ঢাকা ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনের বিস্ফোরক মামলার আসামি হয়েও লোহাগাড়ায় সরকারি চাকরিতে বহাল বাবুল

লোহাগাড়া উপজেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : ১০:২৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৩৮ Time View

‎চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কর্মরত জারিকারক বাবুল কান্তি নাথের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। জুলাই-আগস্ট মাসে দায়ের হওয়া বিস্ফোরণ মামলার ১৭(৮)২৪ নং মামলায় তিনি ১৭০ নম্বর আসামি হলেও এখনও দায়িত্বে বহাল রয়েছেন এবং পুলিশও তাকে ধরতে পারেনি।

‎স্থানীয় সূত্র জানায়, বাবুল কান্তি নাথ বীর মুক্তিযোদ্ধা সামাই চরন নাথের ছেলে। অভিযোগ রয়েছে, বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে তিনি চাকরিতে প্রবেশ করেন। শুধু তিনি নন, একই সনদ ব্যবহার করে তার আরও তিন ভাই সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেছেন, একজন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর, একজন ডাক বিভাগের কর্মকর্তা এবং আরেকজন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কর্মরত। ফলে প্রশাসনিক প্রভাব ও পারিবারিক শক্তি ব্যবহার করে বাবুল হয়ে উঠেছেন অদৃশ্য ক্ষমতাধর।

‎ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বাবুল দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে লোহাগাড়ায় জারিকারক পদে বহাল থেকে ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে ভয় দেখিয়ে বালু উত্তোলনকারী চক্র, ভুমি দস্যু, ইটভাটা ও ডাম্পার মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করেছেন। এই অবৈধ অর্থে তিনি ডাম্পার, স্কাবেটরসহ কোটি টাকার সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন।

‎গত বছর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে মিরসরাই উপজেলায় বদলি করা হলেও রহস্যজনকভাবে আবার আগের পদেই ফিরে আসেন। রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় তার অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

‎এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, বিস্ফোরণ মামলার আসামি হয়েও একজন কর্মকর্তা কীভাবে নির্বিঘ্নে চাকরিতে বহাল থাকতে পারেন? পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও প্রশাসনের নীরবতায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

‎লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, এই মামলার তদন্ত চলছে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

‎এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সাইফুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি । স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনিক দুর্নীতি ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া না ভাঙলে বাবুলের মতো আসামিরা বিচার এড়িয়ে যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

জুলাই আন্দোলনের বিস্ফোরক মামলার আসামি হয়েও লোহাগাড়ায় সরকারি চাকরিতে বহাল বাবুল

লোহাগাড়া উপজেলা প্রতিনিধি
Update Time : ১০:২৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

‎চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কর্মরত জারিকারক বাবুল কান্তি নাথের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। জুলাই-আগস্ট মাসে দায়ের হওয়া বিস্ফোরণ মামলার ১৭(৮)২৪ নং মামলায় তিনি ১৭০ নম্বর আসামি হলেও এখনও দায়িত্বে বহাল রয়েছেন এবং পুলিশও তাকে ধরতে পারেনি।

‎স্থানীয় সূত্র জানায়, বাবুল কান্তি নাথ বীর মুক্তিযোদ্ধা সামাই চরন নাথের ছেলে। অভিযোগ রয়েছে, বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে তিনি চাকরিতে প্রবেশ করেন। শুধু তিনি নন, একই সনদ ব্যবহার করে তার আরও তিন ভাই সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করেছেন, একজন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর, একজন ডাক বিভাগের কর্মকর্তা এবং আরেকজন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কর্মরত। ফলে প্রশাসনিক প্রভাব ও পারিবারিক শক্তি ব্যবহার করে বাবুল হয়ে উঠেছেন অদৃশ্য ক্ষমতাধর।

‎ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, বাবুল দীর্ঘ একযুগেরও বেশি সময় ধরে লোহাগাড়ায় জারিকারক পদে বহাল থেকে ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে ভয় দেখিয়ে বালু উত্তোলনকারী চক্র, ভুমি দস্যু, ইটভাটা ও ডাম্পার মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করেছেন। এই অবৈধ অর্থে তিনি ডাম্পার, স্কাবেটরসহ কোটি টাকার সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন।

‎গত বছর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে মিরসরাই উপজেলায় বদলি করা হলেও রহস্যজনকভাবে আবার আগের পদেই ফিরে আসেন। রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় তার অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

‎এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, বিস্ফোরণ মামলার আসামি হয়েও একজন কর্মকর্তা কীভাবে নির্বিঘ্নে চাকরিতে বহাল থাকতে পারেন? পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও প্রশাসনের নীরবতায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।

‎লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, এই মামলার তদন্ত চলছে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

‎এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সাইফুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি । স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনিক দুর্নীতি ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া না ভাঙলে বাবুলের মতো আসামিরা বিচার এড়িয়ে যাবে।