চুল পড়া কমানোর ঘরোয়া উপায়
- Update Time : ১০:২০:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৬ Time View
চুল পড়া এখন খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। মানসিক চাপ, অপুষ্টি, হরমোনের পরিবর্তন, প্রসব-পরবর্তী সময়, অতিরিক্ত কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার ইত্যাদি নানা কারণে চুল ঝরতে থাকে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় নিয়মিত মানলে চুল পড়া অনেকটাই কমানো যায়।
১. পেঁয়াজের রস (Onion Juice): পেঁয়াজের রসে প্রচুর সালফার থাকে, যা মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
পদ্ধতি: একটি পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে রস বের করে মাথার স্ক্যাল্পে লাগান। ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার করুন।
২. নারকেল তেল ও লেবুর রস: নারকেল তেল চুলকে গভীর থেকে পুষ্টি জোগায় আর লেবুর রস খুশকি দূর করে।
পদ্ধতি: ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সাথে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মাথার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। আধা ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
৩. মেথি বীজ (Fenugreek Seeds): মেথিতে প্রোটিন ও নিকোটিনিক এসিড আছে যা চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
পদ্ধতি: এক মুঠো মেথি বীজ সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে পেস্ট করে মাথার ত্বকে লাগান। ৩০-৪০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৪. অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখে, খুশকি কমায় এবং চুল মজবুত করে।
পদ্ধতি: তাজা অ্যালোভেরা জেল সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগান। ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
৫. আমলকী বা আমলা: আমলকীতে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা চুল পড়া কমায় ও চুল ঘন করে।
পদ্ধতি: শুকনো আমলকী গুঁড়া নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে ঠান্ডা হলে স্ক্যাল্পে লাগান।
৬. ডিম ও অলিভ অয়েল হেয়ার মাস্ক: ডিমে প্রোটিন ও বায়োটিন থাকে যা চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে।
পদ্ধতি: ১টা ডিমের সাথে ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগান। ২০ মিনিট পর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
৭. টক দই: টক দইয়ে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। টক দইয়ের হেয়ার মাস্ক চুলে লাগালে চুল মজবুত হয়। মাথার তালুর সুস্থতা বজায় রাখতেও টক দই কার্যকর।
পদ্ধতি: ২ চামচ দইয়ের সঙ্গে ১ চামচ মধু এবং ১ চামচ লেবুর রস নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রনটা ভাল করে চুলে লাগিয়ে কম করে ৩০ মিনিট রেখে দিন। সময় হয়ে গেলে চুলটা ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৮. ক্যাস্টর অয়েল: মাথার তালুতে ক্যাস্টর অয়েল লাগালে চুলের দ্রুত বৃদ্ধি হয়। চুল পড়া হ্রাস পায়।
পদ্ধতি: ক্যাস্টর অয়েল অত্যন্ত ঘন ও চটচটে। ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করুন।
৯. নিম পাতা: এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ চুলের গোড়ায় কোনো ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমায়, তেমনি খুশকির প্রকোপও হ্রাস করে। আর এমন ধরনের রোগের হাত থেকে যখন মুক্তি মেলে, তখন স্বাভাবিকভাবেই চুল পড়াও কমে যায়।
পদ্ধতি: যখনই দেখবেন বেশি মাত্রায় হেয়ার ফল হচ্ছে, তখনই ১০-১২ টা নিম পাতা নিয়ে জলে ফুটিয়ে নেবেন। তারপর সেই জল দিয়ে ভাল করে চুলটা ধুয়ে নিতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে।
১০. বিটরুট: এতে থাকা পটাশিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি এবং সি নানাভাবে চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে থাকে।
পদ্ধতি: পরিমাণ মতো বিটরুট পাতা নিয়ে পানিতে ফেলে সেদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর পাতাগুলিকে গুঁড়ো করে নিয়ে মেথির সঙ্গে মিশিয়ে স্কাল্পে লাগালেই কেল্লাফতে! কারণ এই মিশ্রনটি ২০ মিনিট মাথায় লাগিয়ে রাখলে চুল পড়ার হার একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে তিনবার এমনভাবে চুলের পরিচর্যা করতে হবে।
কিছু অতিরিক্ত টিপস
– প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
– প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খান।
– অতিরিক্ত স্ট্রেস এড়িয়ে চলুন।
– চুলে হঠাৎ করে কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার বন্ধ করুন।
– নিয়মিত তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন।
ঘরোয়া উপায় নিয়মিত ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে চুল পড়া কমে আসবে। তবে যদি চুল পড়া অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় বা মাথার একটি নির্দিষ্ট জায়গায় টাক পড়তে থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়
























































































































































