
গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ আদায়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অবৈধ চাঁদাবাজি ও তথ্য ফাঁস।
অবৈধ সিম বিক্রি ও নিবন্ধন জালিয়াতি।
২৪. স্থানীয় সরকার, ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা দুর্নীতি

ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ লুটপাট।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার অপব্যবহার।
স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ।
পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ।
রাস্তা সংস্কারের নামে টাকা লুটপাট।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম।
২৫. সামাজিক নিরাপত্তা ও ভাতা সংক্রান্ত দুর্নীতি

বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণে অনিয়ম।
সরকারি অনুদান ও ভর্তুকি আত্মসাৎ।
ভুয়া উপকারভোগী তালিকা তৈরি করে অর্থ লুটপাট।
২৬. গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা খাতে দুর্নীতি

বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার অনুদান আত্মসাৎ।
ভুয়া গবেষণা ও প্রকাশনা প্রতারণা।
উচ্চশিক্ষায় ভর্তি ও বৃত্তি প্রদানে অনিয়ম।
২৭. সাংবাদিকতা ও মিডিয়া দুর্নীতি

ভুয়া সংবাদ প্রচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা।
মিডিয়া হাউসের রাজনৈতিক আনুগত্য ও পক্ষপাতিত্ব।
বিজ্ঞাপনের জন্য সংবাদ বিকৃতি।
বিজ্ঞাপন ও স্পন্সরের নামে অনৈতিক চুক্তি।
২৮. ই-কমার্স ও অনলাইন ব্যবসায় দুর্নীতি

গ্রাহকদের ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা।
পণ্য সরবরাহে অনিয়ম ও বিলম্ব।
ভুয়া ডিসকাউন্ট ও অফারের মাধ্যমে প্রতারণা।
২৯. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, সোশ্যাল মিডিয়া ও সাইবার দুর্নীতি:

ভুয়া আইডি ও তথ্য দিয়ে প্রতারণা করা।
অনলাইন ফ্রড ও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের দুর্নীতি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল।
ফিশিং, হ্যাকিং, সাইবার ক্রাইম ও তথ্য চুরি করে আর্থিক দুর্নীতি।
অনলাইন ব্যাংকিং প্রতারণা।
সোশ্যাল মিডিয়া ভিত্তিক মিথ্যা প্রচার ও জালিয়াতি।
ভুয়া নিউজ ও গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি।
ই-কমার্সের মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতারণা।
৩০. বন্দর ও কাস্টমস দুর্নীতি

শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ আমদানি-রপ্তানি ও পণ্য পাচার।
কাস্টমস অফিসে ঘুষ নিয়ে দ্রুত ছাড়পত্র প্রদান।
বন্দরে কাস্টমস অফিসারদের ঘুষ গ্রহণ ও অবৈধ লেনদেন।
কনটেইনার জট এড়াতে অনৈতিক অর্থ আদায়।
অবৈধ মালামাল পাচার ও চোরাকারবার।
৩১. বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ ও খনিজ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি:

অবৈধ সংযোগ প্রদান ও বিল জালিয়াতি।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ পেতে ঘুষ গ্রহণ।
পানির সরবরাহে অনিয়ম ও মিটার টেম্পারিং।
তেল, গ্যাস ও কয়লা খনির অনিয়ম।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ খাতে অর্থ আত্মসাৎ।
অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান।
৩২. সরকারি খাদ্য সহায়তা ও রেশন দুর্নীতি

গরিব ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল-ডাল চুরি।
টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) প্রকল্পে অনিয়ম।
ভুয়া তালিকা তৈরি করে সরকারি সহায়তা আত্মসাৎ।
৩৩. জমি ও ভূমি সংক্রান্ত দুর্নীতি

জমির খতিয়ান, পর্চা, দলিল জালিয়াতি।
ভূমি দখল ও দালালি।
সরকারি জমি বেদখল ও অবৈধ প্লট বরাদ্দ।
জমির রেজিস্ট্রেশনে ঘুষ লেনদেন।
৩৪. প্রবাসী কল্যাণ, রেমিট্যান্স ও শ্রমিক কর্মসংস্থান দুর্নীতি:

প্রবাসীদের জন্য বরাদ্দকৃত সুবিধা থেকে অর্থ আত্মসাৎ।
অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাচার।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক পরিচালনায় অনিয়ম।
বিদেশে চাকরির নামে ভুয়া এজেন্সির মাধ্যমে প্রতারণা।
প্রবাসী আয় হস্তান্তরে (রেমিট্যান্স) কমিশন বাণিজ্য ও লেনদেনের অনিয়ম।
সরকারি শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ।
৩৫. বিনিয়োগ, স্টক মার্কেট ও ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি:

শেয়ার বাজারে কৃত্রিম দাম বাড়ানো ও কমানো।
ভুয়া কোম্পানি তৈরি করে শেয়ার জালিয়াতি।
বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা।
ব্যাংক লোন জালিয়াতি ও খেলাপি ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎ।
শেয়ারবাজারে কৃত্রিম মন্দা বা উত্থান ঘটিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ও নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পের মাধ্যমে জালিয়াতি।
৩৬. শিক্ষা উপকরণ, পাঠ্যবই ও শিক্ষাবৃত্তি খাতে দুর্নীতি:

সরকারি বই বিতরণে অনিয়ম ও চুরি।
নকল বই ও প্রশ্নপত্র ফাঁস।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত বেতন ও ফি আদায়।
দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ।
ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত শিক্ষা উপকরণ চুরি।
মেধাবৃত্তির ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম।
৩৭. অনুদান ও দাতব্য সংস্থার দুর্নীতি

দাতব্য সংস্থার অর্থ আত্মসাৎ।
বেসরকারি সংস্থাগুলোর অনুদানের অপব্যবহার।
ভুয়া এনজিও ও চ্যারিটি সংগঠন খুলে প্রতারণা।
৩৮. দুর্যোগ সহায়তা ও ত্রাণ দুর্নীতি

বন্যা, ঘূর্ণিঝড় বা অন্যান্য দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ চুরি।
তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের না দিয়ে ভুয়া নাম ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাৎ।
ত্রাণ বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক প্রভাব।
৩৯. সরকারি পেনশন ও কল্যাণ তহবিল দুর্নীতি:

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের পেনশন পেতে ঘুষ দিতে বাধ্য করা।
ভুয়া পেনশন সুবিধাভোগীদের নামে অর্থ উত্তোলন।
কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ লুটপাট।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাতার অর্থ আত্মসাৎ।
ভুয়া নাম ব্যবহার করে ভাতা গ্রহণ।
বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতা বিতরণে দুর্নীতি।
৪০. সরকারি পেনশন ও সামাজিক নিরাপত্তা দুর্নীতি:

সরকারি পেনশন ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির অনুদান আত্মসাৎ।
কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ লুটপাট।
৪১. ক্রীড়া সংস্থা ও ফেডারেশন দুর্নীতি:

ক্রীড়া ফেডারেশন ও কমিটিতে স্বজনপ্রীতি।
খেলার মাঠ ও স্টেডিয়াম বরাদ্দে অনিয়ম।
খেলোয়াড় নির্বাচনে দুর্নীতি ও আর্থিক লেনদেন।
৪২. টেন্ডার ও কন্ট্রাক্ট দুর্নীতি

সরকারি কাজের টেন্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি।
দরপত্র না নিয়েই বিশেষ গোষ্ঠীকে কাজ দেওয়া।
নিম্নমানের কাজ করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ।
৪৩. বেসরকারি খাতে দুর্নীতি:

কর ফাঁকি ও অর্থপাচার।
ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি।
ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন।
৪৪. যোগাযোগ ও সড়ক নির্মাণ দুর্নীতি

নিম্নমানের রাস্তা ও ব্রিজ তৈরি করে সরকারি অর্থ অপচয়।
রাস্তা মেরামতের জন্য বাজেট বরাদ্দ হলেও কাজ না করা।
যানবাহন পরিচালনায় অবৈধ পারমিট প্রদান।
৪৫. বনায়ন, বনসম্পদ ও কৃষি গবেষণা খাতে দুর্নীতি:

অবৈধভাবে বন উজাড় ও কাঠ পাচার।
পরিবেশ প্রকল্পের নামে সরকারি তহবিল আত্মসাৎ।
শিল্প কারখানায় অবৈধভাবে বনভূমি বরাদ্দ।
নতুন জাতের উদ্ভাবনে গবেষণা তহবিল আত্মসাৎ।
অবৈধভাবে বনভূমি দখল ও বৃক্ষনিধন।
কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান আত্মসাৎ।
৪৬. স্বাস্থ্য গবেষণা ও ওষুধ খাতে দুর্নীতি

ভুয়া ওষুধ অনুমোদন ও বিক্রি করা।
গবেষণা তহবিলের অপব্যবহার।
ওষুধের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটা।

৪৭. মানবাধিকার ও এনজিও খাতে দুর্নীতি

দাতব্য সংস্থা ও এনজিওর অনুদান আত্মসাৎ।
মানবাধিকার সংস্থার নাম ব্যবহার করে বিদেশি অনুদান হাতিয়ে নেওয়া।
প্রকৃত সাহায্যপ্রাপ্তদের না দিয়ে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সুবিধাভোগীদের সহায়তা প্রদান।
প্রকল্প অর্থের অপব্যবহার।
মানবাধিকার প্রতিবেদনগুলোর জালিয়াতি।
দাতব্য কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব।
৪৮. কারাগার ও বন্দি ব্যবস্থাপনা দুর্নীতি

বন্দিদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায়।
প্রভাবশালী অপরাধীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান।
জামিন ও মুক্তির ক্ষেত্রে অনৈতিক লেনদেন।
বন্দিদের কাজের প্রতি অনৈতিক প্রভাব।
কারাগারের নিরাপত্তায় অবহেলা।
বন্দি আত্মহত্যার ক্ষেত্রে অবহেলা।
কারাগারের ভেতরে অস্বচ্ছতা।
৪৯. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা দুর্নীতি

সার, বীজ ও কৃষি উপকরণে ভেজাল ও অনিয়ম।
কৃষকদের দেওয়া ভর্তুকি থেকে অর্থ আত্মসাৎ।
বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কৃষিপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ানো।
৫০. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ ও পদোন্নতি দুর্নীতি

ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মচারী নিয়োগ।
গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল আত্মসাৎ।
ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান ও ডিগ্রি বাণিজ্য।
৫১. আবাসন ও জমি উন্নয়ন খাতে দুর্নীতি:

অবৈধভাবে সরকারি জমি দখল।
আবাসন প্রকল্পের নামে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় অস্বচ্ছ চুক্তি ও প্রতারণা।
সরকারি ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি।
প্রকল্প বাস্তবায়নে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার।
ভূমি অফিসে দলিল নিবন্ধন ও নামজারি করতে ঘুষ গ্রহণ।
৫২. ধর্মীয় ও ওয়াকফ সম্পত্তি দুর্নীতি

মসজিদ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুদান আত্মসাৎ।
ওয়াকফ সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল ও বিক্রি।
হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি।
৫৩. ট্রেড লাইসেন্স ও ব্যবসা অনুমোদন দুর্নীতি

ব্যবসার লাইসেন্স ও অনুমোদন নিতে ঘুষ প্রদান।
সরকারি দপ্তরে বিভিন্ন অনুমতি পেতে অনৈতিক লেনদেন।
রফতানি ও আমদানি বাণিজ্যে অনিয়ম।
৫৪. আন্তর্জাতিক সাহায্য ও অনুদান দুর্নীতি

বিদেশি দাতব্য সংস্থার অর্থ অপব্যবহার।
দুর্যোগ ও পুনর্বাসন খাতে বরাদ্দকৃত অনুদান আত্মসাৎ।
বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম।
৫৫. ব্যাংক ও মোবাইল ফিন্যান্সিং দুর্নীতি

মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় অবৈধ ট্রানজেকশন।
মানি লন্ডারিং ও অর্থপাচার।
ভুয়া একাউন্ট খুলে ব্যাংক প্রতারণা।
৫৬. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে দুর্নীতি

জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভর্তুকির টাকা লুটপাট।
সরকারি খামার ও গবেষণা তহবিল অপব্যবহার।
মাছের খাদ্যে ভেজাল ও প্রাণিসম্পদ প্রতারণা।
৫৭. পরিবেশ ও জলবায়ু তহবিল দুর্নীতি

পরিবেশ রক্ষা প্রকল্পের অর্থ লুটপাট।
শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ ঠেকাতে অনিয়ম।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বরাদ্দকৃত অর্থ অপব্যবহার।
৫৮. অবৈধ দখল ও ভূমি দস্যুতা

সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অবৈধভাবে দখল।
খাসজমি, নদী ও জলাশয় দখল ও বিক্রি।
গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত জমি আত্মসাৎ।
৫৯. অনলাইন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম দুর্নীতি

ভুয়া অনলাইন লেনদেন ও ই-কমার্স প্রতারণা।
সরকারি অনলাইন পরিষেবায় ঘুষ ও স্বজনপ্রীতি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার ও সাইবার অপরাধ।
৬০. পানি ও সেচ প্রকল্প দুর্নীতি

গভীর নলকূপ ও সেচ সুবিধায় অনিয়ম।
নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের অর্থ লুটপাট।
সুপেয় পানির জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান আত্মসাৎ।
৬১. শ্রমিক ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল দুর্নীতি

পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন।
শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাৎ।
শ্রমিকদের নামে ভুয়া তালিকা তৈরি করে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ।
৬২. বন্যা ও দুর্যোগ ত্রাণ দুর্নীতি

বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ আত্মসাৎ।
সরকারি শেল্টার নির্মাণে নিম্নমানের কাজ।
আন্তর্জাতিক সাহায্যের অনুদান ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার।
৬৩. রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন সংক্রান্ত দুর্নীতি

নির্বাচনে অনিয়ম ও ভোট কারচুপি।
নির্বাচনী তহবিল ও প্রচারণায় কালো টাকা ব্যবহার।
রাজনৈতিক দলের ফান্ড অপব্যবহার ও ঘুষ লেনদেন।
৬৪. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পদ আত্মসাৎ ও হয়রানি

সংখ্যালঘুদের জমি ও সম্পদ অবৈধভাবে দখল।
মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে হামলা ও দখল।
সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় প্রশাসনিক অবহেলা।
৬৫. আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদক ব্যবসা সম্পর্কিত দুর্নীতি:

মাদক, চোরাচালান ও অবৈধ ব্যবসায় পুলিশি সহায়তা।
মাদক ব্যবসায়ীদের থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের রক্ষা করা।
মাদকের মামলা নিষ্পত্তিতে অনৈতিক লেনদেন।
পুলিশ ও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার মাদক ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টতা।
৬৬. আইটি ও সফটওয়্যার উন্নয়ন খাতে দুর্নীতি

সরকারি আইটি প্রকল্পে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা।
ই-গভর্নেন্স প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ।
সফটওয়্যার কেনাকাটায় স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম।
৬৭. সরকারি গাড়ি ও সম্পদ ব্যবহারে দুর্নীতি

সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার।
সরকারি মালিকানাধীন বাসা ও সম্পদ অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়া।
সরকারি সরঞ্জামের অনিয়মিত ব্যবহার।
৬৮. মেগা প্রকল্প ও অবকাঠামো দুর্নীতি

বড় অবকাঠামো প্রকল্পে অতিরিক্ত বাজেট দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ।
রেলপথ, সেতু ও ফ্লাইওভার নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার।
বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতার অভাব।
৬৯. বিনোদন ও মিডিয়া দুর্নীতি

সরকারি তথ্য মন্ত্রণালয়ের ফান্ড অপব্যবহার।
সিনেমা ও টিভি নাটক প্রযোজনায় কালো টাকার লেনদেন।
বিজ্ঞাপন প্রচারে অবৈধ কমিশন বাণিজ্য।
৭০. খুন এবং হত্যাকাণ্ড:

রাজনৈতিক সহিংসতা: রাজনৈতিক বিরোধে খুন।
পারিবারিক খুন: পারিবারিক দ্বন্দ্বে খুন।
অপরাধী দল দ্বারা খুন: গ্যাংস্টারদের খুন।
৭১. চুরি এবং ডাকাতি:

চুরি: ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানে চুরি।
ডাকাতি: সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা।
৭২. নারী ও শিশু নির্যাতন:

যৌন নির্যাতন: জোরপূর্বক যৌন আক্রমণ।
শিশু নির্যাতন: শিশুদের শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন।
পারিবারিক সহিংসতা: পরিবারের মধ্যে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন।
৭৩. ভিক্ষাবৃত্তি এবং মানব পাচার:

ভিক্ষাবৃত্তি: শিশু ও প্রতিবন্ধীদের দিয়ে ভিক্ষা করানো।
মানব পাচার: নারী ও শিশু পাচার করা।
৭৪. ভ্রাম্যমাণ অপরাধ

রাস্তায় ছিনতাই
মোবাইল ফোন ছিনতাই
পকেটমার
৭৫. বাজারে কারসাজি এবং প্রতারণা

· মূল্য বাড়ানো

· ভেজাল দ্রব্য বিক্রি

· কৃষিপণ্যে ভেজাল

৭৬. প্রাকৃতিক সম্পদ চুরি

· বনজসম্পদ চুরি

· খনিজ সম্পদ চুরি

· বালু উত্তোলন

৭৭. আত্মহত্যার প্ররোচনা

· আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা

· সামাজিক বা পারিবারিক নির্যাতন

· মানসিক নির্যাতন

৭৮. অশ্লীলতা এবং পর্নোগ্রাফি

· পর্নোগ্রাফি তৈরি ও বিতরণ

· অনলাইন নির্যাতন

· অশ্লীল ভাষা ব্যবহার

৭৯. প্রকৃতির ক্ষতি

· বনাঞ্চল উজাড়

· জলাভূমি দখল

· পরিবেশ দূষণ

৮০. ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড

· সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর

· সন্ত্রাসী হামলা

· গ্যাস বা অন্যান্য বিপজ্জনক উপকরণের অপব্যবহার

৮১. আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন

· মিছিল ও প্রতিবাদে সহিংসতা

· পুলিশের ওপর হামলা

· জনসাধারণের শান্তি ভঙ্গ

৮২. ধর্মীয় সহিংসতা

· ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সহিংসতা

· মন্দির, মসজিদ বা অন্যান্য ধর্মীয় স্থানে হামলা

· ধর্মীয় অনুভূতি আহত করা

৮৩. অশিক্ষা এবং সামাজিক অবহেলা

· শিক্ষা ব্যবস্থা অবহেলা

· শিশুদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা

· কমিউনিটি বা সমাজের অবহেলা

৮৪. যাত্রাপথে অপরাধ

· রাস্তায় চুরি বা ছিনতাই

· গাড়ির কাচ ভেঙে মালামাল চুরি

· অজ্ঞান পার্টি ও ডাকাতি

৮৫. সামাজিক অবমাননা ও উস্কানী

· সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো

· নিন্দনীয় বা আপত্তিকর মন্তব্য করা

· বিদ্বেষমূলক কার্যকলাপ প্রচার

৮৬. ব্যক্তিগত আক্রমণ ও হুমকি

· শারীরিক আক্রমণ

· মৌখিক বা সামাজিক হুমকি

· ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজি

৮৭. আইনজীবী ও বিচারক দুর্নীতি

· বিচারকের উপর প্রভাব সৃষ্টি

· ভুয়া মামলার সৃষ্টি

· আইনি পরামর্শে দুর্নীতি

৮৯. পরিবেশ দূষণ

· শিল্প কারখানার বর্জ্য ফেলা

· গাছপালা নিধন

· পানি, বায়ু বা মাটি দূষণ

৯০. পদত্যাগের পর দুর্নীতি

· সরকারের পদত্যাগী কর্মকর্তাদের দুর্নীতি

· অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের অপরাধী কার্যক্রম

· অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবৈধ লেনদেন

৯১. অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার

· অবৈধ অস্ত্র বিক্রি ও পাচার

· সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড

· রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করা

৯২. ভৌগলিক দুর্নীতি

· জমি দখল ও অবৈধ দখল

· পরিবেশগত নীতির লঙ্ঘন

· সরকারি জমি বা সম্পত্তি অপব্যবহার

৯৩. মানবাধিকার লঙ্ঘন

· রাজনৈতিক বন্দী নির্যাতন

· সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ

· গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ

৯৪. অবৈধ তথ্য সংগ্রহ

· হ্যাকিং বা সাইবার অপরাধ

· ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও বিক্রি

· ইন্টারনেট বা ডিজিটাল নিরাপত্তা লঙ্ঘন

৯৫. সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি

· ধর্মীয় বা জাতিগত বিদ্বেষ প্রচার

· সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করা

· গণহত্যার প্রচেষ্টা

৯৬. সরকারি সেবা খাতে দুর্নীতি

· সরকারি প্রকল্পের তহবিল তছরুপ

· অনৈতিকভাবে সরকারি সেবা বিতরণ

· সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধ কাজ

৯৭. কৃত্রিম মূল্য বৃদ্ধি

· দামের অপব্যবহার ও মূল্যস্ফীতি

· জালিয়াতি করে পণ্যের দাম বাড়ানো

· ভোগ্যপণ্যের অভাব সৃষ্টি করা

৯৮. পরিষেবা খাতে দুর্নীতি

· চিকিৎসা খাতে দুর্নীতি

· শিক্ষা খাতে অনিয়ম

· পরিবহন খাতে দুর্নীতি

৯৯. অনৈতিক ব্যবসা ও বাণিজ্য

· জাল ও নকল পণ্য বিক্রি

· স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টিকারী পণ্য বিক্রি

· শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন করা

১০০. ভোটাধিকার ও নির্বাচনী অপরাধ

· ভোট জালিয়াতি এবং ভোটের কারচুপি

· নির্বাচনী সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন

· নির্বাচনী তহবিলের অপব্যবহার

১০১. মাদক ব্যবসা

· মাদক দ্রব্য চোরাচালান

· মাদক সেবন এবং ছড়িয়ে পড়া

· মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধের সংগঠন

১০২. জঙ্গি কার্যক্রম ও সন্ত্রাসী সহিংসতা

· জঙ্গি সংগঠন সমর্থন করা

· সন্ত্রাসী হামলা ও পরিকল্পনা

· মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আতঙ্ক সৃষ্টি

১০৩. অনুপ্রবেশ ও সীমান্ত অপরাধ

· অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং সীমান্ত পারাপার

· সীমান্ত নিরাপত্তা লঙ্ঘন

· অবৈধ শরণার্থী বা অভিবাসী চক্র

১০৪. ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম

· পরিবেশের ক্ষতি করা

· বন ও প্রকৃতি ধ্বংস

· বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার

১০৫. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সহায়তা তহবিল অপব্যবহার

· দুর্যোগের সময় ত্রাণ তহবিলের চুরি

· দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি

· ত্রাণ সামগ্রী অসৎ উদ্দেশ্যে বিতরণ

১০৬. কৃত্রিম পণ্য এবং পেটেন্ট চুরি

· কৃত্রিম পণ্য উৎপাদন ও বিপণন

· পেটেন্ট চুরির মাধ্যমে ভুয়া পণ্য বাজারজাত করা

· কপিরাইট এবং ট্রেডমার্ক চুরির ঘটনা

১০৭. অপরাধী গ্যাং এবং চক্র

· অপরাধী দল গঠন এবং তাদের কার্যক্রম

· অবৈধ ব্যবসা এবং মাদক চক্র

· সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সংগঠন

১০৮. কর্মস্থলে অসদাচরণ এবং নিপীড়ন

· যৌন হেনস্তা ও সহকর্মীদের প্রতি অত্যাচার

· কর্মক্ষেত্রে অবিচার এবং দুর্নীতি

· শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘন

১০৯. অশ্লীলতা এবং পাবলিক অর্ডার লঙ্ঘন

· পাবলিক প্লেসে অশ্লীল আচরণ

· শোরগোল বা জনস্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা বিপন্ন করা

· অশ্লীল বই, ভিডিও বা সামগ্রী বিতরণ

১১০. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত অপরাধ

· অবৈধ বনজ সম্পদ দখল ও পাচার

· জলাধার ও নদী দূষণ

· অবৈধ মাটি খনন এবং ভূমি অপরাধ

১১১. বিভিন্ন ধরনের চাঁদাবাজি

· ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়

· প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হুমকি ও চাঁদাবাজি

· নির্দিষ্ট এলাকায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে চাঁদাবাজি

১১২. পণ্য মান নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতি

· নিম্নমানের পণ্য বাজারে বিক্রি

· খাদ্যপণ্য বা ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া

· স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পণ্যতে ভেজাল বা দূষণ

১১৩. নিষিদ্ধ পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি

· ভেজাল ও ক্ষতিকারক ওষুধ বিক্রি

· নিষিদ্ধ কসমেটিকস ও খাদ্যপণ্য আমদানি

১১৪. পর্যটন খাতে অপরাধ

· বিদেশি পর্যটকদের হয়রানি

· পর্যটন এলাকায় অবৈধ বাণিজ্য

১১৫. প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের ওপর সহিংসতা

· অসহায়দের সম্পদ আত্মসাৎ

· বৃদ্ধাশ্রমে অবহেলা ও নির্যাতন

 

দুর্নীতি দমনে করণীয়

বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যেখানে সরকার, জনগণ, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করবে। দুর্নীতি দমনে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য।

১. আইনের কঠোর প্রয়োগ: দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন কার্যকর করতে হলে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধে একমাত্র আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করলে এর প্রতিরোধ সম্ভব। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যেন তারা বুঝতে পারে যে সমাজে তাদের কোনো স্থান নেই এবং আইনের ঊর্ধ্বে কোনো ব্যক্তি থাকতে পারে না।

২. প্রশাসনিক স্বচ্ছতা: সরকারি ক্রয়-বিক্রয় এবং আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ই-গভর্নেন্স ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করলে দুর্নীতির সুযোগ কমে যাবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে সকল লেনদেন স্বচ্ছ এবং সহজে যাচাইযোগ্য হবে, যা দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ সৃষ্টি করবে।

৩. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধে আগ্রহ এবং অংশগ্রহণ তৈরির জন্য শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতা, সততা ও দেশপ্রেমের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে, যাতে আগামী প্রজন্মের মধ্যে সততার সংস্কৃতি গড়ে উঠতে পারে।

৪. গণমাধ্যমের ভূমিকা: স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসঙ্গতিপূর্ণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা যেতে পারে। তাদের প্রতিবেদন এবং অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।

৫. প্রশাসনিক সংস্কার: দুর্নীতির মোকাবিলায় প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত বেশি। স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, ঘুষ ও স্বজনপ্রীতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সরকারি দপ্তরে নিয়োগ, পদোন্নতি এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের দুর্নীতি বা পক্ষপাতিত্ব না ঘটে, সে জন্য প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত করতে হবে।

এই সব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে, যেখানে আইন, শৃঙ্খলা, এবং নৈতিকতা প্রতিষ্ঠিত থাকবে।

উপসংহার

বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্নীতি একটি জাতির অগ্রগতির পথে বড় বাধা হিসেবে কাজ করে এবং এটি যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তবে দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হবে। দুর্নীতির ফলে শুধু সরকারেরই ক্ষতি হয় না, বরং সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রাও চরমভাবে প্রভাবিত হয়। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই একটি একক দায়িত্ব নয়, এটি একটি জাতীয় আন্দোলন। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণেরও উচিত সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।

যদি সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে মানুষ সততা ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ায় এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, তাহলে শুধুমাত্র সরকার নয়, পুরো সমাজ এই লড়াইয়ে অংশ নিতে পারবে। একতা, সততা, এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। দেশের প্রতিটি নাগরিক, সরকার, এবং প্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করতে হবে। সবাই যদি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, তবে বাংলাদেশ একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ হয়ে উঠবে, যেখানে প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

দুর্নীতি: সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এক নীরব ঘাতক

লেখক, সংগ্রাহক ও গবেষকঃ হক মোঃ ইমদাদুল, জাপান
Update Time : ০৪:৪৫:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ আজ এক সম্ভাবনাময় দেশ, যেখানে ১৭ কোটি মানুষের কঠোর পরিশ্রম, মেধা ও সৃজনশীলতার সমন্বয়ে উন্নয়নের অসীম সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশের অগ্রযাত্রা প্রশংসনীয়। তবে, এই অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্নীতি।

দুর্নীতি এখন কেবল ব্যক্তিগত লাভের সীমাবদ্ধতায় নেই; এটি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়ছে এবং রাষ্ট্রীয় অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের কারণে দুর্নীতির ভয়াবহতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সরকারি-বেসরকারি প্রশাসন থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিচার বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোও এর কুফল থেকে মুক্ত নয়।

শিক্ষা খাতে দুর্নীতির ফলে মেধাবীদের যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না। মেধাহীনরা অর্থ ও ক্ষমতার জোরে উচ্চপদে আসীন হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি রোগীদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে, যেখানে প্রয়োজনীয় ঔষুধ, উন্নত চিকিৎসা ও হাসপাতালের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিচার বিভাগে ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিচারপ্রার্থীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আইনের প্রতি অনাস্থা তৈরি করছে।

এই দুর্নীতির করাল গ্রাস দেশের অর্থনৈতিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে, বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করছে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করছে। যদি এই সমস্যা সমাধান করা না যায়, তবে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কাজেই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা একান্ত জরুরি।

যে কোনো শারীরিক ব্যাধির চিকিৎসা রয়েছে, কিন্তু দুর্নীতির কোনো চিকিৎসা বা ঔষুধ নেই। এটি এমন এক ভয়ংকর ব্যাধি, যা সমাজকে ভেতর থেকে নিঃশেষ করে ফেলে, অনেকটা ক্যানসারের মতো। একবার সংক্রমিত হলে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় না। এটি বাংলাদেশের জাতিকে নিঃশেষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। একে প্রতিহত করতে প্রয়োজন সততা, সম্মিলিত প্রতিরোধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান।

দেশ, জাতি বা সমাজ কারো একার নয়। সুতরাং, একে দূষিত বা দুর্বল করার অধিকার কারো নেই।

দুর্নীতির বহুমাত্রিক প্রভাব

দুর্নীতির প্রভাব সমাজের প্রতিটি স্তরে দৃশ্যমান। এটি শুধু ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়।

১. অর্থনৈতিক ক্ষতি ও প্রবৃদ্ধির অন্তরায়

দুর্নীতির ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ঘটে, বৈদেশিক বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয় এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। সরকারি প্রকল্প ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে দুর্নীতি থাকায় বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার হয় না। ফলে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।

বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান দুর্নীতির কবলে পড়ে যথাযথভাবে ব্যয়িত না হওয়ায় জনগণের প্রত্যাশিত উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয় না। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজের কারণে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশের প্রতি আস্থা হারান, যা ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বড় ধরনের হুমকি।

২. সামাজিক বৈষম্য ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুর্দশা

দুর্নীতির কারণে সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যাহত হয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা শুধু ক্ষমতাবান ও ধনী শ্রেণির হাতে কেন্দ্রীভূত হয়, যেখানে সাধারণ ও দরিদ্র জনগণ মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত থাকে।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতেও দুর্নীতির প্রভাব সুস্পষ্ট। সরকারি বিদ্যালয় ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতির কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সেগুলোর সঠিক ব্যবহার করতে পারে না। স্বাস্থ্যখাতে ওষুধ, চিকিৎসা উপকরণ ও সেবার গুণগত মান নষ্ট হয়। শিক্ষাক্ষেত্রে ঘুষ, ফি নিয়ে অনিয়ম ও প্রশ্নফাঁসের মতো সমস্যা শিক্ষার মান কমিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে সমাজে একটি অদক্ষ ও অনৈতিক প্রজন্ম গড়ে উঠছে, যারা ভবিষ্যতে দেশের নেতৃত্ব দিতে পারবে না।

৩. প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনা

প্রশাসনিক খাতে দুর্নীতির ফলে সরকারি কাজের গতি মন্থর হয়ে যায়। সরকারি দপ্তরগুলোতে ঘুষ ও স্বজনপ্রীতি সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়িয়ে দেয়।

পাসপোর্ট, জমির কাগজপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, নাগরিকত্ব সনদসহ নানা সরকারি সেবা পেতে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেও যদি ঘুষ না দেওয়া হয়, তবে তাদের কাজ আটকে রাখা হয় বা অযথা জটিলতা সৃষ্টি করা হয়। ফলে জনগণের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা কমে যায় এবং অনেকে বিকল্প অবৈধ পথ খোঁজার চেষ্টা করে।

৪. নৈতিক অবক্ষয় ও মূল্যবোধের সংকট

একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজে সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও নৈতিকতার চর্চা কমে যায়। যখন উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকে, তখন সমাজের সাধারণ জনগণও স্বাভাবিকভাবে এটি গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরে নেয়।

শিক্ষক, প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দুর্নীতি সমাজের তরুণ প্রজন্মের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তরুণরা তখন মনে করে, সৎভাবে কিছু করা সম্ভব নয় এবং সাফল্যের একমাত্র উপায় হলো অনৈতিক পথ বেছে নেওয়া। এর ফলে ভবিষ্যৎ সমাজে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়।

বাংলাদেশে দুর্নীতির ১১৫ প্রকার: প্রধান ধরনসমূহ
এছাড়াও এমন বহু ধরনের দুর্নীতি রয়েছে, যা প্রকাশ করা কঠিন। সমাজের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি পদক্ষেপে দুর্নীতির ছাপ স্পষ্টভাবে বিদ্যমান।

১. প্রশাসনিক দুর্নীতি

সরকারি দফতরে ঘুষ ও অনিয়ম।
ফাইল অনুমোদনের জন্য ঘুষ দাবি।
সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার।
চাকরিতে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে ঘুষ গ্রহণ।
২. রাজনৈতিক দুর্নীতি

নির্বাচনে জাল ভোট ও ভোট কেনাবেচা।
দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি।
সরকারি তহবিলের অপব্যবহার।
টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জন।
৩. পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্নীতি:

মামলা পরিচালনায় ঘুষ গ্রহণ ও প্রভাবিত করা।
অপরাধীদের সাথে আঁতাত করে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়া।
নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানি করে অর্থ আদায়।
বিচার প্রক্রিয়ায় অনৈতিক প্রভাব খাটানো।
আটক বা গ্রেফতার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও প্রতারণা।
৪. বিচার বিভাগীয় দুর্নীতি

মামলার শুনানি ও রায়ের ক্ষেত্রে ঘুষ।
মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারকদের অনৈতিক লেনদেন।
আইনজীবীদের মাধ্যমে মামলার রায় প্রভাবিত করা।
আইনের অপব্যবহার করে প্রভাবশালী অপরাধীদের রক্ষা করা।
আদালতের নথিপত্র জালিয়াতি।
পুলিশের মাধ্যমে মামলায় হস্তক্ষেপ ও প্রমাণ নষ্ট করা।
· বিচারকের উপর প্রভাব সৃষ্টি

· ভুয়া মামলার সৃষ্টি

· আইনি পরামর্শে দুর্নীতি

৫. ভূমি ও গৃহায়ন সংক্রান্ত দুর্নীতি

ভুয়া জমির দলিল তৈরি ও জালিয়াতি।
নামজারি ও জমি হস্তান্তরে ঘুষ।
ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়ম ও দুর্নীতি।
সরকারি সম্পত্তি বেসরকারি ব্যক্তির দখলে যাওয়া।
৬. শিক্ষা খাতে দুর্নীতি

প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জাল সার্টিফিকেট তৈরি।
ভর্তি বাণিজ্য ও কোচিং বাণিজ্য।
সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতি।
শিক্ষকদের অনুপস্থিতি ও দায়িত্ব অবহেলা।
৭. স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে দুর্নীতি

সরকারি হাসপাতালের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম চুরি ও কালোবাজারে বিক্রি।
ভুয়া চিকিৎসক দ্বারা রোগীদের প্রতারণা ও ভুয়া চিকিৎসা সনদ বাণিজ্য।
সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে ওষুধ না পাওয়া ও চিকিৎসার নামে অনৈতিক অর্থ আদায়।
বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অতিরিক্ত বিল ও প্রতারণা।
নকল ওষুধের ব্যবসা ও অনুমোদনে দুর্নীতি।
চিকিৎসকদের কমিশন বাণিজ্য ও ওষুধ কোম্পানির সাথে অবৈধ লেনদেন।
৮. চিকিৎসা শিক্ষা ও সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতি

চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ কেনাকাটায় অনিয়ম ও নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও স্বজনপ্রীতি।
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ব্যবহারে অনিয়ম।
৯. ব্যাংক ও আর্থিক খাতে দুর্নীতি

ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি ও ঋণখেলাপি।
অর্থপাচার ও হুন্ডি ব্যবসা।
শেয়ারবাজারে কারসাজি ও প্রতারণা।
মুদ্রাপাচার ও কর ফাঁকি।
ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন ও পাচার।
ভুয়া কোম্পানি দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ।
অবৈধ লেনদেন ও মানি লন্ডারিং।
১০. পরিবহন, যোগাযোগ ও সড়ক পরিবহন খাতে দুর্নীতি:

যানবাহনের ফিটনেস সনদ জালিয়াতি।
লাইসেন্স ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশন পেতে ঘুষ।
লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে ঘুষ প্রদান।
টোল আদায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি।
সরকারি সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণে দুর্নীতি।
মহাসড়কে অবৈধ টোল আদায়।
পরিবহন চাঁদাবাজি ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে অনিয়ম।
টোল প্লাজার অর্থ লুটপাট ও দুর্নীতি।
চালক ও পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায়।
যানবাহন নিবন্ধন, ফিটনেস ও লাইসেন্স পেতে ঘুষ লেনদেন।
সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতি ও অবৈধ চাঁদাবাজি।
পুলিশের ট্রাফিক মামলায় অনৈতিক লেনদেন।
গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও প্রতারণা।
১১. পাসপোর্ট ও অভিবাসন খাতে দুর্নীতি

পাসপোর্ট তৈরির জন্য ঘুষ গ্রহণ।
ভিসা জালিয়াতি ও মানবপাচার।
বিদেশে কর্মসংস্থানের নামে প্রতারণা।
১২. সরকারি ক্রয় ও প্রকল্প সংক্রান্ত দুর্নীতি

টেন্ডারবাজি ও কমিশন বাণিজ্য।
অবকাঠামো নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার।
প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে দুর্নীতি করা।
১৩. কর ফাঁকি ও রাজস্ব খাতে দুর্নীতি:

ব্যবসায়ীরা কর এড়াতে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান।
কর কর্মকর্তাদের সাথে ঘুষ লেনদেন করে কম কর পরিশোধ।
রাজস্ব বিভাগের দুর্নীতির ফলে সরকারি আয় কমে যাওয়া।
কর ফাঁকি দিতে ভুয়া কোম্পানি খুলে লেনদেন।
ফরমাশী (সংশোধিত) হিসাব দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ নেওয়া।
কালো টাকা সাদা করতে ভুয়া বিনিয়োগ দেখানো।
১৪. গণমাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা খাতে দুর্নীতি:

সংবাদ বিকৃতি ও মিথ্যা প্রচার।
অনলাইন প্রতারণা ও সাইবার ক্রাইম।
সরকারি তথ্য বিক্রি ও অপব্যবহার।
সরকারি ওয়েবসাইট ও ডিজিটাল সেবায় দুর্নীতি।
সাইবার ক্রাইম ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি।
ই-গভর্নমেন্ট সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব।
১৫. ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সংক্রান্ত দুর্নীতি

ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাৎ।
এনজিওদের অনিয়ম ও দুর্নীতি।
দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ।
১৬. সরকারি চাকরি, জনশক্তি, নিয়োগ ও প্রবাসী সংক্রান্ত দুর্নীতি:

সরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস।
নিয়োগ ও পদোন্নতিতে স্বজনপ্রীতি।
সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে ঘুষ দিয়ে নিয়োগ।
প্রবাসী কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতারণা।
বিদেশে কাজের জন্য প্রতারণামূলক ভিসা প্রদান।
রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায়।
দূতাবাসে নথিপত্র প্রক্রিয়াকরণে ঘুষ গ্রহণ।
১৭. পাবলিক প্রকল্প ও অবকাঠামো দুর্নীতি

রাস্তাঘাট, ব্রিজ, ভবন নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার।
অতিরিক্ত বাজেট দেখিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ।
কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন।
১৮. পানিসম্পদ, সেচ প্রকল্প ও পরিবেশ সংক্রান্ত দুর্নীতি

নদী ও খাল দখল করে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার।
নদী রক্ষা ও জলাশয় সংরক্ষণের নামে তহবিল অপচয়।
বন উজাড়, পাহাড় কাটা ও পরিবেশ ধ্বংস।
শিল্পকারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণে অনিয়ম ও ঘুষগ্রহণ।
অবৈধভাবে পানি সংরক্ষণ প্রকল্পের বরাদ্দ লুটপাট।
সেচ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় দুর্নীতি।
১৯. বীমা ও পেনশন খাতে দুর্নীতি:

ভুয়া বীমা দাবি করে অর্থ আত্মসাৎ।
বীমা দাবি অনুমোদনে দেরি ও অনিয়ম।
বীমা ক্লেইম প্রদানে অনিয়ম ও ঘুষ গ্রহণ।
জীবন ও স্বাস্থ্য বীমায় প্রতারণা।
কৃষি ও স্বাস্থ্য বীমার তহবিল অপব্যবহার।
সরকারি ও বেসরকারি পেনশন ফান্ডে দুর্নীতি।
২০. বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত দুর্নীতি

অবৈধ কমিশন ও লবিং।
বিনিয়োগ অনুমোদনে ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাব।
আমদানি-রপ্তানিতে শুল্ক ফাঁকি।
২১. ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি

হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি ও প্রতারণা।
মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম।
ধর্মীয় অনুদান ও ওয়াকফ সম্পত্তি আত্মসাৎ।
২২. খেলা, ক্রীড়া ও বিনোদন খাতে দুর্নীতি:

ক্রীড়া সংস্থায় অনিয়ম ও ঘুষ।
খেলোয়াড় নির্বাচনে স্বজনপ্রীতি ও লবিং।
সাংস্কৃতিক খাতে সরকারি অনুদানের অপব্যবহার।
খেলাধুলায় ম্যাচ ফিক্সিং ও বাজি ধরা।
সরকারি ক্রীড়া অনুদান ও উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ।
চলচ্চিত্র ও নাট্য জগতে অনৈতিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতি।
২৩. টেলিযোগাযোগ, মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত দুর্নীতি

অননুমোদিত কল রেট ও ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ নিয়ে প্রতারণা।
কল ড্রপ ও নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধানে অবহেলা।
গ্রাহকদের অপ্রয়োজনীয় সার্ভিসে বাধ্য করা।
গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ আদায়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অবৈধ চাঁদাবাজি ও তথ্য ফাঁস।
অবৈধ সিম বিক্রি ও নিবন্ধন জালিয়াতি।
২৪. স্থানীয় সরকার, ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা দুর্নীতি

ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ লুটপাট।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার অপব্যবহার।
স্থানীয় উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ।
পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ।
রাস্তা সংস্কারের নামে টাকা লুটপাট।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম।
২৫. সামাজিক নিরাপত্তা ও ভাতা সংক্রান্ত দুর্নীতি

বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণে অনিয়ম।
সরকারি অনুদান ও ভর্তুকি আত্মসাৎ।
ভুয়া উপকারভোগী তালিকা তৈরি করে অর্থ লুটপাট।
২৬. গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা খাতে দুর্নীতি

বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার অনুদান আত্মসাৎ।
ভুয়া গবেষণা ও প্রকাশনা প্রতারণা।
উচ্চশিক্ষায় ভর্তি ও বৃত্তি প্রদানে অনিয়ম।
২৭. সাংবাদিকতা ও মিডিয়া দুর্নীতি

ভুয়া সংবাদ প্রচার ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা।
মিডিয়া হাউসের রাজনৈতিক আনুগত্য ও পক্ষপাতিত্ব।
বিজ্ঞাপনের জন্য সংবাদ বিকৃতি।
বিজ্ঞাপন ও স্পন্সরের নামে অনৈতিক চুক্তি।
২৮. ই-কমার্স ও অনলাইন ব্যবসায় দুর্নীতি

গ্রাহকদের ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা।
পণ্য সরবরাহে অনিয়ম ও বিলম্ব।
ভুয়া ডিসকাউন্ট ও অফারের মাধ্যমে প্রতারণা।
২৯. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, সোশ্যাল মিডিয়া ও সাইবার দুর্নীতি:

ভুয়া আইডি ও তথ্য দিয়ে প্রতারণা করা।
অনলাইন ফ্রড ও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের দুর্নীতি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল।
ফিশিং, হ্যাকিং, সাইবার ক্রাইম ও তথ্য চুরি করে আর্থিক দুর্নীতি।
অনলাইন ব্যাংকিং প্রতারণা।
সোশ্যাল মিডিয়া ভিত্তিক মিথ্যা প্রচার ও জালিয়াতি।
ভুয়া নিউজ ও গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি।
ই-কমার্সের মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতারণা।
৩০. বন্দর ও কাস্টমস দুর্নীতি

শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ আমদানি-রপ্তানি ও পণ্য পাচার।
কাস্টমস অফিসে ঘুষ নিয়ে দ্রুত ছাড়পত্র প্রদান।
বন্দরে কাস্টমস অফিসারদের ঘুষ গ্রহণ ও অবৈধ লেনদেন।
কনটেইনার জট এড়াতে অনৈতিক অর্থ আদায়।
অবৈধ মালামাল পাচার ও চোরাকারবার।
৩১. বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ ও খনিজ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি:

অবৈধ সংযোগ প্রদান ও বিল জালিয়াতি।
বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ পেতে ঘুষ গ্রহণ।
পানির সরবরাহে অনিয়ম ও মিটার টেম্পারিং।
তেল, গ্যাস ও কয়লা খনির অনিয়ম।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ খাতে অর্থ আত্মসাৎ।
অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান।
৩২. সরকারি খাদ্য সহায়তা ও রেশন দুর্নীতি

গরিব ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল-ডাল চুরি।
টিআর (টেস্ট রিলিফ) ও কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) প্রকল্পে অনিয়ম।
ভুয়া তালিকা তৈরি করে সরকারি সহায়তা আত্মসাৎ।
৩৩. জমি ও ভূমি সংক্রান্ত দুর্নীতি

জমির খতিয়ান, পর্চা, দলিল জালিয়াতি।
ভূমি দখল ও দালালি।
সরকারি জমি বেদখল ও অবৈধ প্লট বরাদ্দ।
জমির রেজিস্ট্রেশনে ঘুষ লেনদেন।
৩৪. প্রবাসী কল্যাণ, রেমিট্যান্স ও শ্রমিক কর্মসংস্থান দুর্নীতি:

প্রবাসীদের জন্য বরাদ্দকৃত সুবিধা থেকে অর্থ আত্মসাৎ।
অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাচার।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক পরিচালনায় অনিয়ম।
বিদেশে চাকরির নামে ভুয়া এজেন্সির মাধ্যমে প্রতারণা।
প্রবাসী আয় হস্তান্তরে (রেমিট্যান্স) কমিশন বাণিজ্য ও লেনদেনের অনিয়ম।
সরকারি শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ।
৩৫. বিনিয়োগ, স্টক মার্কেট ও ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি:

শেয়ার বাজারে কৃত্রিম দাম বাড়ানো ও কমানো।
ভুয়া কোম্পানি তৈরি করে শেয়ার জালিয়াতি।
বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা।
ব্যাংক লোন জালিয়াতি ও খেলাপি ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎ।
শেয়ারবাজারে কৃত্রিম মন্দা বা উত্থান ঘটিয়ে বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ও নতুন বিনিয়োগ প্রকল্পের মাধ্যমে জালিয়াতি।
৩৬. শিক্ষা উপকরণ, পাঠ্যবই ও শিক্ষাবৃত্তি খাতে দুর্নীতি:

সরকারি বই বিতরণে অনিয়ম ও চুরি।
নকল বই ও প্রশ্নপত্র ফাঁস।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত বেতন ও ফি আদায়।
দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ।
ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত শিক্ষা উপকরণ চুরি।
মেধাবৃত্তির ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম।
৩৭. অনুদান ও দাতব্য সংস্থার দুর্নীতি

দাতব্য সংস্থার অর্থ আত্মসাৎ।
বেসরকারি সংস্থাগুলোর অনুদানের অপব্যবহার।
ভুয়া এনজিও ও চ্যারিটি সংগঠন খুলে প্রতারণা।
৩৮. দুর্যোগ সহায়তা ও ত্রাণ দুর্নীতি

বন্যা, ঘূর্ণিঝড় বা অন্যান্য দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ চুরি।
তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের না দিয়ে ভুয়া নাম ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাৎ।
ত্রাণ বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক প্রভাব।
৩৯. সরকারি পেনশন ও কল্যাণ তহবিল দুর্নীতি:

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের পেনশন পেতে ঘুষ দিতে বাধ্য করা।
ভুয়া পেনশন সুবিধাভোগীদের নামে অর্থ উত্তোলন।
কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ লুটপাট।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাতার অর্থ আত্মসাৎ।
ভুয়া নাম ব্যবহার করে ভাতা গ্রহণ।
বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতা বিতরণে দুর্নীতি।
৪০. সরকারি পেনশন ও সামাজিক নিরাপত্তা দুর্নীতি:

সরকারি পেনশন ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির অনুদান আত্মসাৎ।
কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ লুটপাট।
৪১. ক্রীড়া সংস্থা ও ফেডারেশন দুর্নীতি:

ক্রীড়া ফেডারেশন ও কমিটিতে স্বজনপ্রীতি।
খেলার মাঠ ও স্টেডিয়াম বরাদ্দে অনিয়ম।
খেলোয়াড় নির্বাচনে দুর্নীতি ও আর্থিক লেনদেন।
৪২. টেন্ডার ও কন্ট্রাক্ট দুর্নীতি

সরকারি কাজের টেন্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি।
দরপত্র না নিয়েই বিশেষ গোষ্ঠীকে কাজ দেওয়া।
নিম্নমানের কাজ করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ।
৪৩. বেসরকারি খাতে দুর্নীতি:

কর ফাঁকি ও অর্থপাচার।
ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি।
ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন।
৪৪. যোগাযোগ ও সড়ক নির্মাণ দুর্নীতি

নিম্নমানের রাস্তা ও ব্রিজ তৈরি করে সরকারি অর্থ অপচয়।
রাস্তা মেরামতের জন্য বাজেট বরাদ্দ হলেও কাজ না করা।
যানবাহন পরিচালনায় অবৈধ পারমিট প্রদান।
৪৫. বনায়ন, বনসম্পদ ও কৃষি গবেষণা খাতে দুর্নীতি:

অবৈধভাবে বন উজাড় ও কাঠ পাচার।
পরিবেশ প্রকল্পের নামে সরকারি তহবিল আত্মসাৎ।
শিল্প কারখানায় অবৈধভাবে বনভূমি বরাদ্দ।
নতুন জাতের উদ্ভাবনে গবেষণা তহবিল আত্মসাৎ।
অবৈধভাবে বনভূমি দখল ও বৃক্ষনিধন।
কৃষকদের জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান আত্মসাৎ।
৪৬. স্বাস্থ্য গবেষণা ও ওষুধ খাতে দুর্নীতি

ভুয়া ওষুধ অনুমোদন ও বিক্রি করা।
গবেষণা তহবিলের অপব্যবহার।
ওষুধের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটা।

৪৭. মানবাধিকার ও এনজিও খাতে দুর্নীতি

দাতব্য সংস্থা ও এনজিওর অনুদান আত্মসাৎ।
মানবাধিকার সংস্থার নাম ব্যবহার করে বিদেশি অনুদান হাতিয়ে নেওয়া।
প্রকৃত সাহায্যপ্রাপ্তদের না দিয়ে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সুবিধাভোগীদের সহায়তা প্রদান।
প্রকল্প অর্থের অপব্যবহার।
মানবাধিকার প্রতিবেদনগুলোর জালিয়াতি।
দাতব্য কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব।
৪৮. কারাগার ও বন্দি ব্যবস্থাপনা দুর্নীতি

বন্দিদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ আদায়।
প্রভাবশালী অপরাধীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান।
জামিন ও মুক্তির ক্ষেত্রে অনৈতিক লেনদেন।
বন্দিদের কাজের প্রতি অনৈতিক প্রভাব।
কারাগারের নিরাপত্তায় অবহেলা।
বন্দি আত্মহত্যার ক্ষেত্রে অবহেলা।
কারাগারের ভেতরে অস্বচ্ছতা।
৪৯. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা দুর্নীতি

সার, বীজ ও কৃষি উপকরণে ভেজাল ও অনিয়ম।
কৃষকদের দেওয়া ভর্তুকি থেকে অর্থ আত্মসাৎ।
বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কৃষিপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ানো।
৫০. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ ও পদোন্নতি দুর্নীতি

ঘুষের বিনিময়ে শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মচারী নিয়োগ।
গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল আত্মসাৎ।
ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদান ও ডিগ্রি বাণিজ্য।
৫১. আবাসন ও জমি উন্নয়ন খাতে দুর্নীতি:

অবৈধভাবে সরকারি জমি দখল।
আবাসন প্রকল্পের নামে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় অস্বচ্ছ চুক্তি ও প্রতারণা।
সরকারি ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি।
প্রকল্প বাস্তবায়নে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার।
ভূমি অফিসে দলিল নিবন্ধন ও নামজারি করতে ঘুষ গ্রহণ।
৫২. ধর্মীয় ও ওয়াকফ সম্পত্তি দুর্নীতি

মসজিদ, মাদ্রাসা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুদান আত্মসাৎ।
ওয়াকফ সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল ও বিক্রি।
হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি।
৫৩. ট্রেড লাইসেন্স ও ব্যবসা অনুমোদন দুর্নীতি

ব্যবসার লাইসেন্স ও অনুমোদন নিতে ঘুষ প্রদান।
সরকারি দপ্তরে বিভিন্ন অনুমতি পেতে অনৈতিক লেনদেন।
রফতানি ও আমদানি বাণিজ্যে অনিয়ম।
৫৪. আন্তর্জাতিক সাহায্য ও অনুদান দুর্নীতি

বিদেশি দাতব্য সংস্থার অর্থ অপব্যবহার।
দুর্যোগ ও পুনর্বাসন খাতে বরাদ্দকৃত অনুদান আত্মসাৎ।
বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম।
৫৫. ব্যাংক ও মোবাইল ফিন্যান্সিং দুর্নীতি

মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় অবৈধ ট্রানজেকশন।
মানি লন্ডারিং ও অর্থপাচার।
ভুয়া একাউন্ট খুলে ব্যাংক প্রতারণা।
৫৬. মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে দুর্নীতি

জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ভর্তুকির টাকা লুটপাট।
সরকারি খামার ও গবেষণা তহবিল অপব্যবহার।
মাছের খাদ্যে ভেজাল ও প্রাণিসম্পদ প্রতারণা।
৫৭. পরিবেশ ও জলবায়ু তহবিল দুর্নীতি

পরিবেশ রক্ষা প্রকল্পের অর্থ লুটপাট।
শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ ঠেকাতে অনিয়ম।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বরাদ্দকৃত অর্থ অপব্যবহার।
৫৮. অবৈধ দখল ও ভূমি দস্যুতা

সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অবৈধভাবে দখল।
খাসজমি, নদী ও জলাশয় দখল ও বিক্রি।
গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত জমি আত্মসাৎ।
৫৯. অনলাইন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম দুর্নীতি

ভুয়া অনলাইন লেনদেন ও ই-কমার্স প্রতারণা।
সরকারি অনলাইন পরিষেবায় ঘুষ ও স্বজনপ্রীতি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার ও সাইবার অপরাধ।
৬০. পানি ও সেচ প্রকল্প দুর্নীতি

গভীর নলকূপ ও সেচ সুবিধায় অনিয়ম।
নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের অর্থ লুটপাট।
সুপেয় পানির জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান আত্মসাৎ।
৬১. শ্রমিক ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল দুর্নীতি

পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন।
শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাৎ।
শ্রমিকদের নামে ভুয়া তালিকা তৈরি করে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ।
৬২. বন্যা ও দুর্যোগ ত্রাণ দুর্নীতি

বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ আত্মসাৎ।
সরকারি শেল্টার নির্মাণে নিম্নমানের কাজ।
আন্তর্জাতিক সাহায্যের অনুদান ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার।
৬৩. রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন সংক্রান্ত দুর্নীতি

নির্বাচনে অনিয়ম ও ভোট কারচুপি।
নির্বাচনী তহবিল ও প্রচারণায় কালো টাকা ব্যবহার।
রাজনৈতিক দলের ফান্ড অপব্যবহার ও ঘুষ লেনদেন।
৬৪. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পদ আত্মসাৎ ও হয়রানি

সংখ্যালঘুদের জমি ও সম্পদ অবৈধভাবে দখল।
মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে হামলা ও দখল।
সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় প্রশাসনিক অবহেলা।
৬৫. আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও মাদক ব্যবসা সম্পর্কিত দুর্নীতি:

মাদক, চোরাচালান ও অবৈধ ব্যবসায় পুলিশি সহায়তা।
মাদক ব্যবসায়ীদের থেকে ঘুষ নিয়ে তাদের রক্ষা করা।
মাদকের মামলা নিষ্পত্তিতে অনৈতিক লেনদেন।
পুলিশ ও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার মাদক ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টতা।
৬৬. আইটি ও সফটওয়্যার উন্নয়ন খাতে দুর্নীতি

সরকারি আইটি প্রকল্পে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা।
ই-গভর্নেন্স প্রকল্পে নিম্নমানের কাজ।
সফটওয়্যার কেনাকাটায় স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম।
৬৭. সরকারি গাড়ি ও সম্পদ ব্যবহারে দুর্নীতি

সরকারি গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার।
সরকারি মালিকানাধীন বাসা ও সম্পদ অবৈধভাবে ভাড়া দেওয়া।
সরকারি সরঞ্জামের অনিয়মিত ব্যবহার।
৬৮. মেগা প্রকল্প ও অবকাঠামো দুর্নীতি

বড় অবকাঠামো প্রকল্পে অতিরিক্ত বাজেট দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ।
রেলপথ, সেতু ও ফ্লাইওভার নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার।
বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতার অভাব।
৬৯. বিনোদন ও মিডিয়া দুর্নীতি

সরকারি তথ্য মন্ত্রণালয়ের ফান্ড অপব্যবহার।
সিনেমা ও টিভি নাটক প্রযোজনায় কালো টাকার লেনদেন।
বিজ্ঞাপন প্রচারে অবৈধ কমিশন বাণিজ্য।
৭০. খুন এবং হত্যাকাণ্ড:

রাজনৈতিক সহিংসতা: রাজনৈতিক বিরোধে খুন।
পারিবারিক খুন: পারিবারিক দ্বন্দ্বে খুন।
অপরাধী দল দ্বারা খুন: গ্যাংস্টারদের খুন।
৭১. চুরি এবং ডাকাতি:

চুরি: ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানে চুরি।
ডাকাতি: সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা।
৭২. নারী ও শিশু নির্যাতন:

যৌন নির্যাতন: জোরপূর্বক যৌন আক্রমণ।
শিশু নির্যাতন: শিশুদের শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন।
পারিবারিক সহিংসতা: পরিবারের মধ্যে শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন।
৭৩. ভিক্ষাবৃত্তি এবং মানব পাচার:

ভিক্ষাবৃত্তি: শিশু ও প্রতিবন্ধীদের দিয়ে ভিক্ষা করানো।
মানব পাচার: নারী ও শিশু পাচার করা।
৭৪. ভ্রাম্যমাণ অপরাধ

রাস্তায় ছিনতাই
মোবাইল ফোন ছিনতাই
পকেটমার
৭৫. বাজারে কারসাজি এবং প্রতারণা

· মূল্য বাড়ানো

· ভেজাল দ্রব্য বিক্রি

· কৃষিপণ্যে ভেজাল

৭৬. প্রাকৃতিক সম্পদ চুরি

· বনজসম্পদ চুরি

· খনিজ সম্পদ চুরি

· বালু উত্তোলন

৭৭. আত্মহত্যার প্ররোচনা

· আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা

· সামাজিক বা পারিবারিক নির্যাতন

· মানসিক নির্যাতন

৭৮. অশ্লীলতা এবং পর্নোগ্রাফি

· পর্নোগ্রাফি তৈরি ও বিতরণ

· অনলাইন নির্যাতন

· অশ্লীল ভাষা ব্যবহার

৭৯. প্রকৃতির ক্ষতি

· বনাঞ্চল উজাড়

· জলাভূমি দখল

· পরিবেশ দূষণ

৮০. ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড

· সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর

· সন্ত্রাসী হামলা

· গ্যাস বা অন্যান্য বিপজ্জনক উপকরণের অপব্যবহার

৮১. আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন

· মিছিল ও প্রতিবাদে সহিংসতা

· পুলিশের ওপর হামলা

· জনসাধারণের শান্তি ভঙ্গ

৮২. ধর্মীয় সহিংসতা

· ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সহিংসতা

· মন্দির, মসজিদ বা অন্যান্য ধর্মীয় স্থানে হামলা

· ধর্মীয় অনুভূতি আহত করা

৮৩. অশিক্ষা এবং সামাজিক অবহেলা

· শিক্ষা ব্যবস্থা অবহেলা

· শিশুদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা

· কমিউনিটি বা সমাজের অবহেলা

৮৪. যাত্রাপথে অপরাধ

· রাস্তায় চুরি বা ছিনতাই

· গাড়ির কাচ ভেঙে মালামাল চুরি

· অজ্ঞান পার্টি ও ডাকাতি

৮৫. সামাজিক অবমাননা ও উস্কানী

· সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো

· নিন্দনীয় বা আপত্তিকর মন্তব্য করা

· বিদ্বেষমূলক কার্যকলাপ প্রচার

৮৬. ব্যক্তিগত আক্রমণ ও হুমকি

· শারীরিক আক্রমণ

· মৌখিক বা সামাজিক হুমকি

· ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজি

৮৭. আইনজীবী ও বিচারক দুর্নীতি

· বিচারকের উপর প্রভাব সৃষ্টি

· ভুয়া মামলার সৃষ্টি

· আইনি পরামর্শে দুর্নীতি

৮৯. পরিবেশ দূষণ

· শিল্প কারখানার বর্জ্য ফেলা

· গাছপালা নিধন

· পানি, বায়ু বা মাটি দূষণ

৯০. পদত্যাগের পর দুর্নীতি

· সরকারের পদত্যাগী কর্মকর্তাদের দুর্নীতি

· অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের অপরাধী কার্যক্রম

· অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবৈধ লেনদেন

৯১. অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার

· অবৈধ অস্ত্র বিক্রি ও পাচার

· সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড

· রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করা

৯২. ভৌগলিক দুর্নীতি

· জমি দখল ও অবৈধ দখল

· পরিবেশগত নীতির লঙ্ঘন

· সরকারি জমি বা সম্পত্তি অপব্যবহার

৯৩. মানবাধিকার লঙ্ঘন

· রাজনৈতিক বন্দী নির্যাতন

· সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ

· গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ

৯৪. অবৈধ তথ্য সংগ্রহ

· হ্যাকিং বা সাইবার অপরাধ

· ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও বিক্রি

· ইন্টারনেট বা ডিজিটাল নিরাপত্তা লঙ্ঘন

৯৫. সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি

· ধর্মীয় বা জাতিগত বিদ্বেষ প্রচার

· সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করা

· গণহত্যার প্রচেষ্টা

৯৬. সরকারি সেবা খাতে দুর্নীতি

· সরকারি প্রকল্পের তহবিল তছরুপ

· অনৈতিকভাবে সরকারি সেবা বিতরণ

· সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধ কাজ

৯৭. কৃত্রিম মূল্য বৃদ্ধি

· দামের অপব্যবহার ও মূল্যস্ফীতি

· জালিয়াতি করে পণ্যের দাম বাড়ানো

· ভোগ্যপণ্যের অভাব সৃষ্টি করা

৯৮. পরিষেবা খাতে দুর্নীতি

· চিকিৎসা খাতে দুর্নীতি

· শিক্ষা খাতে অনিয়ম

· পরিবহন খাতে দুর্নীতি

৯৯. অনৈতিক ব্যবসা ও বাণিজ্য

· জাল ও নকল পণ্য বিক্রি

· স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টিকারী পণ্য বিক্রি

· শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন করা

১০০. ভোটাধিকার ও নির্বাচনী অপরাধ

· ভোট জালিয়াতি এবং ভোটের কারচুপি

· নির্বাচনী সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন

· নির্বাচনী তহবিলের অপব্যবহার

১০১. মাদক ব্যবসা

· মাদক দ্রব্য চোরাচালান

· মাদক সেবন এবং ছড়িয়ে পড়া

· মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধের সংগঠন

১০২. জঙ্গি কার্যক্রম ও সন্ত্রাসী সহিংসতা

· জঙ্গি সংগঠন সমর্থন করা

· সন্ত্রাসী হামলা ও পরিকল্পনা

· মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আতঙ্ক সৃষ্টি

১০৩. অনুপ্রবেশ ও সীমান্ত অপরাধ

· অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং সীমান্ত পারাপার

· সীমান্ত নিরাপত্তা লঙ্ঘন

· অবৈধ শরণার্থী বা অভিবাসী চক্র

১০৪. ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম

· পরিবেশের ক্ষতি করা

· বন ও প্রকৃতি ধ্বংস

· বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার

১০৫. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সহায়তা তহবিল অপব্যবহার

· দুর্যোগের সময় ত্রাণ তহবিলের চুরি

· দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি

· ত্রাণ সামগ্রী অসৎ উদ্দেশ্যে বিতরণ

১০৬. কৃত্রিম পণ্য এবং পেটেন্ট চুরি

· কৃত্রিম পণ্য উৎপাদন ও বিপণন

· পেটেন্ট চুরির মাধ্যমে ভুয়া পণ্য বাজারজাত করা

· কপিরাইট এবং ট্রেডমার্ক চুরির ঘটনা

১০৭. অপরাধী গ্যাং এবং চক্র

· অপরাধী দল গঠন এবং তাদের কার্যক্রম

· অবৈধ ব্যবসা এবং মাদক চক্র

· সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সংগঠন

১০৮. কর্মস্থলে অসদাচরণ এবং নিপীড়ন

· যৌন হেনস্তা ও সহকর্মীদের প্রতি অত্যাচার

· কর্মক্ষেত্রে অবিচার এবং দুর্নীতি

· শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘন

১০৯. অশ্লীলতা এবং পাবলিক অর্ডার লঙ্ঘন

· পাবলিক প্লেসে অশ্লীল আচরণ

· শোরগোল বা জনস্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা বিপন্ন করা

· অশ্লীল বই, ভিডিও বা সামগ্রী বিতরণ

১১০. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত অপরাধ

· অবৈধ বনজ সম্পদ দখল ও পাচার

· জলাধার ও নদী দূষণ

· অবৈধ মাটি খনন এবং ভূমি অপরাধ

১১১. বিভিন্ন ধরনের চাঁদাবাজি

· ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়

· প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হুমকি ও চাঁদাবাজি

· নির্দিষ্ট এলাকায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে চাঁদাবাজি

১১২. পণ্য মান নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতি

· নিম্নমানের পণ্য বাজারে বিক্রি

· খাদ্যপণ্য বা ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া

· স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পণ্যতে ভেজাল বা দূষণ

১১৩. নিষিদ্ধ পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি

· ভেজাল ও ক্ষতিকারক ওষুধ বিক্রি

· নিষিদ্ধ কসমেটিকস ও খাদ্যপণ্য আমদানি

১১৪. পর্যটন খাতে অপরাধ

· বিদেশি পর্যটকদের হয়রানি

· পর্যটন এলাকায় অবৈধ বাণিজ্য

১১৫. প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধদের ওপর সহিংসতা

· অসহায়দের সম্পদ আত্মসাৎ

· বৃদ্ধাশ্রমে অবহেলা ও নির্যাতন

 

দুর্নীতি দমনে করণীয়

বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যেখানে সরকার, জনগণ, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করবে। দুর্নীতি দমনে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য।

১. আইনের কঠোর প্রয়োগ: দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন কার্যকর করতে হলে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধে একমাত্র আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করলে এর প্রতিরোধ সম্ভব। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যেন তারা বুঝতে পারে যে সমাজে তাদের কোনো স্থান নেই এবং আইনের ঊর্ধ্বে কোনো ব্যক্তি থাকতে পারে না।

২. প্রশাসনিক স্বচ্ছতা: সরকারি ক্রয়-বিক্রয় এবং আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ই-গভর্নেন্স ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করলে দুর্নীতির সুযোগ কমে যাবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে সকল লেনদেন স্বচ্ছ এবং সহজে যাচাইযোগ্য হবে, যা দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ সৃষ্টি করবে।

৩. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধে আগ্রহ এবং অংশগ্রহণ তৈরির জন্য শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতা, সততা ও দেশপ্রেমের উপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে, যাতে আগামী প্রজন্মের মধ্যে সততার সংস্কৃতি গড়ে উঠতে পারে।

৪. গণমাধ্যমের ভূমিকা: স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসঙ্গতিপূর্ণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা যেতে পারে। তাদের প্রতিবেদন এবং অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।

৫. প্রশাসনিক সংস্কার: দুর্নীতির মোকাবিলায় প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত বেশি। স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, ঘুষ ও স্বজনপ্রীতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সরকারি দপ্তরে নিয়োগ, পদোন্নতি এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের দুর্নীতি বা পক্ষপাতিত্ব না ঘটে, সে জন্য প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত করতে হবে।

এই সব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে, যেখানে আইন, শৃঙ্খলা, এবং নৈতিকতা প্রতিষ্ঠিত থাকবে।

উপসংহার

বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্নীতি একটি জাতির অগ্রগতির পথে বড় বাধা হিসেবে কাজ করে এবং এটি যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তবে দেশের উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হবে। দুর্নীতির ফলে শুধু সরকারেরই ক্ষতি হয় না, বরং সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রাও চরমভাবে প্রভাবিত হয়। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই একটি একক দায়িত্ব নয়, এটি একটি জাতীয় আন্দোলন। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণেরও উচিত সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।

যদি সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে মানুষ সততা ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ায় এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, তাহলে শুধুমাত্র সরকার নয়, পুরো সমাজ এই লড়াইয়ে অংশ নিতে পারবে। একতা, সততা, এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। দেশের প্রতিটি নাগরিক, সরকার, এবং প্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করতে হবে। সবাই যদি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে, তবে বাংলাদেশ একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ হয়ে উঠবে, যেখানে প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।