ঢাকা ১০:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টিকটকে আসক্ত মেয়েকে গুলি করে হত্যা করলেন বাবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১১:৫৭:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১২২ Time View

পাকিস্তানের কোয়েটা শহরে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে গুলি করে হত্যা করা করেছে তার বাবা ও চাচা। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কিশোরীর টিকটক ভিডিও এবং পোশাক নিয়ে তার পরিবারের আপত্তি ছিল।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি)।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ হত্যার জন্য কোনো অজ্ঞাত ব্যক্তিকে সন্দেহ করলেও, পরে তদন্তে কিশোরী হিরার বাবা আনোয়ার উল-হক নিজের মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

তিনি দাবি করেন, মেয়ের টিকটক ভিডিওগুলো ‘অপ্রীতিকর’ ছিল এবং সম্মান রক্ষার্থে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

আনোয়ার উল-হক বলেন, “মেয়েকে বারবার ভিডিও তৈরি বন্ধ করার জন্য বলেছিলাম, কিন্তু সে শোনেনি। তাই আমি এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।”

পুলিশ কর্মকর্তা বাবর বালুচ জানিয়েছেন, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিবারকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে এনেছিলেন আনোয়ার উল-হক নামের এক ব্যক্তি।

মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছিলেন, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা তার আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেছে। তার বর্ণনায় সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। বুধবার তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি তার কিশোরী মেয়েকে টিকটক কন্টেন্ট তৈরি করতে নিষেধ করেছিলেন। আদেশ না মানায় তিনি মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা জোহাইব মহসিন বলেন, “আমাদের তদন্তে এখনো পর্যন্ত দেখা গেছে যে পরিবারের সদস্যরা মেয়েটির পোশাক, জীবনযাত্রা এবং সামাজিক যোগাযোগের প্রতি আপত্তি জানিয়েছিলেন। আমাদের কাছে তার ফোন আছে। আমরা অনার কিলিং (সম্মান রক্ষার্থে হত্যা) সহ সব দিক তদন্ত করছি।”

হত্যার ঘটনায় বাবা ও চাচাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলাটি এখন আরও তদন্তের জন্য সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন উইং-এ স্থানান্তর করা হয়েছে।

পাকিস্তানে ৫ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ টিকটক ব্যবহার করেন। সরকারের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে ‘অশ্লীল বিষয়বস্তু’ নিয়ে বারবার আপত্তি জানানো হয়েছে, এবং এর কারণে কয়েকবার টিকটক অ্যাপটি ব্লক করা হয়েছিল।

এই ঘটনার পর, পাকিস্তানে সামাজিক মিডিয়ার প্রতি পরিবারগুলোর মনোভাব এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

টিকটকে আসক্ত মেয়েকে গুলি করে হত্যা করলেন বাবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ১১:৫৭:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

পাকিস্তানের কোয়েটা শহরে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে গুলি করে হত্যা করা করেছে তার বাবা ও চাচা। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কিশোরীর টিকটক ভিডিও এবং পোশাক নিয়ে তার পরিবারের আপত্তি ছিল।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি)।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ হত্যার জন্য কোনো অজ্ঞাত ব্যক্তিকে সন্দেহ করলেও, পরে তদন্তে কিশোরী হিরার বাবা আনোয়ার উল-হক নিজের মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

তিনি দাবি করেন, মেয়ের টিকটক ভিডিওগুলো ‘অপ্রীতিকর’ ছিল এবং সম্মান রক্ষার্থে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

আনোয়ার উল-হক বলেন, “মেয়েকে বারবার ভিডিও তৈরি বন্ধ করার জন্য বলেছিলাম, কিন্তু সে শোনেনি। তাই আমি এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।”

পুলিশ কর্মকর্তা বাবর বালুচ জানিয়েছেন, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিবারকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে এনেছিলেন আনোয়ার উল-হক নামের এক ব্যক্তি।

মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছিলেন, অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা তার আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেছে। তার বর্ণনায় সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। বুধবার তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি তার কিশোরী মেয়েকে টিকটক কন্টেন্ট তৈরি করতে নিষেধ করেছিলেন। আদেশ না মানায় তিনি মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা জোহাইব মহসিন বলেন, “আমাদের তদন্তে এখনো পর্যন্ত দেখা গেছে যে পরিবারের সদস্যরা মেয়েটির পোশাক, জীবনযাত্রা এবং সামাজিক যোগাযোগের প্রতি আপত্তি জানিয়েছিলেন। আমাদের কাছে তার ফোন আছে। আমরা অনার কিলিং (সম্মান রক্ষার্থে হত্যা) সহ সব দিক তদন্ত করছি।”

হত্যার ঘটনায় বাবা ও চাচাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলাটি এখন আরও তদন্তের জন্য সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন উইং-এ স্থানান্তর করা হয়েছে।

পাকিস্তানে ৫ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ টিকটক ব্যবহার করেন। সরকারের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে ‘অশ্লীল বিষয়বস্তু’ নিয়ে বারবার আপত্তি জানানো হয়েছে, এবং এর কারণে কয়েকবার টিকটক অ্যাপটি ব্লক করা হয়েছিল।

এই ঘটনার পর, পাকিস্তানে সামাজিক মিডিয়ার প্রতি পরিবারগুলোর মনোভাব এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।