তারেক রহমানের নাম ভাঙ্গিয়ে মওকাবাজরা তৎপর : এখনই রাশ টানা দরকার

- Update Time : ১১:১৪:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪১ Time View
গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের আপামর গণমানুষের আকাংখা হয়ে উঠে আকাশচুম্বী। মানুষ নিশ্চিত ধরে নিয়েছিল ১৭ বছরের জগদ্দল পাথর যেহেতু জাতির ঘাড় থেকে নামতে বাধ্য হয়েছে এবার দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। এদেশে আবার ফিরবে গণতন্ত্র। বন্ধ হবে রাহাজানি, চাঁদাবাজি, দখল-বেদখল, রাস্তাঘাটে ছিনতাই-ডাকাতি, খুণ-ধর্ষণ।
কিন্তু জনগণ অবাক বিস্ময়ে দেখতে পেল একদল হায়েনার পলায়নের পর নতুন আরেক দলের উদ্ভব হয়েছে। এবার চাঁদাবাজিতে নাম দেয়া হচ্ছে বিএনপির।
অবশ্য খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি যতটা না চাঁদাবাজি করছে তার চেয়ে বেশী তারা ষড়যন্ত্রের জালে আটকা পড়ছে। বিগত দিনের চাঁদাবাজরাই রাতারাতি ভোল পাল্টে বিএনপির কতিপয় সুবিধাবাদীর সাথে মিশে গিয়ে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে বদনাম হচ্ছে পুরো বিএনপির।
বিএনপি তথা জাতির আশা-আকাংখার প্রতীক তারেক রহমান বার বার হুঁশিয়ারী দিয়েও এই চিহ্নিত চাঁদাবাজ গোষ্ঠীকে সামলাতে পারছে না। অবশ্য ইতোমধ্যে অনেককে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এই বিপথগামীদের অপ-তৎপরতারোধে অনেকের মতে, তারেক রহমান যদি দেশে এসে হাল ধরতেন তবে হয়তো পরিস্থিতি আবার রাতারাতি পাল্টে যেত। কিন্তু এ বিষয়টিতো হয়ে দাঁড়িয়েছে সময় সাপেক্ষ। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায়।
এদিকে জামায়াতের একশ্রেণীর নেতা-কর্মীও অপকর্মে লিপ্ত। যদিও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এটি মানতে নারাজ। তবে বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন।
অন্যদিকে নবগঠিত তরুণদের দল এনসিপিও চাঁদাবাজির দিক থেকে কম যান না। শোনা যায়, শুধুমাত্র তারা দেশব্যাপী ঘুরে ঘুরে যে প্রোগ্রাম করছে তাতে দৈনিক খরচ হচ্ছে ৮ কোটি টাকা।
চাট্টিখানি কথা নয়! সবার প্রশ্ন এই টাকার উৎস কি? কোথা থেকে আসে এই টাকা? কে দেয় তাদের এত টাকা। অবশ্য ইতোমধ্যে তারা একাধিকার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছে। তারা বলেছে, দেশের কিছু ধনাঢ্য মানুষ তাদের সহযোগিতা করছে। এই ধনাঢ্য মানুষগুলো কারা? এখানেও প্রশ্ন, তাহলে কি তাদের এটা চাঁদাবাজি না? অবশ্য অনেকে ব্যাখ্যা দিয়ে বলে থাকেন, এনসিপি নিলে ‘ডোনেশন’ জামায়াত নিলে ‘হাদিয়া, আর কেবল বিএনপিই চাঁদাবাজি করে। মোক্ষম কথা বটে!
শোনা যায়, ধনাঢ্যদের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ, হামিম গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপের কাছ থেকে এনসিপি ‘মোটা অংকে’র টাকা নিয়েছে।’ এগুলো জানা গেলেও আরো অনেক গ্রুপ তো আছে দেশে। তাদের কেউ এনসিপির কাছ থেকে রেহাই পায়নি।
দেশবাসীর আশা-ভরসার নাম তারেক রহমান। তাকে ক্ষমতায় বসতে হলে বিএনপির নামেই বসতে হবে। তবে কতিপয় চরম সুবিধাবাদী বিএনপি নামধারীদের অপ-তৎপরতায় মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত। তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাদের মন্তব্য হচ্ছে, ক্ষমতার ধারে-কাছে না যেতেই চরম সুবিধাবাদীরা যা করছেন তাতে মানুষ আশাহত না হয়ে পারে না।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বছর যেতে না যেতেই কেউ কেউ ৪০ লক্ষ টাকার গাড়ী কিনে ফেললেন। আবার আরেকজন অনলাইন পোর্টালের নামে চোখ ধাঁধাঁনো অফিস করলেন। সেখানে আবার টক-শো প্রোগ্রামও চালু করেছেন। ওই টক-শোতে যাদেরকে দিয়ে কথা বলাচ্ছেন, তাদের অনেকেই প্রেসক্লাবে বসে প্রতিদিন বিএনপিকে গালাগাল করে থাকেন। বিএনপি চোর-বাটপারদের দল, চাঁদাবাজদের দল। তারেক রহমান লন্ডনে বসে চাঁদার টাকায় বিলাসী-জীবন যাপন করেন। তার এইসব বক্তব্যের কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ভয়ংকর আক্রমণাত্মক ভাষায় গালাগাল করেন। এটই যদি হয় বাস্তব অবস্থা। তাহলে তো মানুষ আশাহত হবেই।
‘ওই অন-লাইন পোর্টালের মালিক ভদ্রলোককে একটু সামান্য পরিচয় করিয়ে দিতে হয় পাঠককে। তিনি অতীতে তেমন কোন ভাল অর্থাৎ বহুল প্রচারিত পত্রিকায় কাজ করেননি। বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার সময় তিনি দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত বার্তা সম্পাদক ছিলেন। সেই সুবাদে প্রতিদিন সচিবালয়ে ঘোরাঘুরি করতেন। প্রায় প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ছিল তার বিচরণ ক্ষেত্র। বিশেষ করে সে সময়কার গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন হয়ে উঠেছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রতিদিনই মন্ত্রীদের সঙ্গেঁ দু’চার কথা আলোচনা করে এসে পরদিন দিনকালের প্রথম পাতায় তিন কলাম/চার কলাম হেডিং দিয়ে বিশাল সংবাদ ছেপে দিতেন। আর মন্ত্রীরা হয়ে যেতেন গদগদ। এভাবেই তার উত্থান। স্ত্রীর প্রাইমারী স্কুলের চাকরি, নিজ এলাকায় নিজের নামে ট্রেনিং কলেজ, ঢাকায় কোটি টাকার ফ্ল্যাট হালে কুতুবখালীতে ৭ তলা বাড়িও করেছেন। সে সময় বন্ধুরা বলতেন, ৬০টা মন্ত্রণালয়ের একটা মাত্র ‘কা’।
জাতীয় প্রেসক্লাব যখন শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামীপন্থীরা দখল করে নেয় তখন ছিলেন সেই কমিটির সহ-সভাপতি। রাতারাতি ভোল পাল্টে সেই সুবিধাভোগী হয়ে গেলেন জাতীয়তাবাদী। তিনি নাকি জিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক। বর্তমানে আবার বিএনপির অন্যতম কান্ডারী। তাই জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের প্রশ্ন, ‘তারেক রহমান কিভাবে এই জাতীয় লোকদের প্রশ্রয় দেন? তাই যদি দেন, তাহলে আমরা পড়বো বিপদে। দানব হাসিনার বিদায় হতে না হতেই এরা তৎপর হয়ে উঠলো। আবার বিএনপিও লুফে নিলো।
৪০ লক্ষ টাকার গাড়ী যিনি কিনেছেন, তিনি আবার একটি ‘বড়’ কাগজে যোগদান করেছেন। তিনি নাকি জিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক। তিনি অবশ্য কারাবরণ করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, কিন্তু শুরুতেই তিনিও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিটিভিতে অনুষ্ঠান করে থাকেন। তার অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাবের সেই চিহ্নিত ব্যক্তিদের নিয়মিত দেখা যায়। অনেকের মন্তব্য, এ অবস্থা চলতে থাকলে জাতির কপালে দুঃখ আছে নিঃসন্দেহে। ইউটিউবে দেখা যায়, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বলে বাংলাদেশের যে দশজনের নাম প্রচার করা হয়, তাদের মধ্যে তিনিও একজন।
বিজ্ঞজনরা বলে থাকেন, ২০০১ সালের পরে ‘হাওয়া ভবন’ বানিয়ে যারা বিএনপির সর্বনাশ করেছিল, আবারো যদি তারাই কিংবা তাদের মত লোকদের উত্থান হয়, তবে তা জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। অতএব সাধু সাবধান!