ঢাকা ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ইসরাইলকে পশ্চিম তীর দখল করতে দেবো না: ট্রাম্প শাহরুখ-আরিয়ানের বিরুদ্ধে মামলা, আদালতে খারিজ শাহরুখ-আরিয়ানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন সমীর ওয়াংখেড়ে চেন্নাইয়ে থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে পদপিষ্ট হয়ে ৩৪ জনের মৃত্যু জনগণ যেভাবে চায়, আমাদের সেভাবে চলতে হবে : তারেক রহমান বাদামতলীতে ঢাকা ৭ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মনি’র গণসংযোগ দোলনের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের ঢাকা ৭ আসনের মানুষের খাদেম হতে চাই – আলহাজ্ব আব্দুর রহমান টঙ্গীর কেমিক্যাল গুদামে অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শনে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক

ঝুঁকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ আতঙ্কে তিন গ্রামের মানুষ

চৌধূরী মুনীর হোসেন, বরগুনা প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:১৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৬০৩৩ Time View

বরগুনায় বছরের পর বছর পায়রা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি, ঘরবাড়িসহ গুরুত্বর্পূর্ণ স্থাপনা। চলতি বছরও ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা ও নলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। পায়রা নদীর তীরে তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা ও নলবুনিয়া গ্রাম। পাঁচ যুগের ভাঙ্গনে শত শত ঘরবাড়ি, হাজার হাজার একর কৃষিজমি হারিয়েছে বাসিন্দারা। তিন থেকে চারবার নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এর পরও ঠেকানো যায়নি ভাঙন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিডর, রোয়ানু, আইলা, আকাশ, ইয়াস, বিজলী, মিধিলী, মোখা, মোরা, সিত্রাং, রেশমা এবং সর্বশেষ রিমালের সময় পায়রায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। একের পর এক ভাঙনে বিলীন হয়েছে তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা ও নলবুনিয়া গ্রামের পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা ঘরবাড়ি, আড়াই হাজার একর কৃষি জমি। জয়ালভাঙ্গা ও তেঁতুলবাড়িয়া গ্রাম রক্ষায় ২০২৪ সালে জিওব্যাগ ফালানো হয়। তাতেও রক্ষা হচ্ছে না ভাঙন। চলতি বছর তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ফোরকান দফাদার ও জসিম প্যাদার বাড়ি, ছগির চাপরাশির দোকানের সামনে দিয়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। ওই গ্রামের প্রায় দুই হাজার বাসিন্দা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। পায়রায় পানি বাড়লে বা জলোচ্ছ্বাস হলেই বাঁধ ধসে তলিয়ে যেতে পারে পুরো গ্রাম।
এ গ্রামের জসিম প্যাদা ও হাবিব আকন বলেন- গ্রাম রক্ষায় পায়রা নদীর তীরে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ওই ব্যাগে বালুর পরিবর্তে মাটি দেওয়া হয়েছে। পানির তোড়ে সেই মাটি ধুয়ে ধস নেমেছে। বাঁধ ভাঙলে যে কোনো সময় গ্রাম তলিয়ে যাবে। জয়ালভাঙ্গা গ্রামেরও একই অবস্থা। এখানে তাপবিদ্যুতের এলাকাকে ব্লক ফেলে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তবে দক্ষিণ দিকে নলবুনিয়া হয়ে বঙ্গোপসাগর মোহনা পর্যন্ত চলছে ভাঙন। এ গ্রামের দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকা পায়রায় বিলীন হয়েছে। হাজারো মানুষ বসতি, জমি হারিয়ে পাড়ি দিয়েছেন অজানা গন্তব্যে। হুমকির মুখে রয়েছে নলবুনিয়া গ্রামও। রিমালের তান্ডবে এ এলাকার হাজার হাজার ঝাউগাছ ভেসে গেছে সাগরে।

জয়ালভাঙ্গা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব রিয়াজ মুন্সি বলেন- ‘ভাঙনে মোর সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে। ১৫ বিঘা কৃষি জমি ছিল। এহন কিছু নাই।’

তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ হাওলাদার বলেন- পায়রার ভাঙনে এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার একর কৃষি জমি বিলিন হয়ে গেছে। চারবার স্থান পরিবর্তন করে বাধ পুননির্মাণ করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড তালতলীর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হিমেল বলেন- দুই বছরে দেড় থেকে ২০০ ফুট কৃষিজমি নদীতে চলে গেছে। চলতি বছর ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঝুঁকির মুখে তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের বাঁধ। ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রাকিব বলেন- ভাঙন রোধে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। জিওব্যাগে বালুর পরিবর্তে মাটি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন- এ তথ্য আমার জানা নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

ঝুঁকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ আতঙ্কে তিন গ্রামের মানুষ

চৌধূরী মুনীর হোসেন, বরগুনা প্রতিনিধি
Update Time : ০৭:১৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বরগুনায় বছরের পর বছর পায়রা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি, ঘরবাড়িসহ গুরুত্বর্পূর্ণ স্থাপনা। চলতি বছরও ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা ও নলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। পায়রা নদীর তীরে তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা ও নলবুনিয়া গ্রাম। পাঁচ যুগের ভাঙ্গনে শত শত ঘরবাড়ি, হাজার হাজার একর কৃষিজমি হারিয়েছে বাসিন্দারা। তিন থেকে চারবার নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এর পরও ঠেকানো যায়নি ভাঙন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিডর, রোয়ানু, আইলা, আকাশ, ইয়াস, বিজলী, মিধিলী, মোখা, মোরা, সিত্রাং, রেশমা এবং সর্বশেষ রিমালের সময় পায়রায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। একের পর এক ভাঙনে বিলীন হয়েছে তেঁতুলবাড়িয়া, জয়ালভাঙ্গা ও নলবুনিয়া গ্রামের পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা ঘরবাড়ি, আড়াই হাজার একর কৃষি জমি। জয়ালভাঙ্গা ও তেঁতুলবাড়িয়া গ্রাম রক্ষায় ২০২৪ সালে জিওব্যাগ ফালানো হয়। তাতেও রক্ষা হচ্ছে না ভাঙন। চলতি বছর তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ফোরকান দফাদার ও জসিম প্যাদার বাড়ি, ছগির চাপরাশির দোকানের সামনে দিয়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। ওই গ্রামের প্রায় দুই হাজার বাসিন্দা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। পায়রায় পানি বাড়লে বা জলোচ্ছ্বাস হলেই বাঁধ ধসে তলিয়ে যেতে পারে পুরো গ্রাম।
এ গ্রামের জসিম প্যাদা ও হাবিব আকন বলেন- গ্রাম রক্ষায় পায়রা নদীর তীরে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ওই ব্যাগে বালুর পরিবর্তে মাটি দেওয়া হয়েছে। পানির তোড়ে সেই মাটি ধুয়ে ধস নেমেছে। বাঁধ ভাঙলে যে কোনো সময় গ্রাম তলিয়ে যাবে। জয়ালভাঙ্গা গ্রামেরও একই অবস্থা। এখানে তাপবিদ্যুতের এলাকাকে ব্লক ফেলে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তবে দক্ষিণ দিকে নলবুনিয়া হয়ে বঙ্গোপসাগর মোহনা পর্যন্ত চলছে ভাঙন। এ গ্রামের দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকা পায়রায় বিলীন হয়েছে। হাজারো মানুষ বসতি, জমি হারিয়ে পাড়ি দিয়েছেন অজানা গন্তব্যে। হুমকির মুখে রয়েছে নলবুনিয়া গ্রামও। রিমালের তান্ডবে এ এলাকার হাজার হাজার ঝাউগাছ ভেসে গেছে সাগরে।

জয়ালভাঙ্গা গ্রামের ষাটোর্ধ্ব রিয়াজ মুন্সি বলেন- ‘ভাঙনে মোর সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে। ১৫ বিঘা কৃষি জমি ছিল। এহন কিছু নাই।’

তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল লতিফ হাওলাদার বলেন- পায়রার ভাঙনে এ পর্যন্ত প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার একর কৃষি জমি বিলিন হয়ে গেছে। চারবার স্থান পরিবর্তন করে বাধ পুননির্মাণ করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড তালতলীর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হিমেল বলেন- দুই বছরে দেড় থেকে ২০০ ফুট কৃষিজমি নদীতে চলে গেছে। চলতি বছর ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঝুঁকির মুখে তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের বাঁধ। ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রাকিব বলেন- ভাঙন রোধে প্রকল্পের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। জিওব্যাগে বালুর পরিবর্তে মাটি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন- এ তথ্য আমার জানা নেই।