ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্প নয়, ভেনেজুয়েলার মারিয়া কেন পেলেন নোবেল পদক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:১১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৯ Time View

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মারিয়া কোরিনা মাচাদো

ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভুষিত করা হয়েছে। গত বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিলেন। ওই নির্বাচনের আগে সকল জরিপে মারিয়া কোরিনা মাচাদোর জয়ের ইঙ্গিত ছিল। তবে ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টির (পিএসইউভি) প্রার্থী নিকোলাস মাদুরোকে তৃতীয় মেয়াদে জয়ী ঘোষণা করেছিল দেশটির নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচন ‌‘অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি’ অ্যাখ্যা দেয় পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের কাছে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর থেকে ১১ বছর ধরে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন। মাদুরো টানা তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হলেন।

অন্যদিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের অন্যতম দাবিদার ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের চলমান সাতটি যুদ্ধ বন্ধে ভূমিকা রেখেছেন দাবি করে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য নিজেকে ‘যোগ্য’ দাবিদার করেছিলেন। এমনকি ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিল ইসরায়েল ও পাকিস্তান। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প পদক পেলেন না।

পদক ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেও নরওয়ের রাজনীতিবিদেরা এ ঘোষণার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সতর্ক ছিলেন। যদি পুরস্কারটি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেওয়া না হয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্র-নরওয়ে সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দেয়। যদিও নরওয়ের নোবেল কমিটি বৃহস্পতিবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, সোমবার ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কারের বিজয়ী কে হবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তারা। ইসরায়েল ও হামাস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার অধীন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর কয়েক দিন আগেই ওই সিদ্ধান্ত পাকাপাকি হয়ে গেছে।

ট্রাম্প এ পুরস্কার না পেলে তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে- তা নিয়েও নরওয়েতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। নরওয়ের সোশ্যালিস্ট লেফট পার্টির নেতা ও বৈদেশিক নীতিবিষয়ক মুখপাত্র কির্সটি বার্গস্টো বলেন, ‘অসলোকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ বার্গস্টো দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে চরম অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, বাক্‌স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ করছেন, পুলিশ ব্যবহার করে দিনের আলোয় মানুষ অপহরণ করছেন এবং প্রতিষ্ঠান ও আদালতকে দমন করছেন। যখন একজন প্রেসিডেন্ট এত সংক্ষুব্ধ ও স্বৈরাচারী হন; তখন অবশ্যই আমাদের যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

বার্গস্টো আরও বলেন, ‘নোবেল কমিটি একটি স্বাধীন সংস্থা এবং নরওয়ে সরকার পুরস্কারের সিদ্ধান্তে কোনো ভূমিকা রাখে না; কিন্তু আমি নিশ্চিত নই, ট্রাম্প এটা জানেন কি না। তাই আমাদের তাঁর তরফে যেকোনো আচরণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যেই এ বিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করছেন যে তাঁকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া উচিত। এ পুরস্কার আগে তাঁর পূর্বসূরি মার্কিন প্রেসিডেন্টদের একজন বারাক ওবামাকে দেওয়া হয় ২০০৯ সালে। আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং মানুষের মধ্যে সহযোগিতা শক্তিশালী করার অসাধারণ প্রচেষ্টার জন্য তাঁকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

শুক্রবার নরওয়ের অসলোতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সময় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলেছেন, ‘ক্রমবর্ধমান অন্ধকারের মধ্যেও গণতন্ত্রের শিখা জ্বালিয়ে রাখা এক নারী মারিয়া কোরিনা মাচাদো’। সাম্প্রতিক সময়ে ল্যাটিন আমেরিকায় সাহসের সবচেয়ে ‘অসাধারণ উদাহরণ’ মারিয়া কোরিনা। তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ঐক্যবদ্ধ ব্যক্তিত্ব।’

পুরস্কার ঘোষণার সময় নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ভেনিজুয়েলায় গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং দেশটিতে একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তরের সংগ্রামে ভূমিকা রাখার জন্য তাকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে।

মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে নিয়ে জর্গেন ওয়াটনে আরও বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের মূলে এটাই নিহিত যে, আমরা ভিন্নমত পোষণ করলেও জনপ্রিয় শাসনের নীতি রক্ষা করার জন্য যৌথ ইচ্ছা থাকবে আমাদের। যখন গণতন্ত্র হুমকির মুখে, তখন এই সাধারণ ভিত্তি রক্ষা করা আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি তুলে নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সেখানে গণতান্ত্রিক কাজ করা বিপজ্জনক।’

তিনি বলেন, ‘মারিয়া কোরিনা ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে ‘বুলেটের পরিবর্তে ব্যালটের পছন্দে’ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার জন্য তিনি বছরের পর বছর কাজ করেছেন।’

মাচাদো ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা তাঁর প্রার্থিতা আটকে দেয়। এরপর তিনি নির্বাচনে অন্য দলের প্রতিনিধি এডমুন্ডো গনজালেজ উরুতিয়াকে সমর্থন দেন। রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবক একত্রিত হন। তারা স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভোট পর্যবেক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন। হয়রানি, গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের ঝুঁকি সত্ত্বেও দেশের নাগরিকরা ভোটকেন্দ্রগুলোর দিকে নজর রাখেন।

নির্বাচনের আগে এবং সময়কালে বিরোধী দলের প্রচেষ্টা ছিল উদ্ভাবনী, সাহসী, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক। কিন্তু মাদুরোর প্রশাসন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ক্ষমতায় থাকতেই মনোযোগ দেয়। নোবেল কর্তৃপক্ষ বলছে, গণতন্ত্র স্থায়ী শান্তির জন্য একটি পূর্বশর্ত। শুধু ভেনেজুয়েলায় নয়, জনগণের ওপর দমনপীড়নের ঘটনা আরও আছে। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা আইনকে নিজেদের মতো ব্যবহার করে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করে, সমালোচকদের জেলে পাঠায়। ২০২৪ সালে এক বছরেই বহু দেশে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু কম সংখ্যকই স্বাধীন ও সুষ্ঠু ছিল।

 

Please Share This Post in Your Social Media

ট্রাম্প নয়, ভেনেজুয়েলার মারিয়া কেন পেলেন নোবেল পদক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ০৫:১১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ভেনেজুয়েলার বিরোধী দলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভুষিত করা হয়েছে। গত বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিলেন। ওই নির্বাচনের আগে সকল জরিপে মারিয়া কোরিনা মাচাদোর জয়ের ইঙ্গিত ছিল। তবে ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টির (পিএসইউভি) প্রার্থী নিকোলাস মাদুরোকে তৃতীয় মেয়াদে জয়ী ঘোষণা করেছিল দেশটির নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচন ‌‘অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি’ অ্যাখ্যা দেয় পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের কাছে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর থেকে ১১ বছর ধরে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন। মাদুরো টানা তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হলেন।

অন্যদিকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের অন্যতম দাবিদার ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের চলমান সাতটি যুদ্ধ বন্ধে ভূমিকা রেখেছেন দাবি করে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য নিজেকে ‘যোগ্য’ দাবিদার করেছিলেন। এমনকি ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিল ইসরায়েল ও পাকিস্তান। তবে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প পদক পেলেন না।

পদক ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেও নরওয়ের রাজনীতিবিদেরা এ ঘোষণার সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে সতর্ক ছিলেন। যদি পুরস্কারটি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেওয়া না হয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্র-নরওয়ে সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দেয়। যদিও নরওয়ের নোবেল কমিটি বৃহস্পতিবার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, সোমবার ২০২৫ সালের শান্তি পুরস্কারের বিজয়ী কে হবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তারা। ইসরায়েল ও হামাস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার অধীন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর কয়েক দিন আগেই ওই সিদ্ধান্ত পাকাপাকি হয়ে গেছে।

ট্রাম্প এ পুরস্কার না পেলে তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে- তা নিয়েও নরওয়েতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। নরওয়ের সোশ্যালিস্ট লেফট পার্টির নেতা ও বৈদেশিক নীতিবিষয়ক মুখপাত্র কির্সটি বার্গস্টো বলেন, ‘অসলোকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ বার্গস্টো দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে চরম অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, বাক্‌স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ করছেন, পুলিশ ব্যবহার করে দিনের আলোয় মানুষ অপহরণ করছেন এবং প্রতিষ্ঠান ও আদালতকে দমন করছেন। যখন একজন প্রেসিডেন্ট এত সংক্ষুব্ধ ও স্বৈরাচারী হন; তখন অবশ্যই আমাদের যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

বার্গস্টো আরও বলেন, ‘নোবেল কমিটি একটি স্বাধীন সংস্থা এবং নরওয়ে সরকার পুরস্কারের সিদ্ধান্তে কোনো ভূমিকা রাখে না; কিন্তু আমি নিশ্চিত নই, ট্রাম্প এটা জানেন কি না। তাই আমাদের তাঁর তরফে যেকোনো আচরণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যেই এ বিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করছেন যে তাঁকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া উচিত। এ পুরস্কার আগে তাঁর পূর্বসূরি মার্কিন প্রেসিডেন্টদের একজন বারাক ওবামাকে দেওয়া হয় ২০০৯ সালে। আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং মানুষের মধ্যে সহযোগিতা শক্তিশালী করার অসাধারণ প্রচেষ্টার জন্য তাঁকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।

শুক্রবার নরওয়ের অসলোতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সময় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলেছেন, ‘ক্রমবর্ধমান অন্ধকারের মধ্যেও গণতন্ত্রের শিখা জ্বালিয়ে রাখা এক নারী মারিয়া কোরিনা মাচাদো’। সাম্প্রতিক সময়ে ল্যাটিন আমেরিকায় সাহসের সবচেয়ে ‘অসাধারণ উদাহরণ’ মারিয়া কোরিনা। তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ঐক্যবদ্ধ ব্যক্তিত্ব।’

পুরস্কার ঘোষণার সময় নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ভেনিজুয়েলায় গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং দেশটিতে একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তরের সংগ্রামে ভূমিকা রাখার জন্য তাকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে।

মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে নিয়ে জর্গেন ওয়াটনে আরও বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের মূলে এটাই নিহিত যে, আমরা ভিন্নমত পোষণ করলেও জনপ্রিয় শাসনের নীতি রক্ষা করার জন্য যৌথ ইচ্ছা থাকবে আমাদের। যখন গণতন্ত্র হুমকির মুখে, তখন এই সাধারণ ভিত্তি রক্ষা করা আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

ভেনেজুয়েলার পরিস্থিতি তুলে নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সেখানে গণতান্ত্রিক কাজ করা বিপজ্জনক।’

তিনি বলেন, ‘মারিয়া কোরিনা ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে ‘বুলেটের পরিবর্তে ব্যালটের পছন্দে’ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার জন্য তিনি বছরের পর বছর কাজ করেছেন।’

মাচাদো ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা তাঁর প্রার্থিতা আটকে দেয়। এরপর তিনি নির্বাচনে অন্য দলের প্রতিনিধি এডমুন্ডো গনজালেজ উরুতিয়াকে সমর্থন দেন। রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবক একত্রিত হন। তারা স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ভোট পর্যবেক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন। হয়রানি, গ্রেপ্তার এবং নির্যাতনের ঝুঁকি সত্ত্বেও দেশের নাগরিকরা ভোটকেন্দ্রগুলোর দিকে নজর রাখেন।

নির্বাচনের আগে এবং সময়কালে বিরোধী দলের প্রচেষ্টা ছিল উদ্ভাবনী, সাহসী, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক। কিন্তু মাদুরোর প্রশাসন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ক্ষমতায় থাকতেই মনোযোগ দেয়। নোবেল কর্তৃপক্ষ বলছে, গণতন্ত্র স্থায়ী শান্তির জন্য একটি পূর্বশর্ত। শুধু ভেনেজুয়েলায় নয়, জনগণের ওপর দমনপীড়নের ঘটনা আরও আছে। ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা আইনকে নিজেদের মতো ব্যবহার করে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করে, সমালোচকদের জেলে পাঠায়। ২০২৪ সালে এক বছরেই বহু দেশে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু কম সংখ্যকই স্বাধীন ও সুষ্ঠু ছিল।