ঢাকা ১০:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তনির বিরুদ্ধে সাবেক স্বামীর এজাহার, জবাবে যা বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:৩৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৪৩ Time View

‘Sanvee's by Tony’ ফেইসবুক পেইজের এডমিন ও উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতেমা তনি। ছবিঃ সংগৃহীত।

আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তার সাবেক স্বামী সদরুল ইসলাম সোয়েব। তিনি দাবি করে বলেছেন, তাদের একমাত্র শিশুসন্তান মানতাহা ইসলাম সানভীকে জোর করে আটকে রেখে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করছেন তনি।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের আখড়াবাজার এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সোয়েব।

২০১৩ সালের ২৮ জুন রোবাইয়াত ফাতিমা তনির সঙ্গে বিয়ে হয় সদরুল ইসলাম সোয়েবের এবং তাদের ঘরে জন্ম হয় সানভীর। কিন্তু ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি দাম্পত্য কলহের কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয়। বর্তমানে সানভীর বয়স ১১ বছর। সদরুল ইসলাম সোয়েব কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল জেমিনি রোড এলাকার শামসুল ইসলাম রেনুর ছেলে। অন্যদিকে অভিযুক্ত রোবাইয়াত ফাতিমা তনি একই এলাকার মৃত তাহের উদ্দিন আহমেদের মেয়ে। বর্তমানে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।

সানভীর বাবা সংবাদ সম্মেলনে করেন

সংবাদ সম্মেলনে সদরুল ইসলাম সোয়েব অভিযোগ করে বলেন, ‘সানভী শিশু থাকায় আদালতের শর্ত অনুযায়ী সে মায়ের কাছেই বড় হতে থাকে। সময়ে সময়ে বাবার সঙ্গে মেয়ের দেখা করার সুযোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রোবাইয়াত ফাতিমা তনি সানভীকে অন্যায়ভাবে ঢাকায় আটকে রেখেছে। তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দিচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আলাদা হওয়ার পর রোবাইয়াত ফাতিমা তনি বিয়ে করেন শাহাদাৎ হোসাইনকে। তার মৃত্যুর পর সিদ্দিক নামে এক ইংল্যান্ড-প্রবাসীকে বিয়ে করেন। তনি মেয়েকে নিয়ে সিদ্দিকের সঙ্গে ইংল্যান্ড চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’

তনি তাদের শিশুসন্তান মানতাহা ইসলাম সানভীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রেখে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে তাকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান সোয়েব। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার অভিযোগ, তনি তার মেয়েকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাজেভাবে উপস্থাপন করে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ভাইরাল করছেন। এতে সে মানসিক ট্রমার মধ্যে আছে।

এ ব্যাপারে গত ২৪ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের ১ নম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি এজাহার দাখিল করেছেন সদরুল ইসলাম সোয়েব। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আগামী ২২ ডিসেম্বর শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।

এদিকে সাবেক স্বামীর অভিযোগের জবাবে নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনি জানিয়েছেন, তার মেয়ে মানতাহা ইসলাম সানভী ছোট থেকেই তার কাছেই বড় হচ্ছে। তাই ‘আটকে রাখা’র অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য।

ফেসবুকে নিজের আইডিতে এক পোস্টের কমেন্টে তিনি লেখেন, ‘মেয়ে মায়ের কাছে থাকলে কি তাকে আটক বলা হয়? ছোট থেকেই আমার কাছেই থাকে। এটা ছিল আমাদের পারস্পরিক সমঝোতা। মেয়ের বাবা নিজেই বলেছেন, মেয়ের ভরণপোষণ, থাকা-খাওয়া সব আমি দেব, আর স্কুলের ছুটিতে মেয়ে তার বাবার কাছে যাবে।’

তনি আরও বলেন, ‘সানভী এখন বড় হয়েছে, ভালো স্কুলে পড়ে এবং ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠার কারণে গ্রামে যেতে চায় না। মেয়ে যেহেতু যেতে চায় না, তাকে তো জোর করে পাঠাতে পারব না। সে চাইলে অবশ্যই বাবার কাছে যেতে পারে।’

মেয়েকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে তনি বলেন, ‘আমি পরিচিত নারী উদ্যোক্তা। দেশে আমার বেশ কয়েকটি ব্যবসা রয়েছে। আমাকে বা আমার সন্তানকে নিয়ে ভাইরাল হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। শিশু সানভীকে দিয়ে ব্যবসা করার কথা বলা উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার।’

বিদেশে স্থায়ী হওয়া বা মেয়েকে জোর করে বিদেশে পাঠানোর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি দেশে প্রতিষ্ঠিত। একা এতগুলো ব্যবসা দেখাশোনা করি, আমি বাইরে গিয়ে স্থায়ী হতে পারব না, চাইও না। তবে মেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্য ভবিষ্যতে যদি সুযোগ আসে এবং সে আগ্রহ দেখায়, মা হিসেবে তার ভালো নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব।’

সব অভিযোগ অসত্য উল্লেখ করে তনি বলেন, ‘সে না বুঝে এসব অভিযোগ করছে অথবা ভাইরাল হওয়ার জন্য করছে। আমরা অভিযোগগুলোর জবাব আইনি ভাষায় দেব।’

সানভীকে গায়েব করে রেখেছে তনি

Please Share This Post in Your Social Media

তনির বিরুদ্ধে সাবেক স্বামীর এজাহার, জবাবে যা বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৯:৩৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তার সাবেক স্বামী সদরুল ইসলাম সোয়েব। তিনি দাবি করে বলেছেন, তাদের একমাত্র শিশুসন্তান মানতাহা ইসলাম সানভীকে জোর করে আটকে রেখে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করছেন তনি।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের আখড়াবাজার এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সোয়েব।

২০১৩ সালের ২৮ জুন রোবাইয়াত ফাতিমা তনির সঙ্গে বিয়ে হয় সদরুল ইসলাম সোয়েবের এবং তাদের ঘরে জন্ম হয় সানভীর। কিন্তু ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি দাম্পত্য কলহের কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয়। বর্তমানে সানভীর বয়স ১১ বছর। সদরুল ইসলাম সোয়েব কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল জেমিনি রোড এলাকার শামসুল ইসলাম রেনুর ছেলে। অন্যদিকে অভিযুক্ত রোবাইয়াত ফাতিমা তনি একই এলাকার মৃত তাহের উদ্দিন আহমেদের মেয়ে। বর্তমানে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।

সানভীর বাবা সংবাদ সম্মেলনে করেন

সংবাদ সম্মেলনে সদরুল ইসলাম সোয়েব অভিযোগ করে বলেন, ‘সানভী শিশু থাকায় আদালতের শর্ত অনুযায়ী সে মায়ের কাছেই বড় হতে থাকে। সময়ে সময়ে বাবার সঙ্গে মেয়ের দেখা করার সুযোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রোবাইয়াত ফাতিমা তনি সানভীকে অন্যায়ভাবে ঢাকায় আটকে রেখেছে। তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দিচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আলাদা হওয়ার পর রোবাইয়াত ফাতিমা তনি বিয়ে করেন শাহাদাৎ হোসাইনকে। তার মৃত্যুর পর সিদ্দিক নামে এক ইংল্যান্ড-প্রবাসীকে বিয়ে করেন। তনি মেয়েকে নিয়ে সিদ্দিকের সঙ্গে ইংল্যান্ড চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’

তনি তাদের শিশুসন্তান মানতাহা ইসলাম সানভীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রেখে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে তাকে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান সোয়েব। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার অভিযোগ, তনি তার মেয়েকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাজেভাবে উপস্থাপন করে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ভাইরাল করছেন। এতে সে মানসিক ট্রমার মধ্যে আছে।

এ ব্যাপারে গত ২৪ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের ১ নম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি এজাহার দাখিল করেছেন সদরুল ইসলাম সোয়েব। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আগামী ২২ ডিসেম্বর শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।

এদিকে সাবেক স্বামীর অভিযোগের জবাবে নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনি জানিয়েছেন, তার মেয়ে মানতাহা ইসলাম সানভী ছোট থেকেই তার কাছেই বড় হচ্ছে। তাই ‘আটকে রাখা’র অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য।

ফেসবুকে নিজের আইডিতে এক পোস্টের কমেন্টে তিনি লেখেন, ‘মেয়ে মায়ের কাছে থাকলে কি তাকে আটক বলা হয়? ছোট থেকেই আমার কাছেই থাকে। এটা ছিল আমাদের পারস্পরিক সমঝোতা। মেয়ের বাবা নিজেই বলেছেন, মেয়ের ভরণপোষণ, থাকা-খাওয়া সব আমি দেব, আর স্কুলের ছুটিতে মেয়ে তার বাবার কাছে যাবে।’

তনি আরও বলেন, ‘সানভী এখন বড় হয়েছে, ভালো স্কুলে পড়ে এবং ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠার কারণে গ্রামে যেতে চায় না। মেয়ে যেহেতু যেতে চায় না, তাকে তো জোর করে পাঠাতে পারব না। সে চাইলে অবশ্যই বাবার কাছে যেতে পারে।’

মেয়েকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে তনি বলেন, ‘আমি পরিচিত নারী উদ্যোক্তা। দেশে আমার বেশ কয়েকটি ব্যবসা রয়েছে। আমাকে বা আমার সন্তানকে নিয়ে ভাইরাল হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। শিশু সানভীকে দিয়ে ব্যবসা করার কথা বলা উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার।’

বিদেশে স্থায়ী হওয়া বা মেয়েকে জোর করে বিদেশে পাঠানোর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি দেশে প্রতিষ্ঠিত। একা এতগুলো ব্যবসা দেখাশোনা করি, আমি বাইরে গিয়ে স্থায়ী হতে পারব না, চাইও না। তবে মেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্য ভবিষ্যতে যদি সুযোগ আসে এবং সে আগ্রহ দেখায়, মা হিসেবে তার ভালো নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব।’

সব অভিযোগ অসত্য উল্লেখ করে তনি বলেন, ‘সে না বুঝে এসব অভিযোগ করছে অথবা ভাইরাল হওয়ার জন্য করছে। আমরা অভিযোগগুলোর জবাব আইনি ভাষায় দেব।’

সানভীকে গায়েব করে রেখেছে তনি