ঢাকা ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের সভায় ডিইউজে নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ প্যানেলের সিদ্ধান্ত গৃহীত ‘তিন গোয়েন্দা’ খ্যাত রকিব হাসান আর নেই বাংলাদেশি তরুণীদের কাজের কথা বলে চীনে নিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রি জুম মিটিংয়ে দেশের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে হাসিনা, ফেঁসে যাচ্ছেন আ. লীগের ২৮৬ নেতাকর্মী টিকটক ভিডিও বানাতে গিয়ে নৌকা ডুবে কিশোরের মৃত্যু ফ্যাসিস্টদেরকে আমরা আর ফেরত চাই না : মির্জা ফখরুল আ.লীগের ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়া প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা মিরপুরে আগুনে ১৬ জনের লাশ উদ্ধার, তল্লাশি চলছে ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনসিপি প্রতীক না নিলে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

জাতীয় ডেস্ক
  • Update Time : ১১:৫১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৯৫ Time View

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে থাকা বাংলাদেশ পুলিশের একমাত্র অবশিষ্ট কনটিনজেন্টকে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে বৈশ্বিক শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের পুলিশের দীর্ঘদিনের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ অংশগ্রহণ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, ১৮০ সদস্যের এই কনটিনজেন্টের মধ্যে ৭০ জন নারী পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আসবেন।

মাত্র দুই মাস আগে এই কনটিনজেন্টের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের একমাত্র সর্ব-মহিলা পুলিশ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছিল।

জাতিসংঘের নথি সূত্রে জানা যায়, কঙ্গো, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণ সুদানের বিভিন্ন মিশনে ধাপে ধাপে সদস্যসংখ্যা কমানো ও প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনা উল্লেখ করা রয়েছে।

ওই নথি অনুযায়ী, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যাদের পুরো কনটিনজেন্ট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে ক্যামেরুন, সেনেগাল ও মিসরের মতো দেশের কনটিনজেন্ট আংশিকভাবে হ্রাস করা হবে।

জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ পুলিশ সূত্র জানায়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে চলমান অর্থ সংকটের কারণেই এই সদস্যসংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি নিশ্চিত করেছেন, জাতিসংঘের বাজেট সংকোচন ও সংস্থার জনবল কমানোর নীতির কারণে বাংলাদেশের এফপিইউ ইউনিটকে নভেম্বরের মাঝামাঝি দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনের পুলিশ কমিশনার আমাদের ইউনিট কমান্ডারকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। বাংলাদেশের এফপিইউ সব সময় ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করেছে, তাই এই সিদ্ধান্তটি বেশ হতাশাজনক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শাহাদত হোসেন বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে পাঁচ বছর আগে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করা পুলিশের এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের কূটনৈতিক দুর্বলতাকেই প্রকাশ করছে।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণত সদস্যসংখ্যা কমালে তা সব দেশের ক্ষেত্রেই আংশিকভাবে প্রযোজ্য হয়। কিন্তু এবার পুরো বাংলাদেশ এফপিইউকে নভেম্বরের মধ্যে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি পুলিশের জন্য যেমন হতাশার, তেমনি জাতির জন্যও। সরকারের উচিত ছিল জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া।’

সূত্র জানায়, ২০ অক্টোবরের মধ্যে ১৬২ জন সদস্যকে প্রত্যাবাসন করা হবে, আর বাকি ১৮ জন প্রশাসনিক ও লজিস্টিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে নভেম্বরের মধ্যভাগে ফিরবেন।

বর্তমান এই দলটি আগস্টে কঙ্গো পৌঁছে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করে। মাত্র এক মাস পরই জাতিসংঘ তাদের ফেরার নির্দেশ দিয়েছে।

২০০৫ সাল থেকে কঙ্গোতে বাংলাদেশ পুলিশের নারী এফপিইউ ইউনিট দায়িত্ব পালন করছে। চলতি বছরের আগস্টে ওই নারী ইউনিটের মেডেল প্যারেডে জাতিসংঘ মহাসচিবের কঙ্গো বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, এটি ছিল জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিরল এক স্বীকৃতি, যা ইউনিটটির প্রতি তাদের আস্থা প্রকাশ করে।

Please Share This Post in Your Social Media

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

জাতীয় ডেস্ক
Update Time : ১১:৫১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে থাকা বাংলাদেশ পুলিশের একমাত্র অবশিষ্ট কনটিনজেন্টকে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে বৈশ্বিক শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের পুলিশের দীর্ঘদিনের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ অংশগ্রহণ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, ১৮০ সদস্যের এই কনটিনজেন্টের মধ্যে ৭০ জন নারী পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরে আসবেন।

মাত্র দুই মাস আগে এই কনটিনজেন্টের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের একমাত্র সর্ব-মহিলা পুলিশ ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছিল।

জাতিসংঘের নথি সূত্রে জানা যায়, কঙ্গো, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণ সুদানের বিভিন্ন মিশনে ধাপে ধাপে সদস্যসংখ্যা কমানো ও প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনা উল্লেখ করা রয়েছে।

ওই নথি অনুযায়ী, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যাদের পুরো কনটিনজেন্ট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে ক্যামেরুন, সেনেগাল ও মিসরের মতো দেশের কনটিনজেন্ট আংশিকভাবে হ্রাস করা হবে।

জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ পুলিশ সূত্র জানায়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে চলমান অর্থ সংকটের কারণেই এই সদস্যসংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি নিশ্চিত করেছেন, জাতিসংঘের বাজেট সংকোচন ও সংস্থার জনবল কমানোর নীতির কারণে বাংলাদেশের এফপিইউ ইউনিটকে নভেম্বরের মাঝামাঝি দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনের পুলিশ কমিশনার আমাদের ইউনিট কমান্ডারকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। বাংলাদেশের এফপিইউ সব সময় ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করেছে, তাই এই সিদ্ধান্তটি বেশ হতাশাজনক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শাহাদত হোসেন বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে পাঁচ বছর আগে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করা পুলিশের এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের কূটনৈতিক দুর্বলতাকেই প্রকাশ করছে।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ সাধারণত সদস্যসংখ্যা কমালে তা সব দেশের ক্ষেত্রেই আংশিকভাবে প্রযোজ্য হয়। কিন্তু এবার পুরো বাংলাদেশ এফপিইউকে নভেম্বরের মধ্যে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি পুলিশের জন্য যেমন হতাশার, তেমনি জাতির জন্যও। সরকারের উচিত ছিল জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনায় যাওয়া।’

সূত্র জানায়, ২০ অক্টোবরের মধ্যে ১৬২ জন সদস্যকে প্রত্যাবাসন করা হবে, আর বাকি ১৮ জন প্রশাসনিক ও লজিস্টিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে নভেম্বরের মধ্যভাগে ফিরবেন।

বর্তমান এই দলটি আগস্টে কঙ্গো পৌঁছে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করে। মাত্র এক মাস পরই জাতিসংঘ তাদের ফেরার নির্দেশ দিয়েছে।

২০০৫ সাল থেকে কঙ্গোতে বাংলাদেশ পুলিশের নারী এফপিইউ ইউনিট দায়িত্ব পালন করছে। চলতি বছরের আগস্টে ওই নারী ইউনিটের মেডেল প্যারেডে জাতিসংঘ মহাসচিবের কঙ্গো বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, এটি ছিল জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিরল এক স্বীকৃতি, যা ইউনিটটির প্রতি তাদের আস্থা প্রকাশ করে।