গাজীপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেদখলের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন বিক্ষোভ

- Update Time : ০৬:২৭:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৫৯ Time View
গাজীপুরে ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেদখলে অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর নয়নপুরে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শিক্ষার্থী এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানার মানববন্ধন উপস্থিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী সুজন শেখ, রেদুয়ান ও লাবিব বলেন, ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি হচ্ছে সরকার অনুমোদিত একটি অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর: ৮০৭২ (৯৩)/০৮।
গাজীপুর জেলার সদর উপজেলাধীন রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস সংলগ্ন নয়নপুর গ্রামে ইকবাল সিদ্দিকী কলেজ, ইকবাল সিদ্দিকী হাই স্কুল, কচি-কাঁচা একাডেমি ও নয়নপুর এন এস আদর্শ বিদ্যালয় নামীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ ২০ বছরের অধিক সময় ধরে সুনামের সাথে পরিচালনা করে আসছে।
সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর মৃত্যুর পর উক্ত সোসাইটি পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সমূহের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম “ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি”র সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
গত বছরের ১০ আগষ্ট বেলা ১১টার দিকে মিঠুন সিদ্দিকী, হায়দার সিদ্দিকী উদয়, সাজেদা রোজী, মাটি সিদ্দিকী, হোসনে আরা সিদ্দিকী, আসাদুজ্জামান নূরসহ কিছু কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদকসেবী অবৈধ ও বেআইনীভাবে ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহে হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি আব্দুর রহমান, প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম মিজানুর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হককে এলোপাথাড়িভাবে মারধোর করে।
এসময় জীবন নাশের আশঙ্কায় প্রধান শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সভাপতি ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। এর পরপরই কচি-কাঁচা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খালেদা সিদ্দিকীকে তাঁর পদ থেকে দখলদাররা সরিয়ে দেয় এবং তাঁকে জোড়পূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করে। খালেদা সিদ্দিকী সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকীর স্ত্রী।
প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক নানান হুকমি ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশন বহিসমূহ, হিসাব-নিকাশের বিভিন্ন ভাউচার ও রেজিস্টার সমূহ, ব্যাংক হিসাবের চেকবই সমূহ, সিল-মোহরসমূহ অরক্ষিত অবস্থায় জবর দখলকারীদের আওতায় রয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রদেয় মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ গত ১২ আগষ্ট থেকে জবরদখল কারীরা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে চলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক মহলে আতংক বিরাজ করছে। এসব ঘটনায় গাজীপুর জেলা প্রশাসকসহ ধারাবাহিকভাবে পাঁচটি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়।
ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি একটি অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং এ সংস্থা পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ ব্যক্তিমালিকানাধীন নয়, বরং প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রিন্সিপাল ইকবাল সিদ্দিকী স্বয়ং ইকবাল সিদ্দিকী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে এখানে কর্মরত ও বেতনভুক্ত ছিলেন। তাই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে নিরাপত্তা প্রদানে ভুক্তভোগী শিক্ষকগণের সম্মানজনক অবস্থান দিয়ে দখলদারদের থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে দখলমুক্ত করে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা এবং লুট হওয়া অর্থসসহ নথিপত্রাদি উদ্ধারের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনে শিক্ষার্থী এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষক দাবিদার মিঠু সিদ্দীকি বলেন, যারা মানববন্ধন ও বিক্ষাভ করেছে তারা কেউই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী নয় সবাই বহিরা গত। একদল বিপদগামী শিক্ষক এবং পূর্ববর্তী ম্যানেজমেন্টের কিছু অসাধু লোক কোন যায়গায় কোন সুবিধা করতে না পেরে তারা এ ধরের একটি অস্থিতিশিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা জন্যেই কেবল এই ব্যবস্থা নিয়েছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যারা এখন পরিচালনা করছেন তারা সবাই এর অংশিদার।