ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
চব্বিশের বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ : কাদের সিদ্দিকী এবার যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ডিআরইউ’র নিন্দা ও প্রতিবাদ দেশের তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ করার প্রস্তাব অনুমোদন ভিক্ষুক বেশে অভিনব কৌশলে চুরি, ১০ লক্ষাধিক টাকার চোরাই মালামালসহ আটক লভ্যাংশ দেবে না ইসলামী ব্যাংক যারা নির্বাচনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে তারা নিশ্চিহ্ন হবে: ফখরুল উপদেষ্টা হতে চিকিৎসকের ২০০ কোটি টাকা লেনদেন, দুদকের অভিযান প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলছে

চব্বিশের বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ : কাদের সিদ্দিকী

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
  • Update Time : ১১:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১১ Time View

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল শহরের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘‘চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিজয় আমি স্বাধীনতার কাছাকাছি বলে মনে করি। সে বিজয়ের সফলতা সব সময় কামনা করি। কিন্তু সেই বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ভেবেছিলাম তাদের এ বিজয় হাজার বছর স্থায়ী হবে। কিন্তু এক বছরে তাদের বিজয় ধ্বংসের দিকে চলে যাবে সেটা আশা করিনি।’’

এ সময় তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মব করে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান বানচাল করা প্রসঙ্গেও কথা বলেন। কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজকে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি আলোচনা সভায় আমাদের নেতা বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী গিয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন প্রধান অতিথি ছিলেন। জেড আই খান পান্না উপস্থিত ছিলেন। মব দিয়ে তাদের অনুষ্ঠান বানচাল করা হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে কারও সভা-সমাবেশ বানচাল করার সাংবিধানিক অথবা আইনগত কোনো সুযোগ নেই। এ ঘটনায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর যারা ছিলেন, পুলিশ কমবেশি সবাইকে ধরে নিয়ে গেছে। তাদের সসম্মানে মুক্তি দেওয়া হোক। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের কাছে আমি আশা করছি।

ডিবি হেফাজতে থাকা বড় ভাই আবদুল লতিফ সিদ্দিকী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে ডক্টর কামাল হোসেন, আমার বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট জেডআই খান পান্না উপস্থিত ছিলেন। সে সময় কিছু মানুষ গিয়ে মব সৃষ্টি করে তাদের অনুষ্ঠান বানচাল করে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে কারো অনুষ্ঠান বানচাল করার সাংবিধানিক বা আইনানুগ সুযোগ নেই। তাদের এখনো ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে।’’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে যেমন বাংলাদেশ হতো না, তেমনি লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে আমরা রাজনীতিতে আসতাম না। তাদের আদৌ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে কি না জানি না।’’

তিনি বলেন, ‘‘যেকোনো গ্রেপ্তার দেখালে আমাদের আপত্তি নেই। তারা মিথ্যাও দেখাতে পারেন। কিন্তু, গ্রেপ্তারের কারণ না দেখিয়ে একজন স্বাধীন নাগরিককে এক মিনিটের জন্য কোথাও আটক রাখা যায় না। উনারা মামলা দেবে দিক, সেটা সত্য হোক মিথ্যা হোক দিক কিন্তু এমন কেন?’’

আওয়ামী লীগের চাইতেও এই সরকারের দোসরারা বড় স্বৈরাচার উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘‘মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছে না, মত প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। এভাবে দেশ চললে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে।’’

এ সময় তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের দোসরদের চাইতে এই স্বৈরাচার তো অনেক বড় স্বৈরাচার। মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছে না, মত প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে একটি ভোট অনুষ্ঠান। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, এটির সংস্কার দরকার, নিরাপত্তা আনা দরকার। আর অন্য কিছু অনির্বাচিত কারও দ্বারাই সম্ভব না এবং উচিত না। সেটা মানুষ মেনে নেবে না।

নিজের বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী সম্পর্কে কাদের সিদ্দিকী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে টাঙ্গাইলের রাজনীতির অনেক কিছুই হতো না। যেমন বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না, লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে আমরা রাজনীতিতে আসতাম না। রিপোর্টার্স ইউনিটির ঘটনায় সারা দেশের জেগে ওঠা ও প্রতিবাদ করা উচিত। ঘুমিয়ে থাকলে আমাদের সম্মান, নিরাপত্তা ও ইজ্জত থাকবে না। সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি অথবা অন্য কোনো দলের মুক্তিযোদ্ধা নন, তারা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা। তারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, এ চেতনা তাদের থাকা দরকার।

তিনি বলেন, রাজনীতিকে বাদ দিয়ে এভাবে দেশে মব সৃষ্টি করা, দেশে অরাজকতা করা এবং আইনশৃঙ্খলার পতন ঘটানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব, তারা যদি এটা চালাতে না পারে, তাহলে তাদের সরে যাওয়া উচিত। আর যদি ক্ষমতায় থাকেন জনগণের দায়িত্ব নিয়েই ক্ষমতায় থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘মঞ্চ ৭১’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীসহ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

চব্বিশের বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ : কাদের সিদ্দিকী

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
Update Time : ১১:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল শহরের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘‘চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিজয় আমি স্বাধীনতার কাছাকাছি বলে মনে করি। সে বিজয়ের সফলতা সব সময় কামনা করি। কিন্তু সেই বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ভেবেছিলাম তাদের এ বিজয় হাজার বছর স্থায়ী হবে। কিন্তু এক বছরে তাদের বিজয় ধ্বংসের দিকে চলে যাবে সেটা আশা করিনি।’’

এ সময় তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মব করে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান বানচাল করা প্রসঙ্গেও কথা বলেন। কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজকে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি আলোচনা সভায় আমাদের নেতা বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী গিয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন প্রধান অতিথি ছিলেন। জেড আই খান পান্না উপস্থিত ছিলেন। মব দিয়ে তাদের অনুষ্ঠান বানচাল করা হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে কারও সভা-সমাবেশ বানচাল করার সাংবিধানিক অথবা আইনগত কোনো সুযোগ নেই। এ ঘটনায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর যারা ছিলেন, পুলিশ কমবেশি সবাইকে ধরে নিয়ে গেছে। তাদের সসম্মানে মুক্তি দেওয়া হোক। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের কাছে আমি আশা করছি।

ডিবি হেফাজতে থাকা বড় ভাই আবদুল লতিফ সিদ্দিকী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে ডক্টর কামাল হোসেন, আমার বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট জেডআই খান পান্না উপস্থিত ছিলেন। সে সময় কিছু মানুষ গিয়ে মব সৃষ্টি করে তাদের অনুষ্ঠান বানচাল করে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে কারো অনুষ্ঠান বানচাল করার সাংবিধানিক বা আইনানুগ সুযোগ নেই। তাদের এখনো ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে।’’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে যেমন বাংলাদেশ হতো না, তেমনি লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে আমরা রাজনীতিতে আসতাম না। তাদের আদৌ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে কি না জানি না।’’

তিনি বলেন, ‘‘যেকোনো গ্রেপ্তার দেখালে আমাদের আপত্তি নেই। তারা মিথ্যাও দেখাতে পারেন। কিন্তু, গ্রেপ্তারের কারণ না দেখিয়ে একজন স্বাধীন নাগরিককে এক মিনিটের জন্য কোথাও আটক রাখা যায় না। উনারা মামলা দেবে দিক, সেটা সত্য হোক মিথ্যা হোক দিক কিন্তু এমন কেন?’’

আওয়ামী লীগের চাইতেও এই সরকারের দোসরারা বড় স্বৈরাচার উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘‘মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছে না, মত প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। এভাবে দেশ চললে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে।’’

এ সময় তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের দোসরদের চাইতে এই স্বৈরাচার তো অনেক বড় স্বৈরাচার। মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছে না, মত প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে একটি ভোট অনুষ্ঠান। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, এটির সংস্কার দরকার, নিরাপত্তা আনা দরকার। আর অন্য কিছু অনির্বাচিত কারও দ্বারাই সম্ভব না এবং উচিত না। সেটা মানুষ মেনে নেবে না।

নিজের বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী সম্পর্কে কাদের সিদ্দিকী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে টাঙ্গাইলের রাজনীতির অনেক কিছুই হতো না। যেমন বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না, লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে আমরা রাজনীতিতে আসতাম না। রিপোর্টার্স ইউনিটির ঘটনায় সারা দেশের জেগে ওঠা ও প্রতিবাদ করা উচিত। ঘুমিয়ে থাকলে আমাদের সম্মান, নিরাপত্তা ও ইজ্জত থাকবে না। সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি অথবা অন্য কোনো দলের মুক্তিযোদ্ধা নন, তারা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা। তারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, এ চেতনা তাদের থাকা দরকার।

তিনি বলেন, রাজনীতিকে বাদ দিয়ে এভাবে দেশে মব সৃষ্টি করা, দেশে অরাজকতা করা এবং আইনশৃঙ্খলার পতন ঘটানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলব, তারা যদি এটা চালাতে না পারে, তাহলে তাদের সরে যাওয়া উচিত। আর যদি ক্ষমতায় থাকেন জনগণের দায়িত্ব নিয়েই ক্ষমতায় থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ‘মঞ্চ ৭১’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠান ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীসহ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।