জবির দখলকৃত হল ও মাঠ উদ্ধারে মঙ্গলবার মাঠে নামছে শিক্ষার্থীরা

- Update Time : ০১:১৭:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৪
- / ১৫০ Time View
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেদখল হলগুলো উদ্ধারে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) থেকে মাঠে নামছে শিক্ষার্থীরা। হল উদ্ধার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহায়তা করবেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। একইসঙ্গে ধূপখোলা মাঠকেও শিক্ষার্থীদের আগের মতো নিজেদের দখলে নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সোমবার (১২ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয় নুর নবী এসব কথা জানান। তিনি বলেন, ট্রেজারার মহোদয় স্বপদে বহাল থাকবেন। তার নেতৃত্বে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হল আন্দোলন শুরু হবে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই আন্দোলনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নুর নবী বলেন, আমরা আশাকরি শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা ট্রেজারার মহোদয় মেনে নেবেন। ইতোমধ্যে তিনি আমাদের ১৩ দফা শুনেছেন। মেনে নেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।
এর আগে রোববার (১১ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। সেখানে শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে ১৩ দফা দাবি উপস্থাপন করেন তারা। ১৩ দফা দাবিগুলো হলো:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর সহ সম্পূর্ণ প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রভোস্ট ও ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের প্রধান এবং রেজিস্ট্রারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ক্যাম্পাসের ভেতরে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। ক্যাম্পাসের বাইরে তার রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে। এটা যে কারো ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু, ক্যাম্পাসের ভেতরে সবাই সাধারণ ছাত্র।
৩. শহীদ ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সার্বিক খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
৪. আগে ছাত্রলীগের পদধারী ছিল এবং এর ওপর ভিত্তি করে ক্যাম্পাসে চাকরি পেয়েছে তারা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কামরুন নাহার লিপিবসহ যারা এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতার সঙ্গে সম্পৃক্ত, শহীদ ও আহত সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঠাট্টা টিটকারি করেছে, তাদের আগামী দুইদিনের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে হবে।
৫. আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ২০ তারিখের মধ্যে জকসুর নীতিমালা প্রণয়ন করে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. দখল হলগুলো অবিলম্বে দখলমুক্ত করতে হবে এবং মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দিতে হবে।
৭. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পাসের বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
৮. শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
৯. ক্যাফেটেরিয়ার জন্য বাজেট বরাদ্দ রেখে খাবারের মান উন্নত করতে হবে এবং অতি শিগগিরই নতুন ক্যাফেটেরিয়া নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
১০. নারী শিক্ষার্থীদের কমন রুমের মান উন্নত করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে শক্ত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
১১. ক্যাম্পাসের আশপাশে চাঁদাবাজি, রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি বন্ধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. পোষ্য কোটা বাতিল এবং রাজনৈতিক নিয়োগ-বাণিজ্য আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে।
১৩. গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বাতন্ত্র্য ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠানের রূপ দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, দখল হওয়া জবির ১১টির হলের অধিকাংশ হল দখল করে আছেন পুরান ঢাকার আওয়ামী নেতা হাজী সেলিম। এ ছাড়া একমাত্র খেলার মাঠ ধুপখোলার মাঠটি কিছুদিন আগে দখলে নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেদখল হলগুলো হলো, ড. হাবিবুর রহমান হল, বাণী ভবন হল, আব্দুর রহমান হল, শহীদ আনোয়ার শফিক হল, সাইদুর রহমান হল, রউফ মজুমদার হল, শহীদ আজমল হোসেন হল, বজলুর রহমান হল, নজরুল ইসলাম খাঁন হল, শহীদ শাহাবুদ্দিন হল ও তিব্বত হল।