ঢাকা ০৫:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪, ৪ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিনদফা দাবিতে বেরোবি শিক্ষকদের কর্মবিরতি

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো
  • Update Time : ০৯:২৬:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪
  • / ১৯ Time View

সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রত্যয় স্কিম প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্তকরণ এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের তিনদফা দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শিক্ষক সমিতি।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে অবস্থান নিয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে শিক্ষকরা।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তবে পরীক্ষাসমূহ এ কর্মসূচির আওতামুক্ত ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদের সঞ্চালনায় এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিজন মোহন চাকীর সভাপতিত্বে কর্মবিরতিতে বক্তারা বলেন, প্রত্যয় স্কিমটি নামে সর্বজনীন হলেও আদৌতে সর্বজনীন নয়। সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান―সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে একে সর্বজনীন বলার সুযোগ নেই। স্কিমটি যদি সত্যিই সর্বজনীন হয়ে থাকে তবে একে অধিকতর সর্বজনীন করার জন্য সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকেও এর আওতায় আনা হোক। তা না হলে তড়িঘড়ি করে জারি করা এই অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক স্কিম অবিলম্বে বাতিল করা হোক।

বক্তারা আরো বলেন, এই প্রজ্ঞাপন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর শিক্ষা দর্শনের প্রতি চরম অবমাননা। দেশ স্বাধীনতা লাভের পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বায়ত্বশাসন প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। শিক্ষকদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন; এরই ধারাবাহিকতায় আরো স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কখনই যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ প্রতিবাদ নীতি নির্ধারকসহ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং বৈষম্যমূলক এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে। সেইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আলাদা স্বতন্ত্র বেতনকাঠানো প্রণয়নসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিজস্ব পরিচয় রয়েছে, নিজস্ব সিন্ডিকেট রয়েছে, সিনেট রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কখনই যায় না। আমরা আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ প্রতিবাদ নীতি নির্ধারকসহ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং বৈষম্যমূলক এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে। সেইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আলাদা স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়নসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি একাত্মতা পোষণ করে সব ধরনের কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান বক্তারা।

প্রসঙ্গত, তিন দফা দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহবানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে গত ১৪ মে ক্যাম্পাসের রাসেল চত্বরে কালো ব্যাজ ধারণ করে মৌনমিছিল, ২৬ মে মানববন্ধন এবং ২৮ মে একই দাবিতে দু’ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।

Please Share This Post in Your Social Media

তিনদফা দাবিতে বেরোবি শিক্ষকদের কর্মবিরতি

Update Time : ০৯:২৬:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রত্যয় স্কিম প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্তকরণ এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের তিনদফা দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শিক্ষক সমিতি।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে অবস্থান নিয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে শিক্ষকরা।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। তবে পরীক্ষাসমূহ এ কর্মসূচির আওতামুক্ত ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদের সঞ্চালনায় এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিজন মোহন চাকীর সভাপতিত্বে কর্মবিরতিতে বক্তারা বলেন, প্রত্যয় স্কিমটি নামে সর্বজনীন হলেও আদৌতে সর্বজনীন নয়। সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান―সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে একে সর্বজনীন বলার সুযোগ নেই। স্কিমটি যদি সত্যিই সর্বজনীন হয়ে থাকে তবে একে অধিকতর সর্বজনীন করার জন্য সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকেও এর আওতায় আনা হোক। তা না হলে তড়িঘড়ি করে জারি করা এই অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক স্কিম অবিলম্বে বাতিল করা হোক।

বক্তারা আরো বলেন, এই প্রজ্ঞাপন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর শিক্ষা দর্শনের প্রতি চরম অবমাননা। দেশ স্বাধীনতা লাভের পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়সহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বায়ত্বশাসন প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন। শিক্ষকদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন; এরই ধারাবাহিকতায় আরো স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কখনই যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ প্রতিবাদ নীতি নির্ধারকসহ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং বৈষম্যমূলক এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে। সেইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আলাদা স্বতন্ত্র বেতনকাঠানো প্রণয়নসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিজস্ব পরিচয় রয়েছে, নিজস্ব সিন্ডিকেট রয়েছে, সিনেট রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কখনই যায় না। আমরা আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ প্রতিবাদ নীতি নির্ধারকসহ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং বৈষম্যমূলক এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে। সেইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আলাদা স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো প্রণয়নসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি একাত্মতা পোষণ করে সব ধরনের কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান বক্তারা।

প্রসঙ্গত, তিন দফা দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহবানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে গত ১৪ মে ক্যাম্পাসের রাসেল চত্বরে কালো ব্যাজ ধারণ করে মৌনমিছিল, ২৬ মে মানববন্ধন এবং ২৮ মে একই দাবিতে দু’ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।