টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র নিহত: ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিল যুবসমাজ

- Update Time : ১১:৪৬:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
- / ৩৮ Time View
গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত কলেজছাত্র মাহফুজুর রহমানের হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থী ও যুবসমাজ।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে টঙ্গী কলেজ গেট এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে টঙ্গীর বিভিন্ন কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এছাড়া রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারাও কর্মসূচিতে একাত্মতা জানান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রাকিব হোসেন বাপ্পি। বক্তব্য দেন টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বশির উদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর নেতা নেয়ামতুল্লাহ ভূঁইয়া, মোতাহার হোসেন মোহন, আপ বাংলাদেশের প্রতিনিধি নোমান, ইসলামী ছাত্রশিবির গাজীপুর মহানগরের প্রচার সম্পাদক হাবিবুর রহমান সুজনসহ নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কয়েকজন নেতা। প্রভাষক বশির উদ্দিন বলেন, “টঙ্গী শহর এখন আর নিরাপদ নয়। মামলা থাকা সত্ত্বেও খুনিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিন কেউ না কেউ ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণ হারাচ্ছে। ছিনতাইকারীদের তালিকা আমরা প্রশাসনকে দিয়েছি, কিন্তু প্রশাসন ব্যর্থ তাদের মদদদাতাদের ধরতে। প্রশাসন যদি ব্যর্থ হয়, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামবো।”
মানববন্ধন থেকে বক্তারা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, মাহফুজ হত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে ছাত্র ও যুবসমাজ কঠোর কর্মসূচি দেবে। একই সঙ্গে টঙ্গী এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবিও জানান তারা। মানববন্ধন শেষে “মাহফুজ হত্যার বিচার চাই” স্লোগান দিতে দিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল টঙ্গী কলেজ গেট থেকে পূর্ব থানার দিকে রওনা দেয়। টঙ্গী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ফারবেজ বলেন, “প্রতিদিন সন্ধ্যার পর টঙ্গী ফ্লাইওভার, স্টেশন রোড, চেরাগ আলী মোড় ও গাজীপুরা এলাকায় ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জীবন ও সম্পদ হারাচ্ছেন। অথচ প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
উল্লেখ্য, নিহত মাহফুজুর রহমান বরিশালের সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে টঙ্গীর সড়ক ও জনপদ অফিসের সামনে পৌঁছালে একদল ছিনতাইকারী তার পথরোধ করে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিতে চায়। তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে। ডান উরুর পেছনে গভীর ক্ষতের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সিএনজিযোগে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাহফুজের নির্মম হত্যাকাণ্ডে টঙ্গীজুড়ে শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা মাঠে আছি। খুব শিগগিরই জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”