ঢাকা ১০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগ: মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পথে ‘ভালো সুযোগ’

Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৪৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
  • / ২৫ Time View

শার্ম আল শেখ, মিশর – ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজা যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে মিশরের শার্ম আল শেখে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির আশা নতুন করে জেগে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এই আলোচনাকে জাতিসংঘ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী উভয়েই সংঘাত অবসানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

 

এই আলোচনায় মূলত বন্দি বিনিময়ের জন্য ‘মাঠ পর্যায়ের পরিবেশ তৈরি’ করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, যা শুরুতেই সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির পথ প্রশস্ত করতে পারে। এই পদক্ষেপকে আলোচনা প্রক্রিয়ার ভিত্তি হিসেবে দেখছে ইসরায়েল, যাদের নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র অনুযায়ী, প্রাথমিক ফোকাস হলো এই পর্যায়টি সম্পূর্ণ করা।

 

আলোচনায় অগ্রগতির ইঙ্গিত মিললেও, হামাস এই শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবে আংশিকভাবে সম্মত হয়েছে। তারা নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজার ভবিষ্যতের সরকারে নিজেদের ভূমিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলি নিয়ে এখনো সাড়া দেয়নি। এই মূল অমীমাংসিত বিষয়গুলিই একটি চূড়ান্ত ও স্থায়ী চুক্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে।

 

আলোচনার শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য বিশেষভাবে আশাব্যঞ্জক। তিনি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমাদের কাছে একটি চুক্তি করার সত্যিই ভালো সুযোগ রয়েছে এবং এটি হবে একটি স্থায়ী চুক্তি।”

 

এই আশাবাদকে সমর্থন জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, যিনি ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে “এই মর্মান্তিক সংঘাতের অবসান ঘটানোর জন্য একটি সুযোগ” হিসেবে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার তার বিবৃতিতে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 

এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার দ্বিতীয় বার্ষিকীর ঠিক আগে। সেই হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। এরপর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পাল্টা অভিযানে গাজায় ৬৭ হাজার ১৬০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১৮ হাজার শিশু—হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী। এই বিশাল মানবিক মূল্যই একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তাকে আরও জরুরি করে তুলেছে।

 

মিশরীয় ও কাতারীয় কর্মকর্তারা ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ের প্রতিনিধিদের সাথে পৃথকভাবে মধ্যস্থতা করছেন। এই ‘পরোক্ষ’ আলোচনার ফলস্বরূপ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আগামী দিনগুলোতে জিম্মিদের মুক্তির ঘোষণা দেওয়ার আশা করছেন বলে জানা গেছে। আলোচনায় প্রাথমিক সাফল্য, বিশেষ করে বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে, বৃহত্তর শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য আস্থা ও গতি তৈরি করতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগ: মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পথে ‘ভালো সুযোগ’

Reporter Name
Update Time : ০৭:৪৫:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

শার্ম আল শেখ, মিশর – ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে গাজা যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে মিশরের শার্ম আল শেখে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির আশা নতুন করে জেগে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এই আলোচনাকে জাতিসংঘ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী উভয়েই সংঘাত অবসানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

 

এই আলোচনায় মূলত বন্দি বিনিময়ের জন্য ‘মাঠ পর্যায়ের পরিবেশ তৈরি’ করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, যা শুরুতেই সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির পথ প্রশস্ত করতে পারে। এই পদক্ষেপকে আলোচনা প্রক্রিয়ার ভিত্তি হিসেবে দেখছে ইসরায়েল, যাদের নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র অনুযায়ী, প্রাথমিক ফোকাস হলো এই পর্যায়টি সম্পূর্ণ করা।

 

আলোচনায় অগ্রগতির ইঙ্গিত মিললেও, হামাস এই শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাবে আংশিকভাবে সম্মত হয়েছে। তারা নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজার ভবিষ্যতের সরকারে নিজেদের ভূমিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলি নিয়ে এখনো সাড়া দেয়নি। এই মূল অমীমাংসিত বিষয়গুলিই একটি চূড়ান্ত ও স্থায়ী চুক্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে।

 

আলোচনার শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য বিশেষভাবে আশাব্যঞ্জক। তিনি হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমাদের কাছে একটি চুক্তি করার সত্যিই ভালো সুযোগ রয়েছে এবং এটি হবে একটি স্থায়ী চুক্তি।”

 

এই আশাবাদকে সমর্থন জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, যিনি ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে “এই মর্মান্তিক সংঘাতের অবসান ঘটানোর জন্য একটি সুযোগ” হিসেবে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার তার বিবৃতিতে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

 

এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার দ্বিতীয় বার্ষিকীর ঠিক আগে। সেই হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। এরপর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পাল্টা অভিযানে গাজায় ৬৭ হাজার ১৬০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১৮ হাজার শিশু—হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী। এই বিশাল মানবিক মূল্যই একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তাকে আরও জরুরি করে তুলেছে।

 

মিশরীয় ও কাতারীয় কর্মকর্তারা ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ের প্রতিনিধিদের সাথে পৃথকভাবে মধ্যস্থতা করছেন। এই ‘পরোক্ষ’ আলোচনার ফলস্বরূপ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আগামী দিনগুলোতে জিম্মিদের মুক্তির ঘোষণা দেওয়ার আশা করছেন বলে জানা গেছে। আলোচনায় প্রাথমিক সাফল্য, বিশেষ করে বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে, বৃহত্তর শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য আস্থা ও গতি তৈরি করতে পারে।