ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংস নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ১-১১’র প্রেক্ষাপট তৈরি করে আ.লীগ কর্তৃত্বশীল শাসকরূপে চিহ্নিত হয় : মাওলানা আবদুল হালিম মাদক বিষাক্ত সাপের মতো ব্যক্তি ও সমাজকে নিঃশেষ করে দেয় জুলাই আন্দোলনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ শুরু হয়েছিল রংপুর থেকেই: নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যূত্থানে শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত স্বৈরাচার পতনে ক্রীড়ানকের ভুমিকা পালন করে আবু সাঈদের মৃত্যু পূর্বাচলে ঘোড়ার মাংসসহ আটক ১ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে গবেষণা খাতে

টাঙ্গাইলে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মাণের পায়তারা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
  • Update Time : ১১:৫৩:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১৬৮ Time View

টাঙ্গাইল পৌরসভার কান্দাপাড়া মৌজায় থানাপাড়া সুইপার কলোনিতে পত্তনসুত্রে প্রাপ্ত ৪০ শতাংশ জায়গায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মাণের পায়তার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় পৌরসভার মেয়রকে বিবাদী করে উক্তভুমির মালিক কার্তিক চন্দ্র হরিজন বাদী হয়ে টাঙ্গাইল যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং ৪৫/২০২২। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। এদিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৌর কর্তৃপক্ষ বহুতল ভবণ নির্মাণের পায়তারা করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মামলা সুত্রে জানাগেছে, সন্তোষের জমিদার প্রমথ নাথ রায় চৌধুরীর স্বত্ব দখলীয় জোত (পাঁচআনী জমিদার স্টেটের) ভুমির ৪০ শতাংশ জায়গা তাদের জমিদারী এলাকায় পয়নিস্কাশনের জন্য ভারতের এলাহাবাদ থেকে এনে মহদেব জমাদার এর পরিবারদের থাকার জন্য পত্তন দেন। যাহার কাগমারী পরগনার কান্দাপাড়া মৌজার খতিয়ান নং ৩, ক্রমিক নং ২১৮ হিসাব নং ১১৫, সিএস দাগ নং ১৩৫। যাহার উত্তরে থানাপাড়া বিসিক রোড, দক্ষিনে মাসুদ গংয়ের বাড়ি, পুর্বে টাঙ্গাইল পৌরসভার জায়গা ও পশ্চিমে দেলদুয়ার রোড। বর্তমানে টাঙ্গাইল দেলদুয়ার রোডের জন্য উক্ত ভুমির ১.৮৬ পয়েন্ট সরকার ভুমি অধিগ্রহন করায় ৩৮.১৪ শতাংশ ভুমি কার্তিক হরিজনের দখলে রয়েছে।বর্তমানে ওই ভুমিতে নিঃস্তান মহাদেব চন্দ্র জমাদারের দত্তক সন্তান কার্তিক চন্দ্র হরিজন তার পরিবার-পরিজন নিয়ে শতবছর ধরে বসবাস করে আসছে এবং জায়গাটি স্বত্বঃবান রয়েছে।

গত এসএ জরিপে ১৩৫ দাগটি এসএ ২২৫ দাগে রুপান্তরিত হওয়ায় এবং ভুলক্রমে মহাদেব চন্দ্র হরিজনের নামে লিপিবদ্ধ না হইয়া এসএ ৩নং খতিয়ানে ২২৫ নং দাগ হিসেবে বাড়ি শ্রেণীরুপে টাঙ্গাইল পৌরসভার নামে লিপিবদ্ধ হয়। কিন্তু উক্ত ভুমিটি হালের বিএসে ৪৩৮ খতিয়ানে মহাদেব হরিজনের দত্তক পুত্র কার্তিক হরিজনের নামে ২৪.২৫ শতাংশ ভুলক্রমে মাঠপর্চায় অর্ন্তভুক্ত হয়। পরে উক্ত ভুমিটি নিয়ে কার্তিক হরিজন পৌরসভাকে বিবাদী করে আদালতে ৩৮.১৪ শতাংশ জমি দাবি করে রেকর্ড কারেকশনের মামলা করেন। যাহার নাম্বার ৪৫/২২। মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে। কিন্তু টাঙ্গাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে উক্ত পত্তন সুত্রে প্রাপ্ত মালিকানা অস্বীকার করিয়া নিজেদের মালিকানা দাবিতে মামলা করেন।

গত নভেম্বরের ৮ তারিখে পৌরসভার নিয়োজিত ঠিকাদার উক্ত ভুমি দখল নিতে গেলে স্থানীয়দের বাধার মুখে চলে আসে।

এ প্রসঙ্গে, কার্তিক চন্দ্র হরিজন বলেন, উক্ত ভুমির পত্তন সুত্রে পাওয়া মালিক মহাদেব নিঃসন্তান হওয়ায় আমাকে দত্তক আনেন। হঠাৎ তার পালক পিতা মহাদেব হরিজন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার পিতার অনুমতিক্রমে মাতা মহাদের স্ত্রী লক্ষী ওরফে কমলী হরিজন ১৯৯০ সালের মে মাসের ১৭ তারিখে তার সকল স্থাবর-অস্থাবর আমাকে রেজিষ্ট্রি করে দেন। সে থেকে আমি পৈত্রি সুত্রে পাওয়া ভুমিতে শতবছর যাবত পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি। সম্প্রীতি টাঙ্গাইল পৌরসভা মালিকানা দাবি করলে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি, মামলাটি চলমান আছে।

স্থানীয় মিনজু হরিজন,পন্ন হরিজনসহ অনেকেই জানান, পৈত্রিক সুত্রে এই জমির মালিক কার্তিক হরিজন। এলাকার কিছু অসাধু লোক পৌরসভার লোকজনের সাথে আতাত করে জমিটি বহুতল ভবন নির্মাণ করার পায়তারা চালাচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, টাঙ্গাইল পৌরসভা তাদেরকে জায়গা বুঝিয়ে দিলে তারা কাজ ধরবে। পৌর কর্তৃপক্ষ জায়গা বুঝিয়ে দিতে না পারলে বহুতল ভবনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার দায়িত্বরত প্রশাসক ও জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার মন্ত্রালয়ের উপসচিব মো. শিহাব রায়হান জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। যেহেতু বহুতল ভবনটি টাঙ্গাইল এলজিইডির প্রকল্প সেহেতু এলজিইডির নির্বাহী কর্মকতার নিকট কথা বলার পরামর্শ দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

টাঙ্গাইলে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মাণের পায়তারা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
Update Time : ১১:৫৩:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

টাঙ্গাইল পৌরসভার কান্দাপাড়া মৌজায় থানাপাড়া সুইপার কলোনিতে পত্তনসুত্রে প্রাপ্ত ৪০ শতাংশ জায়গায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মাণের পায়তার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় পৌরসভার মেয়রকে বিবাদী করে উক্তভুমির মালিক কার্তিক চন্দ্র হরিজন বাদী হয়ে টাঙ্গাইল যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং ৪৫/২০২২। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। এদিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৌর কর্তৃপক্ষ বহুতল ভবণ নির্মাণের পায়তারা করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মামলা সুত্রে জানাগেছে, সন্তোষের জমিদার প্রমথ নাথ রায় চৌধুরীর স্বত্ব দখলীয় জোত (পাঁচআনী জমিদার স্টেটের) ভুমির ৪০ শতাংশ জায়গা তাদের জমিদারী এলাকায় পয়নিস্কাশনের জন্য ভারতের এলাহাবাদ থেকে এনে মহদেব জমাদার এর পরিবারদের থাকার জন্য পত্তন দেন। যাহার কাগমারী পরগনার কান্দাপাড়া মৌজার খতিয়ান নং ৩, ক্রমিক নং ২১৮ হিসাব নং ১১৫, সিএস দাগ নং ১৩৫। যাহার উত্তরে থানাপাড়া বিসিক রোড, দক্ষিনে মাসুদ গংয়ের বাড়ি, পুর্বে টাঙ্গাইল পৌরসভার জায়গা ও পশ্চিমে দেলদুয়ার রোড। বর্তমানে টাঙ্গাইল দেলদুয়ার রোডের জন্য উক্ত ভুমির ১.৮৬ পয়েন্ট সরকার ভুমি অধিগ্রহন করায় ৩৮.১৪ শতাংশ ভুমি কার্তিক হরিজনের দখলে রয়েছে।বর্তমানে ওই ভুমিতে নিঃস্তান মহাদেব চন্দ্র জমাদারের দত্তক সন্তান কার্তিক চন্দ্র হরিজন তার পরিবার-পরিজন নিয়ে শতবছর ধরে বসবাস করে আসছে এবং জায়গাটি স্বত্বঃবান রয়েছে।

গত এসএ জরিপে ১৩৫ দাগটি এসএ ২২৫ দাগে রুপান্তরিত হওয়ায় এবং ভুলক্রমে মহাদেব চন্দ্র হরিজনের নামে লিপিবদ্ধ না হইয়া এসএ ৩নং খতিয়ানে ২২৫ নং দাগ হিসেবে বাড়ি শ্রেণীরুপে টাঙ্গাইল পৌরসভার নামে লিপিবদ্ধ হয়। কিন্তু উক্ত ভুমিটি হালের বিএসে ৪৩৮ খতিয়ানে মহাদেব হরিজনের দত্তক পুত্র কার্তিক হরিজনের নামে ২৪.২৫ শতাংশ ভুলক্রমে মাঠপর্চায় অর্ন্তভুক্ত হয়। পরে উক্ত ভুমিটি নিয়ে কার্তিক হরিজন পৌরসভাকে বিবাদী করে আদালতে ৩৮.১৪ শতাংশ জমি দাবি করে রেকর্ড কারেকশনের মামলা করেন। যাহার নাম্বার ৪৫/২২। মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে। কিন্তু টাঙ্গাইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে উক্ত পত্তন সুত্রে প্রাপ্ত মালিকানা অস্বীকার করিয়া নিজেদের মালিকানা দাবিতে মামলা করেন।

গত নভেম্বরের ৮ তারিখে পৌরসভার নিয়োজিত ঠিকাদার উক্ত ভুমি দখল নিতে গেলে স্থানীয়দের বাধার মুখে চলে আসে।

এ প্রসঙ্গে, কার্তিক চন্দ্র হরিজন বলেন, উক্ত ভুমির পত্তন সুত্রে পাওয়া মালিক মহাদেব নিঃসন্তান হওয়ায় আমাকে দত্তক আনেন। হঠাৎ তার পালক পিতা মহাদেব হরিজন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার পিতার অনুমতিক্রমে মাতা মহাদের স্ত্রী লক্ষী ওরফে কমলী হরিজন ১৯৯০ সালের মে মাসের ১৭ তারিখে তার সকল স্থাবর-অস্থাবর আমাকে রেজিষ্ট্রি করে দেন। সে থেকে আমি পৈত্রি সুত্রে পাওয়া ভুমিতে শতবছর যাবত পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি। সম্প্রীতি টাঙ্গাইল পৌরসভা মালিকানা দাবি করলে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি, মামলাটি চলমান আছে।

স্থানীয় মিনজু হরিজন,পন্ন হরিজনসহ অনেকেই জানান, পৈত্রিক সুত্রে এই জমির মালিক কার্তিক হরিজন। এলাকার কিছু অসাধু লোক পৌরসভার লোকজনের সাথে আতাত করে জমিটি বহুতল ভবন নির্মাণ করার পায়তারা চালাচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, টাঙ্গাইল পৌরসভা তাদেরকে জায়গা বুঝিয়ে দিলে তারা কাজ ধরবে। পৌর কর্তৃপক্ষ জায়গা বুঝিয়ে দিতে না পারলে বহুতল ভবনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার দায়িত্বরত প্রশাসক ও জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার মন্ত্রালয়ের উপসচিব মো. শিহাব রায়হান জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। যেহেতু বহুতল ভবনটি টাঙ্গাইল এলজিইডির প্রকল্প সেহেতু এলজিইডির নির্বাহী কর্মকতার নিকট কথা বলার পরামর্শ দেন।