ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় লাকি ব্যাম্বু চাষে ভাগ্য বদল দুই তরুণের

মাইদুল ইসলাম, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৬ Time View

ইংরেজিতে এই গাছটিকে বলায় হয় লাকি ব্যাম্বু যার বাংলা নাম ভাগ্যবান বাঁশ। অনেক জায়গায় এটিকে ফ্রেন্ডশিপ বাঁশ, কোঁকড়া বাঁশ, চায়নিজ ওয়াটার ব্যাম্বু নামেও পরিচিত। তবে এই বাঁশকে চীনারা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করে থাকেন। চাকুরির পিছনে না ছুটে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে লাকি ব্যাম্বু চাষ শুরু করেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি শান্তিরাম গ্রামের দছিজল হকের দুই ছেলে হাফিজ ও হাসিবুর। দুই ভাই এসএসসি পাশ করার পর পড়াশোনা বাদ দিয়ে প্রায় ৫ বছর পূর্বে ৫ শতাংশ জমিতে লাকী ব্যাম্বু চাষ শুরু করেন।স্বল্প আয়ে লাভজনক হওয়ার কারণে বর্তমানে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে লাকি ব্যাম্বু চাষ করছেন।

বর্তমানে তাদের জমি থেকে উৎপাদিত পণ্য দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান কাতারে। এতে করে যেমন আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা এবং ঘুচিয়েছেন তাদের বেকারত্ব।পাশাপাশি এলাকায় তৈরি করেছেন অনেকের কর্মসংস্থান।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ৩টি ভিন্ন রঙের লাকি ব্যাম্বু চাষ করেছেন হাফিজ ও হাসিবুর। কোনো অংশে চাষ করা হয়েছে সবুজ রঙের, কোনো অংশে আবার সবুজের মাঝে সাদা ডোরাকাটা, আবার কোনো অংশে লাগানো হয়েছে গাঢ় সবুজ রঙের এই বাঁশ। সূর্যের আলোতে লাকি ব্যাম্বু গাছ নষ্ট হয় জন্য আধো আলো ছায়া দেওয়ার জন্য পুরো জমির ওপর উঁচু করে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সবুজ রঙের নেট জাতীয় কাপড়। তাদের উৎপাদিত লাকি ব্যাম্বু দিয়ে দুই লেয়ার,তিন লেয়ার স্টিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে টবে রাখার মতো উপযোগী সাজানো একেকটি ডিজাইন। যার দাম ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে প্রতিবছরে রপ্তানিতে এই উদ্যোক্তার আয় হয় ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা।

তরুণ উদ্যোক্তা হাফিজ বলেন, গৃহসজ্জার জন্য তৈরি এসব পণ্য এ পর্যন্ত ওমানে পাঁচবার, কাতারে দুবার, দুবাইয়ে দুবার এবং সৌদি আরবে একবার পাঠিয়েছি। আয়ও হচ্ছে যথেষ্ট। তাছাড়া পূর্বে তুলনায় এখন লাকি ব্যাম্বু চাহিদা অনেকাংশেই বেড়েছে।

উদ্যোক্তা মো হাসিবুর বলেন,বর্তমানে চাকুরির বাজারে যে পরিমাণ সংকট তৈরি হয়েছে এতে করে চাকুরির নেশা বাদ দিয়ে আমরা লাকি ব্যাম্বু চাষ শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমরা আমাদের আর্থিক সমস্যা দূর করে আরও অনেকের কর্মসংস্থান তৈরি করে দিয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশিদুল জানায়, লাকি ব্যাম্বু নাম উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং সবুজের দিকে তাকালে চোখের দৃষ্টিশক্তিও স্বাভাবিক থাকে।

উদ্ভিদটিকে বাঁশ গাছ বলা হলেও, এই গাছ আসলে বাঁশ প্রজাতির নয়, এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলের লিলি প্রজাতির গাছ।এছাড়াও হাফিজ ও হাসিবুরের মতো যেন অন্যান্য যুবকও উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন, এমন প্রচেষ্টা নিয়ে কাজ করছি আমরা।এমনকি তাদেরকে সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছি।

Please Share This Post in Your Social Media

গাইবান্ধায় লাকি ব্যাম্বু চাষে ভাগ্য বদল দুই তরুণের

মাইদুল ইসলাম, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি
Update Time : ০৭:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইংরেজিতে এই গাছটিকে বলায় হয় লাকি ব্যাম্বু যার বাংলা নাম ভাগ্যবান বাঁশ। অনেক জায়গায় এটিকে ফ্রেন্ডশিপ বাঁশ, কোঁকড়া বাঁশ, চায়নিজ ওয়াটার ব্যাম্বু নামেও পরিচিত। তবে এই বাঁশকে চীনারা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করে থাকেন। চাকুরির পিছনে না ছুটে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে লাকি ব্যাম্বু চাষ শুরু করেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি শান্তিরাম গ্রামের দছিজল হকের দুই ছেলে হাফিজ ও হাসিবুর। দুই ভাই এসএসসি পাশ করার পর পড়াশোনা বাদ দিয়ে প্রায় ৫ বছর পূর্বে ৫ শতাংশ জমিতে লাকী ব্যাম্বু চাষ শুরু করেন।স্বল্প আয়ে লাভজনক হওয়ার কারণে বর্তমানে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে লাকি ব্যাম্বু চাষ করছেন।

বর্তমানে তাদের জমি থেকে উৎপাদিত পণ্য দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান কাতারে। এতে করে যেমন আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা এবং ঘুচিয়েছেন তাদের বেকারত্ব।পাশাপাশি এলাকায় তৈরি করেছেন অনেকের কর্মসংস্থান।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ৩টি ভিন্ন রঙের লাকি ব্যাম্বু চাষ করেছেন হাফিজ ও হাসিবুর। কোনো অংশে চাষ করা হয়েছে সবুজ রঙের, কোনো অংশে আবার সবুজের মাঝে সাদা ডোরাকাটা, আবার কোনো অংশে লাগানো হয়েছে গাঢ় সবুজ রঙের এই বাঁশ। সূর্যের আলোতে লাকি ব্যাম্বু গাছ নষ্ট হয় জন্য আধো আলো ছায়া দেওয়ার জন্য পুরো জমির ওপর উঁচু করে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সবুজ রঙের নেট জাতীয় কাপড়। তাদের উৎপাদিত লাকি ব্যাম্বু দিয়ে দুই লেয়ার,তিন লেয়ার স্টিক দিয়ে তৈরি হচ্ছে টবে রাখার মতো উপযোগী সাজানো একেকটি ডিজাইন। যার দাম ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। সে হিসাবে প্রতিবছরে রপ্তানিতে এই উদ্যোক্তার আয় হয় ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকা।

তরুণ উদ্যোক্তা হাফিজ বলেন, গৃহসজ্জার জন্য তৈরি এসব পণ্য এ পর্যন্ত ওমানে পাঁচবার, কাতারে দুবার, দুবাইয়ে দুবার এবং সৌদি আরবে একবার পাঠিয়েছি। আয়ও হচ্ছে যথেষ্ট। তাছাড়া পূর্বে তুলনায় এখন লাকি ব্যাম্বু চাহিদা অনেকাংশেই বেড়েছে।

উদ্যোক্তা মো হাসিবুর বলেন,বর্তমানে চাকুরির বাজারে যে পরিমাণ সংকট তৈরি হয়েছে এতে করে চাকুরির নেশা বাদ দিয়ে আমরা লাকি ব্যাম্বু চাষ শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমরা আমাদের আর্থিক সমস্যা দূর করে আরও অনেকের কর্মসংস্থান তৈরি করে দিয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাশিদুল জানায়, লাকি ব্যাম্বু নাম উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং সবুজের দিকে তাকালে চোখের দৃষ্টিশক্তিও স্বাভাবিক থাকে।

উদ্ভিদটিকে বাঁশ গাছ বলা হলেও, এই গাছ আসলে বাঁশ প্রজাতির নয়, এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলের লিলি প্রজাতির গাছ।এছাড়াও হাফিজ ও হাসিবুরের মতো যেন অন্যান্য যুবকও উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন, এমন প্রচেষ্টা নিয়ে কাজ করছি আমরা।এমনকি তাদেরকে সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছি।