ঢাকা ০৭:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত এনসিপি ও চার বাম দল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৪৩ Time View

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের নেতারা অংশ নিলেও যাননি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা।

বাম ধারার চারটি রাজনৈতিক দলও অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি। দলগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা ৩৭ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। এর কিছু আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান।

অনুষ্ঠানস্থলে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও অতিথিরা। কিন্তু সেখানে এনসিপি ও চারটি বাম রাজনৈতিক দলের নেতাদের দেখা যায়নি।

এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এনসিপির কেউ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যাননি। না যাওয়ার কারণ আগেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।

এনসিপি গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, আইনি ভিত্তির নিশ্চয়তা ছাড়া তারা এখন জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না।

আজ দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে এনসিপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে।

জুলাই জাতীয় সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে সংশোধিত খসড়া না পেলে সনদে সই করবে না বলে গতকাল জানিয়েছিল বাম ধারার চারটি দল।

সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির আজ বিকেল পাঁচটায় প্রথম আলোকে বলেন, সিপিবিসহ চার বাম দলের নেতাদের কেউ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যাননি। তিনি বলেন, ‘আমরা কালই (বৃহস্পতিবার) আমাদের অবস্থান জানিয়েছি।’

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ছয়টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।

প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। জাতীয় পার্টিকে এই আলোচনায় রাখা হয়নি। দলটিকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গতকাল জানিয়েছেন, কোনো দল চাইলে পরেও সনদে সই করতে পারবে।

আজ বিকেল চারটায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার আগে বেলা ১টার দিকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে একদল লোক অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়।

এরপর পুলিশ ও ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

Please Share This Post in Your Social Media

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত এনসিপি ও চার বাম দল

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৫:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের নেতারা অংশ নিলেও যাননি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা।

বাম ধারার চারটি রাজনৈতিক দলও অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি। দলগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।

জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আজ শুক্রবার বিকেল ৪টা ৩৭ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। এর কিছু আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান।

অনুষ্ঠানস্থলে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও অতিথিরা। কিন্তু সেখানে এনসিপি ও চারটি বাম রাজনৈতিক দলের নেতাদের দেখা যায়নি।

এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এনসিপির কেউ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যাননি। না যাওয়ার কারণ আগেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।

এনসিপি গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, আইনি ভিত্তির নিশ্চয়তা ছাড়া তারা এখন জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না।

আজ দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে এনসিপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐকমত্যের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি কাগজে সই করছে।

জুলাই জাতীয় সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে সংশোধিত খসড়া না পেলে সনদে সই করবে না বলে গতকাল জানিয়েছিল বাম ধারার চারটি দল।

সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির আজ বিকেল পাঁচটায় প্রথম আলোকে বলেন, সিপিবিসহ চার বাম দলের নেতাদের কেউ জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যাননি। তিনি বলেন, ‘আমরা কালই (বৃহস্পতিবার) আমাদের অবস্থান জানিয়েছি।’

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ছয়টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।

প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। জাতীয় পার্টিকে এই আলোচনায় রাখা হয়নি। দলটিকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গতকাল জানিয়েছেন, কোনো দল চাইলে পরেও সনদে সই করতে পারবে।

আজ বিকেল চারটায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার আগে বেলা ১টার দিকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে একদল লোক অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়।

এরপর পুলিশ ও ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।