ঢাকা ১০:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য ধর্ষণের বিরুদ্ধে কুবিতে মানববন্ধন 

‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে লাখো মানুষের গণপদযাত্রা ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৪:১৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ২০ Time View

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে পদযাত্রা করেছে তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটি। পদযাত্রায় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ তিস্তা নদীর পাড়ের হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার পর পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার ১১টি পয়েন্টে এ কর্মসূচি একযোগে শুরু হয়। লালমনিরহাট প্রান্তের তিস্তা ব্রিজ থেকে গণপদযাত্রাটি শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হবে।

পদযাত্রার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে ১২০ কিলোমিটারের তিস্তা নদীর দু’পাড়। দ্বিতীয় দিনে পদযাত্রার পরে তিস্তা নদীতে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

সোমবার সকাল থেকে তিস্তাপাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান, জনতার সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু-সংলগ্ন পয়েন্টে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে অনুষ্ঠানরত স্মরণকালের এই বৃহৎ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন এ অঞ্চলের সর্বস্তরের লাখো মানুষ। প্রথম দিনের মতো আজ সমাপনী দিনেও সকাল থেকেই ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। সেইসঙ্গে প্রতিবাদ হিসেবে দেশীয় সংগীত, নৃত্য, খেলাধুলাও চলছে।

এদিকে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচিতেও সকাল থেকেই তিস্তা নদীর তীরে জমে উঠেছে মানুষের ঢল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে তিস্তার দুই পাড়ের এই সমাবেশস্থল। আজও তিস্তাপাড়ে হাজারো মানুষ ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগান সম্বলিত পতাকাসহ ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়েছেন।

আজ বিকেলে কর্মসূচির সমাপনী জনতার গণসমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশির ভাগ সময়ে এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। ফলে অসময়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিচ্ছে, বছর বছর বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

এমন পরিস্থিতিতে নদী গবেষক ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তরের পাঁচ জেলার দুই কোটি মানুষের জীবনমান রক্ষায় একমাত্র সমাধান হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। নদীকেন্দ্রীক কৃষিজমি রক্ষা, ভাঙন রোধসহ চরগুলো রক্ষায় সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো উজানের পলিতে নদীর বুক ভরাট হলে স্বল্প পানিতে প্রতিবছর অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। তারা মনে করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি তিস্তা নদীর সুরক্ষার বিষয়টিও এখন জরুরি।

Please Share This Post in Your Social Media

‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে লাখো মানুষের গণপদযাত্রা ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
Update Time : ০৪:১৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে পদযাত্রা করেছে তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটি। পদযাত্রায় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ তিস্তা নদীর পাড়ের হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার পর পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার ১১টি পয়েন্টে এ কর্মসূচি একযোগে শুরু হয়। লালমনিরহাট প্রান্তের তিস্তা ব্রিজ থেকে গণপদযাত্রাটি শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হবে।

পদযাত্রার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে ১২০ কিলোমিটারের তিস্তা নদীর দু’পাড়। দ্বিতীয় দিনে পদযাত্রার পরে তিস্তা নদীতে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

সোমবার সকাল থেকে তিস্তাপাড়ে ৪৮ ঘণ্টা লাগাতার অবস্থান, জনতার সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু-সংলগ্ন পয়েন্টে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে অনুষ্ঠানরত স্মরণকালের এই বৃহৎ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন এ অঞ্চলের সর্বস্তরের লাখো মানুষ। প্রথম দিনের মতো আজ সমাপনী দিনেও সকাল থেকেই ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। সেইসঙ্গে প্রতিবাদ হিসেবে দেশীয় সংগীত, নৃত্য, খেলাধুলাও চলছে।

এদিকে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচিতেও সকাল থেকেই তিস্তা নদীর তীরে জমে উঠেছে মানুষের ঢল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে তিস্তার দুই পাড়ের এই সমাবেশস্থল। আজও তিস্তাপাড়ে হাজারো মানুষ ‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগান সম্বলিত পতাকাসহ ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়েছেন।

আজ বিকেলে কর্মসূচির সমাপনী জনতার গণসমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশির ভাগ সময়ে এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। ফলে অসময়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিচ্ছে, বছর বছর বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

এমন পরিস্থিতিতে নদী গবেষক ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তরের পাঁচ জেলার দুই কোটি মানুষের জীবনমান রক্ষায় একমাত্র সমাধান হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। নদীকেন্দ্রীক কৃষিজমি রক্ষা, ভাঙন রোধসহ চরগুলো রক্ষায় সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো উজানের পলিতে নদীর বুক ভরাট হলে স্বল্প পানিতে প্রতিবছর অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। তারা মনে করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি তিস্তা নদীর সুরক্ষার বিষয়টিও এখন জরুরি।