গ্যাস সংকটের জন্য একশ্রেণির রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী দায়ী: জ্বালানি উপদেষ্টা

- Update Time : ০১:৩৯:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৫ Time View
দেশের গ্যাস–সংকটের জন্য একশ্রেণির রাজনীতিবিদ ও তাদের সহযোগী ব্যবসায়ীদের দায়ী করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, গ্যাস না থাকার কথা জেনেও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পকারখানায় সংযোগ দেওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আজ শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক ওই আলোচনায় ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘গ্যাস খাতের সংকট একদিনে বা আপনাআপনি হয়নি। এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ এবং তাদের সহযোগী ব্যবসায়ীরা আমাদের আজকের এই সংকটে নিয়ে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেই সক্ষমতা পূরণে প্রয়োজনীয় গ্যাস সংগ্রহের কথা ভাবা হয়নি। বেসরকারি খাতেও অনেক শিল্পকে গ্যাস দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গ্যাস নেই জেনেও লাইন দেওয়া হয়েছে… এগুলো অন্যায়ভাবে, দুর্নীতির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। এর ফলেই আজ আমরা এই সংকটে পড়েছি।’
গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগের মধ্যে পার্থক্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুতের সরবরাহ এক জায়গা থেকে বন্ধ করে আরেক জায়গায় দেওয়া গেলেও গ্যাসের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। এখানে ‘ফার্স্ট কাম, ফার্স্ট সার্ভড’ (আগে এলে আগে পাবেন) ভিত্তিতে সেবা দিতে হয়।
সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের চেষ্টার কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, দুটি উপায়ে চেষ্টা চলছে। একদিকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাড়িয়ে সরবরাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে, অন্যদিকে স্থলভাগে বাপেক্সের মাধ্যমে অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রতিবছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কমে যাচ্ছে, সেখানে আমরা নতুন করে মাত্র ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পেয়েছি। তবে আমরা আশাবাদী যে আরও গ্যাস পাওয়া যাবে, বিশেষ করে ভোলায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাধ্য হয়ে এলএনজি আমদানি বাড়াতে হচ্ছে। তা না হলে শিল্পকারখানা, রপ্তানি—সবকিছু থেমে যাবে।’ তবে আমদানির সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, গত বছর ১০৮ কার্গো এলএনজি আনা হয়েছে। দেশের সক্ষমতা বিবেচনায় সর্বোচ্চ ১১৫ কার্গো আনা সম্ভব।
এ ক্ষেত্রে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) একটি বড় সমাধান হতে পারে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এলপিজি আমদানি তুলনামূলক সহজ। কিন্তু এর দাম একটি বড় সমস্যা। দাম কমাতে হবে।
এই খাত বেসরকারি খাতনির্ভর হলেও দাম অনেক বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এখনো ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি, যা কখনো কখনো ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার টাকাও হয়ে যায়। কিন্তু এটি ১ হাজারের নিচে হওয়া উচিত।’
নির্ধারিত দাম না মানার বিষয়টি তদারকিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথা জানান তিনি। শিল্পক্ষেত্রেও এলপিজির ব্যবহার বাড়াতে খরচ কমানোর ওপর জোর দেন জ্বালানি উপদেষ্টা।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়