গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা পরিকল্পিত : বিএনপি

- Update Time : ০৬:১৯:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
- / ২৪ Time View
পতিত শেখ হাসিনার সমর্থকরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধ্বংস করার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বুধবার রাতে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এই অভিযোগ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএনপি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির শান্তিপূর্ণ সভায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পরিকল্পিত হামলায় চারজন নিহত হওয়ায় তারা গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এ কারণেই পতিত শেখ হাসিনার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংসের অপচেষ্টায় সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। এই হামলার জেরে সরকার ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়েছে, যা প্রমাণ করে সরকারের অযোগ্যতা ও গণতন্ত্র ধ্বংসের নীলনকশা। বিবৃতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্কভাবে কর্মসূচি নির্ধারণের আহ্বান জানানো হয়, যেন গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিগুলো কোনো সুযোগ নিতে না পারে।
এতে বলা হয়, অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে যে, একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ রুদ্ধ করতে চাইছে। তাদের উদ্দেশ্য আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ব্যাহত করা। দেশে মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। অথচ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর নিষ্ক্রিয়তা এবং অযোগ্যতা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বরত উপদেষ্টারা গণমাধ্যমে কেবল বক্তব্য দিচ্ছেন; কিন্তু বাস্তবসম্মত ও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের তরুণ নেতা তারেক রহমানকে লক্ষ্য করে যেসব অশ্লীল ও অবমাননাকর মন্তব্য-স্লোগান দেওয়া হয়েছে, তা জাতীয়ভাবে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বিএনপি এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বিএনপি বলেছে, এ ধরনের অপপ্রচার ও শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড শুধু রাজনৈতিক পরিবেশকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে না; বরং গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকেও বিঘ্নিত করবে। বিএনপি আশা প্রকাশ করছে, সব রাজনৈতিক দল পারস্পরিক সম্মান, মর্যাদা ও সৌহার্দ্য বজায় রেখে দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং এ ধরনের অরাজনৈতিক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে।
বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সভাকে বিস্তারিত অবহিত করেন। সিদ্ধান্ত হয়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে।
বিএনপি জানায়, গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিঘ্নিত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করবার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। মবক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য অতিদ্রুত সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া বিএনপি জানায়, সম্প্রতি সংগঠিত মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত, অশ্লীল বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে।
বৈঠকে বলা হয়, এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিবেশকেই বিনষ্ট করবে না গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে।
বৈঠক আশা করে সকল রাজনৈতিক দল পারস্পরিক মর্যাদা ও সৌহার্দ্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এই ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে। সেই সঙ্গে মিটফোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায় এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।