ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজীপুরের শ্রীপুর থানা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:২৪:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ২ Time View

গাজীপুরের শ্রীপুরে থানা বিএনপির ছচ্ছছায়ায় চলছে চাঁদাবাজি। শ্রীপুরের মিল ফ্যাক্টরি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য থানা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকির এবং সাধারণ সম্পাদক আক্তারুল আলম মাস্টারের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। যাদের কাজ হল বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরি নিজেদের আয়ত্তে আনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলছে দখল ব্যবসা। থানা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকিরের বিরুদ্ধে তার পরিবারের লোকজন গাজীপুর জেলা শহরে সংবাদ সম্মেলন করেন গত ৯-১০-২০২৪ ইং তারিখে।

তাদের অভিযোগ, সভাপতি শাহজাহান ফকির এবং তার ছেলে পাপেল ফকিরের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের বাড়িঘরে হামলা করে বাড়ি ঘর ভাঙচুর এবং বাড়ির পাশে থাকা জমি বালু ভরাট করে দখল করে নেয়। সরেজমিনে গিয়ে ঘটনা সত্যতা পাওয়া যায়। নির্যাতিত ব্যক্তিরা শাহজাহান ফকিরের লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে ফেরারি জীবনযাপন করছে। তারা প্রাণের ভয়ে বাড়িতে আসতে পারতেছে না।

এদিকে শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুল আলম মাস্টারের মদদপৃষ্ট লোকজন তেলিহাটি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বিনাভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড মেম্বার মিয়া হোসেনের সাথে আঁতাত করে স্থানীয় বিএনপির ওয়ার্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুমন আকন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এবং ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আকরাম হোসেনসহ আরো কিছু লোকজন নিয়ে স্থানীয় আনোয়ারা বেগম স্বামী সিদ্দিকুর রহমান গ্রাম বেকা সাহারা এর জমি জবর দখল করে নিয়ে যায়। জমি দখল করে নেওয়ার পরও ক্ষান্ত হয়নি। নিজেদের প্রভাব খাঁটিয়ে আনোয়ারা বেগম এবং সিদ্দিকুর রহমানদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

থানা বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তাদের রাজনৈতিক দখলদারিত্ব ধরে রাখার জন্য অনুগত লোক দিয়ে ওয়ার্ড কমিটি করেছে। তাদেরকে দিয়ে ইউনিয়ন কমিটি করেছে এবং সেই কমিটি দিয়ে শাহজাহান ফকির ও আক্তারুল আলম মাস্টার থানা বিএনপির সভাপতি সম্পাদক হয়েছেন।

অবাক করা বিষয় হলো, ক্ষমতা নিজের হাতে ধরে রাখার জন্য ইউনিয়নের এমন কিছু লোক দিয়ে কমিটি করেছে, যাদের রাজনৈতিক পরিচয় দিলে মনে হয় রাজনৈতিকভাবে বিএনপি দেউলিয়া হয়ে গেছে। যেমন গসিঙ্গা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন অটো ছিনতাই এবং চুরির সাথে জড়িত। একই ইউনিয়নের অন্যান্য ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সরাসরি মাদকের সাথে জড়িত।

শ্রীপুর থানা বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দখলবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে দলীয় ব্যবস্থা। গত ১৪-১০-২০২৪ তারিখে কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির প্রভাবশালী সদস্য রাশেদ মন্ডলকে অন্যায়ভাবে দল থেকে বহিষ্কার করে, তার অপরাধ থানা বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করা।

এদিকে শ্রীপুর থানা সদরের কাছে পটকা নারিশ হ্যাচারির ব্যবসা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্থানীয় সিরাজুল হকের ছেলে সেলিমকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। সেলিমের অভিযোগ, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল তাঁকে হত্যা মামলার আসামি করেছে। সেলিম ছাত্রদল থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।

গত ১৫ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল তার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছে এবং সেলিম টাকা পয়সা দিয়ে নির্যাতিত কর্মীদের পাশে রয়েছে। হ্যাচারীর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাবুল তাকে আসামি করেছে। অপর দিকে শাজাহান ফকির ও আখতারুল আলম মাস্টারের অনুগত হওয়ার কারণে বর্মী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুলের চাঁদাবাজির ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন দলীয় ব্যবস্থা।

এভাবেই চলছে শ্রীপুর থানা বিএনপির রাজনীতি। থানা বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদেরকে হত্যা মামলা থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। দলকে ভালোবাসা কর্মীগুলো এই অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। তারা চায় সুন্দর নেতৃত্ব।

Please Share This Post in Your Social Media

গাজীপুরের শ্রীপুর থানা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
Update Time : ০৮:২৪:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুরে থানা বিএনপির ছচ্ছছায়ায় চলছে চাঁদাবাজি। শ্রীপুরের মিল ফ্যাক্টরি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য থানা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকির এবং সাধারণ সম্পাদক আক্তারুল আলম মাস্টারের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে। যাদের কাজ হল বিভিন্ন মিল ফ্যাক্টরি নিজেদের আয়ত্তে আনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে চলছে দখল ব্যবসা। থানা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকিরের বিরুদ্ধে তার পরিবারের লোকজন গাজীপুর জেলা শহরে সংবাদ সম্মেলন করেন গত ৯-১০-২০২৪ ইং তারিখে।

তাদের অভিযোগ, সভাপতি শাহজাহান ফকির এবং তার ছেলে পাপেল ফকিরের সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের বাড়িঘরে হামলা করে বাড়ি ঘর ভাঙচুর এবং বাড়ির পাশে থাকা জমি বালু ভরাট করে দখল করে নেয়। সরেজমিনে গিয়ে ঘটনা সত্যতা পাওয়া যায়। নির্যাতিত ব্যক্তিরা শাহজাহান ফকিরের লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে ফেরারি জীবনযাপন করছে। তারা প্রাণের ভয়ে বাড়িতে আসতে পারতেছে না।

এদিকে শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুল আলম মাস্টারের মদদপৃষ্ট লোকজন তেলিহাটি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বিনাভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড মেম্বার মিয়া হোসেনের সাথে আঁতাত করে স্থানীয় বিএনপির ওয়ার্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুমন আকন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এবং ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আকরাম হোসেনসহ আরো কিছু লোকজন নিয়ে স্থানীয় আনোয়ারা বেগম স্বামী সিদ্দিকুর রহমান গ্রাম বেকা সাহারা এর জমি জবর দখল করে নিয়ে যায়। জমি দখল করে নেওয়ার পরও ক্ষান্ত হয়নি। নিজেদের প্রভাব খাঁটিয়ে আনোয়ারা বেগম এবং সিদ্দিকুর রহমানদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

থানা বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তাদের রাজনৈতিক দখলদারিত্ব ধরে রাখার জন্য অনুগত লোক দিয়ে ওয়ার্ড কমিটি করেছে। তাদেরকে দিয়ে ইউনিয়ন কমিটি করেছে এবং সেই কমিটি দিয়ে শাহজাহান ফকির ও আক্তারুল আলম মাস্টার থানা বিএনপির সভাপতি সম্পাদক হয়েছেন।

অবাক করা বিষয় হলো, ক্ষমতা নিজের হাতে ধরে রাখার জন্য ইউনিয়নের এমন কিছু লোক দিয়ে কমিটি করেছে, যাদের রাজনৈতিক পরিচয় দিলে মনে হয় রাজনৈতিকভাবে বিএনপি দেউলিয়া হয়ে গেছে। যেমন গসিঙ্গা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন অটো ছিনতাই এবং চুরির সাথে জড়িত। একই ইউনিয়নের অন্যান্য ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সরাসরি মাদকের সাথে জড়িত।

শ্রীপুর থানা বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দখলবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে দলীয় ব্যবস্থা। গত ১৪-১০-২০২৪ তারিখে কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির প্রভাবশালী সদস্য রাশেদ মন্ডলকে অন্যায়ভাবে দল থেকে বহিষ্কার করে, তার অপরাধ থানা বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করা।

এদিকে শ্রীপুর থানা সদরের কাছে পটকা নারিশ হ্যাচারির ব্যবসা এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্থানীয় সিরাজুল হকের ছেলে সেলিমকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। সেলিমের অভিযোগ, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল তাঁকে হত্যা মামলার আসামি করেছে। সেলিম ছাত্রদল থেকে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।

গত ১৫ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল তার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছে এবং সেলিম টাকা পয়সা দিয়ে নির্যাতিত কর্মীদের পাশে রয়েছে। হ্যাচারীর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাবুল তাকে আসামি করেছে। অপর দিকে শাজাহান ফকির ও আখতারুল আলম মাস্টারের অনুগত হওয়ার কারণে বর্মী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুলের চাঁদাবাজির ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন দলীয় ব্যবস্থা।

এভাবেই চলছে শ্রীপুর থানা বিএনপির রাজনীতি। থানা বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদেরকে হত্যা মামলা থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। দলকে ভালোবাসা কর্মীগুলো এই অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। তারা চায় সুন্দর নেতৃত্ব।