ঢাকা ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে মামলা

আইন আদালত ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:৪২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৭ Time View

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম হত্যা মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮–৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রবিউলের বাবা মিজানুর রহমান ওরফে দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতা আউয়াল হাওলাদারকে। মামলার তথ্য নিশ্চিত করে বাবুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার জানান, তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে এই বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না।

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রবিউল হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে নিরীহ কিছু মানুষের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক।

এমন অভিযোগের বিষয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত আক্রোশবশত হয়রানি করা হবে না।’

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত সোমবার শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি পক্ষ ওই দিন সন্ধ্যায় মিষ্টি বিতরণ করছিল। তখন ছাত্রদলের আরেক পক্ষের কয়েকজন এসে তাঁদের না জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করার বিষয়ে কৈফিয়ত তলব করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের বাক্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। এ সময় রবিউল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হন।

বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায়, মাস তিনেক আগে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। মাসখানেক পর সেই কমিটি স্থগিত করে জেলা ছাত্রদল। এর পর থেকেই ইউনিয়নে ছাত্রদলের দুটি পক্ষ আলাদা আলাদা কর্মসূচি করে আসছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এক পক্ষে ছিলেন স্থগিত কমিটির সহসভাপতি রবিউল ইসলাম এবং অপর পক্ষে ছিলেন স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাবিদ হাসান, আগরপুর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এমদাদুল হকসহ অন্যরা। মূলত তাঁরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই দ্বন্দ্বে জড়ান।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ খান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সুযোগ নেই। যাঁরা প্রকৃতভাবে ঘটনায় জড়িত, শুধু তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বানিয়ে কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা মোটেও বরদাশত করা হবে না।’

Please Share This Post in Your Social Media

ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে মামলা

আইন আদালত ডেস্ক
Update Time : ০৯:৪২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম হত্যা মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮–৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রবিউলের বাবা মিজানুর রহমান ওরফে দুলাল হাওলাদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতা আউয়াল হাওলাদারকে। মামলার তথ্য নিশ্চিত করে বাবুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার জানান, তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে এই বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না।

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রবিউল হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে নিরীহ কিছু মানুষের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক।

এমন অভিযোগের বিষয়ে পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমরা হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। কোনো নিরীহ ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত আক্রোশবশত হয়রানি করা হবে না।’

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত সোমবার শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়কে স্বাগত জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি পক্ষ ওই দিন সন্ধ্যায় মিষ্টি বিতরণ করছিল। তখন ছাত্রদলের আরেক পক্ষের কয়েকজন এসে তাঁদের না জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করার বিষয়ে কৈফিয়ত তলব করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের বাক্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। এ সময় রবিউল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হন।

বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায়, মাস তিনেক আগে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। মাসখানেক পর সেই কমিটি স্থগিত করে জেলা ছাত্রদল। এর পর থেকেই ইউনিয়নে ছাত্রদলের দুটি পক্ষ আলাদা আলাদা কর্মসূচি করে আসছিল। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এক পক্ষে ছিলেন স্থগিত কমিটির সহসভাপতি রবিউল ইসলাম এবং অপর পক্ষে ছিলেন স্থগিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাবিদ হাসান, আগরপুর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী এমদাদুল হকসহ অন্যরা। মূলত তাঁরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই দ্বন্দ্বে জড়ান।

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ খান বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডকে কোনোভাবেই ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সুযোগ নেই। যাঁরা প্রকৃতভাবে ঘটনায় জড়িত, শুধু তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বানিয়ে কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা মোটেও বরদাশত করা হবে না।’