ছাত্র নেতৃত্বের মঞ্চ চাই: জাককানইবিতে সক্রিয় ছাত্র সংসদের দাবি

- Update Time : ০৬:৩২:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
- / ১৫ Time View
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠন আজ সময়ের দাবি। এটি কেবল নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্র নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার ও প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েও (জাককানইবি) শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছ ও দলনিরপেক্ষ ছাত্র সংসদ গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা মনে করেন, দলীয় রাজনীতির প্রভাব শিক্ষাঙ্গনে বিভাজন সৃষ্টি করছে, যা গণতান্ত্রিক চেতনা ও নৈতিকতার বিকাশে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে জাককানইবিতে দ্রুত ও কার্যকর ছাত্র সংসদ গঠনের দাবি আবারও নতুন করে সামনে এসেছে।
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তকিব হাসান বলেন,
“দলীয় রাজনীতি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক উন্নয়নে কোনো দীর্ঘস্থায়ী সহায়তা দেয় না বরং বিভ্রান্ত ও ব্যবহৃত করে। ছাত্র সংসদ হলে শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব বিকাশ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও জবাবদিহিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবে।”
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস লামইয়া বলেন,
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। পরিচ্ছন্ন ও সবুজ ক্যাম্পাস গড়তেও এদের অবদান অপরিসীম।”
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী হিমেল আহমেদ বলেন,
“গত দেড় দশকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের ওপর দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাস রেখে চাই, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক।”
আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সালেহীন বলেন,
“জুলাই আন্দোলন প্রমাণ করেছে, দলীয় রাজনীতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের পথে বড় বাধা। এখন সময় এসেছে একটি কার্যকর, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ গঠনের।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীরাও জানান, একটি স্বতন্ত্র ছাত্র সংসদ কেবলমাত্র নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণির জন্য নয়, বরং পুরো শিক্ষার্থীবৃন্দের বৃহৎ স্বার্থ রক্ষায় সহায়ক হবে। এটি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও সমস্যাগুলো একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
তাঁরা বলেন,“ছাত্র সংসদ কেবল নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্র নয়, বরং তা একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অনুশীলন ক্ষেত্র। এই উদ্যোগ কেবল জাককানইবির জন্য নয়, বরং দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, দলীয় রাজনীতির বাইরে এসে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্র সংসদ গঠন হলে শিক্ষার্থীদের মাঝে দায়িত্ববোধ, অংশগ্রহণ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটবে। ফলে ক্যাম্পাস হবে আরও সংবেদনশীল, সচেতন ও মানবিক।