ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শনসংক্রান্ত অনুচ্ছেদ সংবিধান থেকে বিলুপ্তি চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার উৎসর্গ করলেন মারিয়া ৯ মাসে ইতালিতে পাড়ি জমানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশী প্রত্যেক উপদেষ্টাই বিদেশি নাগরিক : রুমিন ফারহানা আবারও ফিল্মফেয়ারের মঞ্চ মাতাবেন শাহরুখ ইসলামি শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে: চরমোনাই পীর আমলাতন্ত্রকে একটি নির্দিষ্ট দলের পকেটে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল মিশরের বিচার বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বৈঠক কারামুক্ত শহিদুল আলম, গেলেন তুরস্কে অটোরিকশা চালকের হামলায় পুলিশ কনস্টেবল আহত

জামায়াতে ইসলামীর যে পথ সব দলের জন্য শিক্ষা

মোহাম্মদ আলম
  • Update Time : ০৭:৩৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩৩৭ Time View

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সারাদেশে চাঁদাবাজী, দখলবাজীতে জামায়াতে ইসলামীর কোন নেতা-কর্মীর নাম আসেনি। দলটির কেন্দ্র, মহানগর, জেলা-উপজেলা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিয়ন থেকে এক্কেবারে গ্রামের ইউনিট কমিটিও রয়েছে। একটি দলের এত বিশাল সাংগঠনিক কাঠামোতে সম্পৃক্ত কোন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনাও শোনা যায়নি। মোটা দাগে বলতে গেলে, দেশের সব রাজনৈতিক দলের এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। সূক্ষ বিবেচনায় বলতে, জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কিভাবে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বা তৃণমূল কর্মীরা কোন যাদুতে সংযত রয়েছে, তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত বা সামাজিক জীবন খুব কঠিন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে লোমহর্ষক। ব্যতিক্রম নয় জামায়াতে ইসলামী নেতাকর্মীদের বেলায়ও। প্রকাশ্যে ব্যবসা বাণিজ্য করার সুযোগ ছিলো না। খুঁজে খুঁজে জামায়াত নেতা-কর্মীদের ব্যবসা নানান অজুহাতে বন্ধ করা হয়েছে। ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা পলায়নের সাথে সাথে আওয়ামী চাঁদাবাজ দখলবাজরাও হাওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকটা ভেলকিবাজির মত চাঁদাবাজি, দখলবাজি বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড একটুও কমেনি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে বেড়েছে।

বলা হচ্ছে, ক্ষমতার সুবাস পাওয়া দলের নেতা-কর্মীরা ‘ক্ষুধার্ত সিংহের’ মত চাঁদাবাজি দখলবাজিতে হামলে পড়েছে। ওই সব নেতাদের মামলা বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। এক রকম নগদ অর্থ হাতানোর প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। দলের কেন্দ্র থেকে বহিস্কারাদেশ বা পদ-পদবি স্থগিত করেও তাদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী কতিপয় সমন্বয়কের বিরেুদ্ধেও চাঁদাবাজি তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। এদের মধ্যে কোন প্রকার প্রতিহিংসামূলক কর্মকান্ড দেখা যায়নি। বরং জামায়াতে ইসালামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামী লীগকে ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় আমিরের নির্দেশ মেনে চলছে। এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের জন্য শিক্ষনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শেখ হাসিনার শাসনামলে ভুক্তভোগী ঢাকা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমিরের সঙ্গে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কথা হয়। তার ভাষ্য, নারায়ণগঞ্জে যৌথ মালিকানাধীন তাদের টেক্সটাইল মিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজধানী ঢাকার রাস্তা থেকে রাতারাতি হাওয়া করে দেওয়া হয় পাঞ্জেরী পরিবহনের শতাধিক গাড়ি। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সাবেক আমিরের আত্মীয় স্বজনের সব ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ বা লুট করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরিবর্তিত পরিস্থিতে ওইসব জামায়াত নেতা চাইলে খুব সহজে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বুঝে নিতে পারতেন। যেভাবে ভুক্তভোগী অন্যরা করেছে। কিন্তু জামায়াত নেতারা অন্যদের পথে হাটেননি। অবস্থাদৃষ্টে দেখা যাচ্ছে, দখল চাঁদাবাজি দূরে থাক নিজেদের হারানো সম্পদ ফিরে পেতেও অবৈধ পন্থায় যায়নি।

একজন সচেতন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে বিগত কয়েক মাসে দেশের ঘটনা প্রবাহ গভিরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সত্য লিখতে কখনোই বুক কাঁপেনি। অত্যন্ত সচেতনভাবেই বলছি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের নিয়ে অনেক সমালোচনা আছে। আওয়ামী লীগ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধেও তেমন অনেক কথা বলা যাবে। অতিত ইতিহাস থেকে জামায়াতে ইসলামী শিক্ষা নিয়েছে বলাই যায়। জামায়াত নেতৃবৃন্দ জনসাধারণের অধিকার নিয়ে সোচ্চার, হিংসা প্রতিহিংসা পরায়ণতা থেকে নেতৃবৃন্দ সংযত আচরণ করছেন। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে এসব বিষয় অন্যদের জন্য শিক্ষনীয় হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

জামায়াতে ইসলামীর যে পথ সব দলের জন্য শিক্ষা

মোহাম্মদ আলম
Update Time : ০৭:৩৬:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সারাদেশে চাঁদাবাজী, দখলবাজীতে জামায়াতে ইসলামীর কোন নেতা-কর্মীর নাম আসেনি। দলটির কেন্দ্র, মহানগর, জেলা-উপজেলা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিয়ন থেকে এক্কেবারে গ্রামের ইউনিট কমিটিও রয়েছে। একটি দলের এত বিশাল সাংগঠনিক কাঠামোতে সম্পৃক্ত কোন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনাও শোনা যায়নি। মোটা দাগে বলতে গেলে, দেশের সব রাজনৈতিক দলের এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। সূক্ষ বিবেচনায় বলতে, জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কিভাবে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বা তৃণমূল কর্মীরা কোন যাদুতে সংযত রয়েছে, তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত বা সামাজিক জীবন খুব কঠিন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে লোমহর্ষক। ব্যতিক্রম নয় জামায়াতে ইসলামী নেতাকর্মীদের বেলায়ও। প্রকাশ্যে ব্যবসা বাণিজ্য করার সুযোগ ছিলো না। খুঁজে খুঁজে জামায়াত নেতা-কর্মীদের ব্যবসা নানান অজুহাতে বন্ধ করা হয়েছে। ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা পলায়নের সাথে সাথে আওয়ামী চাঁদাবাজ দখলবাজরাও হাওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকটা ভেলকিবাজির মত চাঁদাবাজি, দখলবাজি বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড একটুও কমেনি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে বেড়েছে।

বলা হচ্ছে, ক্ষমতার সুবাস পাওয়া দলের নেতা-কর্মীরা ‘ক্ষুধার্ত সিংহের’ মত চাঁদাবাজি দখলবাজিতে হামলে পড়েছে। ওই সব নেতাদের মামলা বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। এক রকম নগদ অর্থ হাতানোর প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে। দলের কেন্দ্র থেকে বহিস্কারাদেশ বা পদ-পদবি স্থগিত করেও তাদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না। জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী কতিপয় সমন্বয়কের বিরেুদ্ধেও চাঁদাবাজি তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। এদের মধ্যে কোন প্রকার প্রতিহিংসামূলক কর্মকান্ড দেখা যায়নি। বরং জামায়াতে ইসালামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামী লীগকে ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় আমিরের নির্দেশ মেনে চলছে। এটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের জন্য শিক্ষনীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শেখ হাসিনার শাসনামলে ভুক্তভোগী ঢাকা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমিরের সঙ্গে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) কথা হয়। তার ভাষ্য, নারায়ণগঞ্জে যৌথ মালিকানাধীন তাদের টেক্সটাইল মিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজধানী ঢাকার রাস্তা থেকে রাতারাতি হাওয়া করে দেওয়া হয় পাঞ্জেরী পরিবহনের শতাধিক গাড়ি। একইভাবে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সাবেক আমিরের আত্মীয় স্বজনের সব ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ বা লুট করা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরিবর্তিত পরিস্থিতে ওইসব জামায়াত নেতা চাইলে খুব সহজে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বুঝে নিতে পারতেন। যেভাবে ভুক্তভোগী অন্যরা করেছে। কিন্তু জামায়াত নেতারা অন্যদের পথে হাটেননি। অবস্থাদৃষ্টে দেখা যাচ্ছে, দখল চাঁদাবাজি দূরে থাক নিজেদের হারানো সম্পদ ফিরে পেতেও অবৈধ পন্থায় যায়নি।

একজন সচেতন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে বিগত কয়েক মাসে দেশের ঘটনা প্রবাহ গভিরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সত্য লিখতে কখনোই বুক কাঁপেনি। অত্যন্ত সচেতনভাবেই বলছি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের নিয়ে অনেক সমালোচনা আছে। আওয়ামী লীগ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধেও তেমন অনেক কথা বলা যাবে। অতিত ইতিহাস থেকে জামায়াতে ইসলামী শিক্ষা নিয়েছে বলাই যায়। জামায়াত নেতৃবৃন্দ জনসাধারণের অধিকার নিয়ে সোচ্চার, হিংসা প্রতিহিংসা পরায়ণতা থেকে নেতৃবৃন্দ সংযত আচরণ করছেন। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে এসব বিষয় অন্যদের জন্য শিক্ষনীয় হতে পারে।