ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্যবসায়ী দুই বন্ধুর বিরোধের জের

ছয়শ’ কোটি টাকা হাতিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রীর স্ত্রী

শামসুল হক দুররানী
  • Update Time : ০৬:৫৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৯ Time View

সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমেরী কামালের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ী দুই বন্ধুর বিরোধের সুযোগ নিয়ে আপসের কথা বলে কাশমেরী কামাল নিজেই ছয়শ’ কোটি টাকা আত্মসাত করেন। মোস্তফা কামালের এপিএস-২ মো. মিজানুর রহমান মিজান টাকা আত্মসাতে সহযোগিতা করেন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা প্রাণ সংশয়ের ভয়ে এতদিন মুখ খুলেননি।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ভূইয়া ফেব্রিক্স লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের নামে স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মতিঝিল শাখায় ব্যবসায়ী দুই বন্ধু মো. মনোয়ার হোসেন ভূইয়া ওরফে শাওন এবং আশরাফুল আলম মোল্লা একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট খুলেন। উক্ত অ্যাকাউন্টে ছয়শ’ কাটি টাকা বৈদেশিক ফান্ড আসে। আপসে চুক্তি অনুযায়ী উক্ত বৈদেশিক ফান্ড দুই বন্ধু সমানভাবে ব্যবসায়িক কাজে বিনিয়োগ করার কথা ছিলো। কিন্তু এরই মধ্যে দুইজনের মধ্যে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

যেভাবে কাশমেরী কামাল থাবা বসালেন: ভুক্তভোগি এক বন্ধু আ হ ম মোস্তফা কামালের এপিএস-২ মো. মিজানুর রহমানের কাছে টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা চায়। এপিএস মিজান সাবেক অর্থমন্ত্রীর স্ত্রী কাশমেরী কামালকে অবহিত করেন। সবকিছু জানার পর কাশমেরী কামাল দুই ব্যবসায়ী বন্ধুকে ডেকে নেন। সেখানে দুই ব্যবসায়ী বৈদেশিক ছয়শ’ কোটি টাকা ফান্ডের বিষয়ে স্বীকার করেন।

বিরোধ মেটানোর নামে আত্মসাত: কাশমেরী কামাল দুই ব্যবসায়ী বন্ধুর বিরোধ মেটানোর কথা বলে ব্লাংক চেকে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত সমস্ত অর্থ একাধিক চেকের মাধ্যমে তিনি (কাশমেরী কামাল) তার লোক দিয়ে উত্তোলন করেন। কাশমেরী কামাল নিজের কব্জায় সমস্ত টাকা নেওয়ার পর লন্ডনে পাড়ি জমান। ব্যবসায়ী দুই বন্ধু বুঝতে পারেন তারা প্রতারিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে দেড় বছর অতিবাহিত হয়ে যায়। বিভিন্ন টালবাহানায় কাশমেরী কামাল সময় অতিবাহিত করেন। পরবর্তি সময়ে ভুক্তভোগি ব্যবসায়ীরা সরকারের প্রভাশালী মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালকে বিষয়টি অবহিত করেন।

অবশেষে যা ঘটলো: পরবর্তি সময়ে ব্যবসায়ী বন্ধুরা জানতে পারেন, কাশমেরী কামাল সমস্ত টাকা লন্ডনে পাচার করে নিয়েছেন। অনেক দেন দরবারের পর কাশমেরী কামাল ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের আত্মসাত করা অর্থ থেকে সিংহভাগ রেখে বাকী অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

লন্ডন থেকে বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকা ফেরত আনতে হলে একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীর অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হয়। এমতাবস্থায় আশরাফুল আলম মোল্লার পরামর্শে চট্টগ্রামের একটি গ্রুপ অব কোম্পানীর একাউন্টে ১০০ কোটি টাকা ট্রান্সফার করা হয় বলে জানা গেছে। তবে টাকা ট্রান্সফারের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে আশরাফুল আলম মোল্লা কোন সদুত্তর দেননি।

(ভুক্তভোগী ব্যবাসায়ীদের সঙ্গে এপিএস মিজান এবং কাশমেরী কামালের কথোপকথোনের অডিও রেকর্ডসহ প্রমাণ নওরোজের হাতে রয়েছে)।

 

Please Share This Post in Your Social Media

ব্যবসায়ী দুই বন্ধুর বিরোধের জের

ছয়শ’ কোটি টাকা হাতিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রীর স্ত্রী

শামসুল হক দুররানী
Update Time : ০৬:৫৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমেরী কামালের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ী দুই বন্ধুর বিরোধের সুযোগ নিয়ে আপসের কথা বলে কাশমেরী কামাল নিজেই ছয়শ’ কোটি টাকা আত্মসাত করেন। মোস্তফা কামালের এপিএস-২ মো. মিজানুর রহমান মিজান টাকা আত্মসাতে সহযোগিতা করেন। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা প্রাণ সংশয়ের ভয়ে এতদিন মুখ খুলেননি।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ভূইয়া ফেব্রিক্স লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের নামে স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মতিঝিল শাখায় ব্যবসায়ী দুই বন্ধু মো. মনোয়ার হোসেন ভূইয়া ওরফে শাওন এবং আশরাফুল আলম মোল্লা একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট খুলেন। উক্ত অ্যাকাউন্টে ছয়শ’ কাটি টাকা বৈদেশিক ফান্ড আসে। আপসে চুক্তি অনুযায়ী উক্ত বৈদেশিক ফান্ড দুই বন্ধু সমানভাবে ব্যবসায়িক কাজে বিনিয়োগ করার কথা ছিলো। কিন্তু এরই মধ্যে দুইজনের মধ্যে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

যেভাবে কাশমেরী কামাল থাবা বসালেন: ভুক্তভোগি এক বন্ধু আ হ ম মোস্তফা কামালের এপিএস-২ মো. মিজানুর রহমানের কাছে টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা চায়। এপিএস মিজান সাবেক অর্থমন্ত্রীর স্ত্রী কাশমেরী কামালকে অবহিত করেন। সবকিছু জানার পর কাশমেরী কামাল দুই ব্যবসায়ী বন্ধুকে ডেকে নেন। সেখানে দুই ব্যবসায়ী বৈদেশিক ছয়শ’ কোটি টাকা ফান্ডের বিষয়ে স্বীকার করেন।

বিরোধ মেটানোর নামে আত্মসাত: কাশমেরী কামাল দুই ব্যবসায়ী বন্ধুর বিরোধ মেটানোর কথা বলে ব্লাংক চেকে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত সমস্ত অর্থ একাধিক চেকের মাধ্যমে তিনি (কাশমেরী কামাল) তার লোক দিয়ে উত্তোলন করেন। কাশমেরী কামাল নিজের কব্জায় সমস্ত টাকা নেওয়ার পর লন্ডনে পাড়ি জমান। ব্যবসায়ী দুই বন্ধু বুঝতে পারেন তারা প্রতারিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে দেড় বছর অতিবাহিত হয়ে যায়। বিভিন্ন টালবাহানায় কাশমেরী কামাল সময় অতিবাহিত করেন। পরবর্তি সময়ে ভুক্তভোগি ব্যবসায়ীরা সরকারের প্রভাশালী মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালকে বিষয়টি অবহিত করেন।

অবশেষে যা ঘটলো: পরবর্তি সময়ে ব্যবসায়ী বন্ধুরা জানতে পারেন, কাশমেরী কামাল সমস্ত টাকা লন্ডনে পাচার করে নিয়েছেন। অনেক দেন দরবারের পর কাশমেরী কামাল ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের আত্মসাত করা অর্থ থেকে সিংহভাগ রেখে বাকী অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

লন্ডন থেকে বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকা ফেরত আনতে হলে একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীর অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হয়। এমতাবস্থায় আশরাফুল আলম মোল্লার পরামর্শে চট্টগ্রামের একটি গ্রুপ অব কোম্পানীর একাউন্টে ১০০ কোটি টাকা ট্রান্সফার করা হয় বলে জানা গেছে। তবে টাকা ট্রান্সফারের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে আশরাফুল আলম মোল্লা কোন সদুত্তর দেননি।

(ভুক্তভোগী ব্যবাসায়ীদের সঙ্গে এপিএস মিজান এবং কাশমেরী কামালের কথোপকথোনের অডিও রেকর্ডসহ প্রমাণ নওরোজের হাতে রয়েছে)।