ঢাকা ০৮:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন রাত বিমানবন্দরে আটকে থেকে দেশে ফিরলেন নাহিদ-রিশাদ

স্পোর্টস ডেস্ক
  • Update Time : ০৪:১৩:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • / ১৪ Time View

বাংলাদেশ জাতীয় দলের দুই উদীয়মান ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় তিন রাত আটকে থাকতে হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দুই উদীয়মান ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনকে।

ইমিগ্রেশন সমস্যার কারণে বুধবার দুপুরে পৌঁছানোর পর দলের অন্য সদস্যরা বেরিয়ে গেলেও এই দুই ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র না পাওয়ায় শুক্রবার রাত ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বিমানবন্দরে।

ইমিগ্রেশন জটিলতায় তিন দিন বিমানবন্দরে আটকা থাকার পর শুক্রবার রাতে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। সব জটিলতা কাটিয়ে সিরিজের প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলতে পারবেন তারা দুজন।

বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান ইফতেখার আহমেদ মিঠু শনিবার নিশ্চিত করেছেন এই খবর। রিশাদ ও নাহিদকে বিমানবন্দরে আটকে রাখার কারণ সুনির্দিষ্ট কারণ জানে না বিসিবিও।

ইফতেখার আহমেদ জানান, দুজনের কাগজপত্র পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এক পর্যায়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন রিশাদ ও নাহিদ।

“১৪ তারিখ দলের সঙ্গেই গিয়েছিল রিশাদ ও নাহিদ। ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে সবাই বের হলেও, ওদের দুজনকে তখন অনুমতি দেওয়া হয়নি। বরং ওদের কাগজপত্র দেখে ওপরে নিয়ে যাওয়া হয়।”

“একটা পর্যায়ে ওদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছিলাম না আমরা। ওদের কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ঠিকঠাক ভিসা করিয়েই পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ওদের কেন আটকে দেওয়া হয়েছিল, সেটি আসলে নিশ্চিত নই।”

পরিস্থিতি সামাল দিতে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড ও দুবাইয়ে বাংলাদেশের হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিসিবি।

“এমন অবস্থায় আমাদের এখানে বসে যা যা করার, সবই করেছি। আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। হাই কমিশনের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। সব কিছু সমাধান করে শুক্রবার রাত আড়াইটায় রিশাদ ও নাহিদকে বিমানবন্দর থেকে বের হতে দেওয়া হয়েছে।”

“আমরা আসলে নিশ্চিতভাবে জানি না, কী কারণে ওদের বিমানবন্দরে রেখে দেওয়া হয়েছিল।আর ইমিগ্রেশন থেকে তো সাধারণত এসব তথ্য দেওয়া হয় না। আমরাও বা কাকে জিজ্ঞেস করব এই বিষয়ে?”

চলতি মাসেই ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আগে রিশাদ ও নাহিদ ছিলেন পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল)। নিরাপত্তা শঙ্কায় টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ফ্লাইটে গত ৯ মে রাতে পাকিস্তান ছেড়ে দুবাইয়ে যান তারা।

পরদিনই দুজন চলে আসেন বাংলাদেশে। বিসিবির ধারণা, পাকিস্তান থেকে দুবাই যাত্রার ওই সময়েই কোনো কাগুজে প্রক্রিয়া হয়তো বাকি ছিল রিশাদ ও নাহিদের।

“ধারণা করছি, পিএসএল থেকে যখন ওরা দুজন দুবাই এসেছিল, তখন কিন্তু ওই দেশের ভিসা ছিল না। বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় ওরা দুবাইয়ে যায়। পরে আবার বাংলাদেশে চলে আসে। তো তখন হয়তো কোনো পেপারওয়ার্ক বাকি ছিল। আমরা এটা ধারণা করছি। নিশ্চিতভাবে আসলে বলা যাচ্ছে না কেন এমন হলো।”

এর আগে, গত ১০ মে পাকিস্তান থেকে সরাসরি দুবাই হয়ে ঢাকায় ফিরেছিলেন নাহিদ ও রিশাদ। এরপর চার দিন পার হতেই আবারও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের জন্য দলের প্রথম বহরে যোগ দিয়ে তারা ফের দুবাইয়ে পৌঁছান। তখনই তাদের আটকানোর ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ হাই কমিশন ও আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের হস্তক্ষেপে শেষমেশ ছাড়পত্র পেয়েছেন দুই ক্রিকেটার বলে জানা গেছে। তবে এই সময়ের মধ্যে দলের অনুশীলনের দুটি দিন মিস করেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি পর্বে ছিলেন না নাহিদ ও রিশাদ।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না দিলেও অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

আজ (শনিবার) থেকে শুরু হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে সোমবার একই মাঠে, একই সময়ে।

নাহিদ ও রিশাদের অনাকাঙ্ক্ষিত এই অভিজ্ঞতা মাঠের খেলায় কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটি এখন সময়ই বলে দেবে। তবে জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সফরের শুরুতেই এমন ঘটনায় কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে প্রস্তুতি প্রক্রিয়া।

সব জটিলতা কাটিয়ে প্রথম ম্যাচ শুরুর ১৮ ঘণ্টা বাকি থাকতে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রিশাদ ও নাহিদ। আমিরাতে পৌঁছে বাংলাদেশ দল দুই দিন অনুশীলন করলেও সেখানে থাকতে পারেননি তারা।

তাই প্রথম ম্যাচে রিশাদ ও নাহিদকে একাদশে নামানো হবে কি না, এখন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু প্রথম টি-টোয়েন্টি।

Please Share This Post in Your Social Media

তিন রাত বিমানবন্দরে আটকে থেকে দেশে ফিরলেন নাহিদ-রিশাদ

স্পোর্টস ডেস্ক
Update Time : ০৪:১৩:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় তিন রাত আটকে থাকতে হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের দুই উদীয়মান ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনকে।

ইমিগ্রেশন সমস্যার কারণে বুধবার দুপুরে পৌঁছানোর পর দলের অন্য সদস্যরা বেরিয়ে গেলেও এই দুই ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র না পাওয়ায় শুক্রবার রাত ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বিমানবন্দরে।

ইমিগ্রেশন জটিলতায় তিন দিন বিমানবন্দরে আটকা থাকার পর শুক্রবার রাতে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রিশাদ হোসেন ও নাহিদ রানা। সব জটিলতা কাটিয়ে সিরিজের প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলতে পারবেন তারা দুজন।

বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান ইফতেখার আহমেদ মিঠু শনিবার নিশ্চিত করেছেন এই খবর। রিশাদ ও নাহিদকে বিমানবন্দরে আটকে রাখার কারণ সুনির্দিষ্ট কারণ জানে না বিসিবিও।

ইফতেখার আহমেদ জানান, দুজনের কাগজপত্র পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এক পর্যায়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন রিশাদ ও নাহিদ।

“১৪ তারিখ দলের সঙ্গেই গিয়েছিল রিশাদ ও নাহিদ। ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে সবাই বের হলেও, ওদের দুজনকে তখন অনুমতি দেওয়া হয়নি। বরং ওদের কাগজপত্র দেখে ওপরে নিয়ে যাওয়া হয়।”

“একটা পর্যায়ে ওদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছিলাম না আমরা। ওদের কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ঠিকঠাক ভিসা করিয়েই পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ওদের কেন আটকে দেওয়া হয়েছিল, সেটি আসলে নিশ্চিত নই।”

পরিস্থিতি সামাল দিতে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড ও দুবাইয়ে বাংলাদেশের হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিসিবি।

“এমন অবস্থায় আমাদের এখানে বসে যা যা করার, সবই করেছি। আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। হাই কমিশনের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। সব কিছু সমাধান করে শুক্রবার রাত আড়াইটায় রিশাদ ও নাহিদকে বিমানবন্দর থেকে বের হতে দেওয়া হয়েছে।”

“আমরা আসলে নিশ্চিতভাবে জানি না, কী কারণে ওদের বিমানবন্দরে রেখে দেওয়া হয়েছিল।আর ইমিগ্রেশন থেকে তো সাধারণত এসব তথ্য দেওয়া হয় না। আমরাও বা কাকে জিজ্ঞেস করব এই বিষয়ে?”

চলতি মাসেই ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আগে রিশাদ ও নাহিদ ছিলেন পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল)। নিরাপত্তা শঙ্কায় টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ফ্লাইটে গত ৯ মে রাতে পাকিস্তান ছেড়ে দুবাইয়ে যান তারা।

পরদিনই দুজন চলে আসেন বাংলাদেশে। বিসিবির ধারণা, পাকিস্তান থেকে দুবাই যাত্রার ওই সময়েই কোনো কাগুজে প্রক্রিয়া হয়তো বাকি ছিল রিশাদ ও নাহিদের।

“ধারণা করছি, পিএসএল থেকে যখন ওরা দুজন দুবাই এসেছিল, তখন কিন্তু ওই দেশের ভিসা ছিল না। বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় ওরা দুবাইয়ে যায়। পরে আবার বাংলাদেশে চলে আসে। তো তখন হয়তো কোনো পেপারওয়ার্ক বাকি ছিল। আমরা এটা ধারণা করছি। নিশ্চিতভাবে আসলে বলা যাচ্ছে না কেন এমন হলো।”

এর আগে, গত ১০ মে পাকিস্তান থেকে সরাসরি দুবাই হয়ে ঢাকায় ফিরেছিলেন নাহিদ ও রিশাদ। এরপর চার দিন পার হতেই আবারও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের জন্য দলের প্রথম বহরে যোগ দিয়ে তারা ফের দুবাইয়ে পৌঁছান। তখনই তাদের আটকানোর ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ হাই কমিশন ও আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের হস্তক্ষেপে শেষমেশ ছাড়পত্র পেয়েছেন দুই ক্রিকেটার বলে জানা গেছে। তবে এই সময়ের মধ্যে দলের অনুশীলনের দুটি দিন মিস করেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি পর্বে ছিলেন না নাহিদ ও রিশাদ।

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না দিলেও অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

আজ (শনিবার) থেকে শুরু হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়। দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে সোমবার একই মাঠে, একই সময়ে।

নাহিদ ও রিশাদের অনাকাঙ্ক্ষিত এই অভিজ্ঞতা মাঠের খেলায় কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটি এখন সময়ই বলে দেবে। তবে জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ সফরের শুরুতেই এমন ঘটনায় কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে প্রস্তুতি প্রক্রিয়া।

সব জটিলতা কাটিয়ে প্রথম ম্যাচ শুরুর ১৮ ঘণ্টা বাকি থাকতে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন রিশাদ ও নাহিদ। আমিরাতে পৌঁছে বাংলাদেশ দল দুই দিন অনুশীলন করলেও সেখানে থাকতে পারেননি তারা।

তাই প্রথম ম্যাচে রিশাদ ও নাহিদকে একাদশে নামানো হবে কি না, এখন সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু প্রথম টি-টোয়েন্টি।